বিশ্ব পানি দিবস ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
“সকলের জন্য সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিতে চাই পানি খাতে সুশাসন ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ” প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর উদ্যোগে ২৪ মার্চ ২০১৯ তারিখ রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সনাক, স্বজন, ইয়েস, ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্যবৃন্দ, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে সনাক সহ সভাপতি আবদুন নূর বলেন পানির অপর নাম জীবন কিন্তু সুপেয় পানির উৎসগুলো মানবসৃষ্ট কার্যকলাপের জন্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিশ^ব্যাপি সুপেয় পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের অভাব দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে পানি খাতে সমস্যার অন্যতম কারণ।
উন্নয়ন সংস্থা চেঞ্জ এর নির্বাহী পরিচালক আবুল বাশার মানববন্ধনের সাথে একাতœতা প্রকাশ করে বলেন সুপেয় পানি রক্ষার জন্য সকলের উদ্যোগ এবং সচেতনতা প্রয়োজন।
মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্যে সনাক এর জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন বিষয়ক উপ কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আরজু অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন নিারপদ পানি থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য প্রদান করেন ইয়েস সদস্য মোঃ আল আমিন এবং বিশ^ পানি দিবস ২০১৯ টিআইবি’র অবস্থানপত্র পাঠ করেন ইয়েস দলনেতা রিয়াজ আহমেদ চৌধুরী। মানববন্ধনে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের সুপেয় পানির অভিগম্যতা নিশ্চিতে অপরিহার্য সুশাসন ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে সনাক ও টিআইবি’র পক্ষ হতে নি¤েœাক্ত দাবি উত্থাপন করা হয় –
১. সংবিধান ও পানি খাত সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট সকল নীতি ও আইনে পানিকে বাংলাদেশের সকল জনগণের একটি মৌলিক ও মানবিক অধিকার হিসাবে সুস্পষ্টভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে;
২. নারী-পুরুষ, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, জাতীয়তা, শারীরিক অক্ষমতা, বয়স, স্বাস্থ্য, সম্পদ, বাসস্থান, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে বাংলাদেশের সকল জনগণ, বিশেষ করে প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ সুপেয় পানির অভিগম্যতা নিশ্চিত করতে হবে;
৩. ক্ষমতাবান ব্যক্তি, ব্যবসায়ী বা সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অবৈধভাবে দখলকৃত নদী, জলাশয় ও জলাভূমিসমূহ দখলমুক্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রাকৃতিক জলাধারসমূহ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে;
৪. পানিসম্পদ খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শুদ্ধাচার ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও সকল কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিরসনে কার্যকর জবাবদিহি পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে;
৫. পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে স্থানীয় কমিউনিটির সমর্থন ও প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ শক্তিশালী করতে হবে;
৬. জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উৎস হতে পানি খাতে বরাদ্দকৃত তহবিলের সুষ্ঠু বরাদ্দ ও ব্যবহার নিশ্চিতকরণের জন্য স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও নাগরিক অংশগ্রহণমূলকভাবে সব ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে; এবং
৭. পানি খাত সংশ্লিষ্ট সরকারের বিভিন্ন বিভাগসমূহের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি পরিহার করে, বিভাগগুলোর মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে পানি-সম্পর্কিত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।প্রেস বিজ্ঞপ্তি