ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন:: গৃহবধূ তানিয়ার উপর এসিড নিক্ষেপকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক,ব্রাহ্মণবাড়িয়া:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তানিয়া আক্তার-(৩০) নামে দুই সন্তানের জননী, এক গৃহবধূর উপর এসিড নিক্ষেপকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বন্ধুসভার সদস্যরা।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রিয়াজ উদ্দিন জামি, সাংবাদিক পিযুষ কান্তি আচার্য, মোশারফ হোসেন, ইব্রাহিম খান সাদাত, জেলা নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রতন কান্তি দত্ত, জেলা খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হারুন অর রশিদ, বন্ধুসভার সভাপতি অভিজিৎ রায়,সদস্য সেজুতি আক্তার ও শারমিন আক্তার প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে গৃহবধূ তানিয়ার উপর এসিড হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। মানববন্ধনে বন্ধুসভার সদস্যসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
উল্লেখ্য গত বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে পৌর এলাকার দক্ষিণ মৌড়াইলে স্বামীর বাড়িতেই তানিয়ার আক্তার নামে ওই গৃহবধূকে এসিডে ঝলসে দেয় দুর্বৃত্তরা। এসিডে তানিয়ার শরীরের প্রায় ৩৫ ভাগ ঝলসে গেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গৃহবধূর স্বামী নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
আহত অবস্থায় তানিয়াকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বার্ণ ইউনিটে প্রেরণ করে।
জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ফায়েজুর রহমান জানান, ক্যামিকেল বার্ণের কারণে গৃহবধূর গলা, বাম হাতসহ মুখমন্ডলের ৩২ থেকে ৩৫ শতাংশ (এক তৃতীয়াংশ) ঝলসে গেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গৃহবধুর মামা গোলাম মহিউদ্দিন বাদি হয়ে তানিয়ার স্বামী নজরুল ইসলাম, সহযোগী কামরুল ইসলাম ও রায়হান মিয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ঙ্গ জনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ গৃহবধূর স্বামী নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ৫দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে।
এদিকে তানিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মামলার আসামী রায়হান মিয়া দক্ষিণ মৌড়াইলের প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান। তার পিতা মোঃ জামাল উদ্দিন খাঁন পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। মামলা দায়েরের পর থেকেই রায়হান মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা তুলে নিতে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি ও চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। রায়হান মিয়া এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছেনা।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মঈনুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা তানিয়ার স্বামী নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকীরা আসামীরা পালিয়ে গেছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।