জেলা পরিষদ প্রশাসকের সম্মানী ৪০ হাজার উন্নয়নকাজে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয়ের ক্ষমতা
সম্মানী ভাতা ৪০ হাজার টাকা, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করার ক্ষমতা পাচ্ছেন জেলা পরিষদের প্রশাসকেরা . সম্মানী ভাতা কার্যকর হবে গত জানুয়ারি মাস থেকে।
গত সপ্তাহে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ । অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব প্রথম আলোকে বলেন, চলতি সপ্তাহেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা করছি। একই সঙ্গে প্রশাসকদের কাজের বিষয়েও প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসকদের আর্থিক ক্ষমতা ও সম্মানী ভাতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই জেলা পরিষদের প্রশাসকদের ওই অর্থ ব্যয়ের ক্ষমতার প্রস্তাব বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের স্বাধীনতা সমর্থন করি। কিন্তু এখানে সরাসরি দলীয় লোকদের প্রশাসক করা হয়েছে। এ জন্য টাকা অপচয়ের সুযোগ থাকে। স্থানীয় সরকারে অনির্বাচিতদের প্রশাসক করা সংবিধান পরিপন্থীও। তাই আমরা চাই, দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করা হোক।’
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা বাদে বাকি ৬১টি জেলা পরিষদে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর প্রশাসক নিয়োগ করে সরকার। যাঁরা আওয়ামী লীগ বা এর সহযোগী সংগঠনের নেতা। জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী, জেলার সব উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনাসহ ১২টি বাধ্যতামূলক কাজ করবে জেলা পরিষদ। এ ছাড়া শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজকল্যাণ, জনস্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক কল্যাণসহ বেশ কিছু ঐচ্ছিক কাজও পরিষদকে করতে হবে। এসব কাজে টাকা খরচের জন্য এখন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। নতুন প্রস্তাব অনুমোদন হলে প্রশাসকেরা পরিষদের সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই পাঁচ লাখ টাকা মূল্যমানের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করতে পারবেন। তবে এর চেয়ে বেশি টাকার প্রকল্পের জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।
সম্মানী ভাতা ও আপ্যায়ন খরচ: স্থানীয় সরকার বিভাগের চূড়ান্ত প্রস্তাব অনুযায়ী, জেলা পরিষদের প্রশাসকেরা সর্বসাকল্যে মাসে ৪০ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা পাবেন। আপ্যায়ন বাবদ মাসে আরও পাঁচ হাজার টাকা পাবেন। তবে বাড়িভাড়া বাবদ টাকা পাবেন না। স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসকেরা সবাই স্থানীয় লোক হওয়ায় বাড়িভাড়া বাবদ টাকা দেওয়া হবে না। আর্থিক ক্ষমতার সঙ্গে সম্মানী ভাতার বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেওয়া হবে।
জেলা পরিষদের প্রশাসক নিয়োগের সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ছয় মাসের মধ্যেই জেলা পরিষদের নির্বাচন করা হবে। কিন্তু দুই মাস পরও এখনো নির্বাচনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, এখনো এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই।
আইন অনুযায়ী একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের পাঁচজন নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠন হবে। যাঁদের নির্বাচন করবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সিটি করপোরেশন (থাকলে), উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। জেলা পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসকেরা পরিষদের কার্যাবলি সম্পাদন করবেন।