টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে প্রবাসীর মৃত্যু, ক্লিনিক ভাঙচুর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুল চিকিৎসায় মতিউর রহমান (৪০) নামে এক প্রবাসীর মৃত্যুর অভিযোগে গতকাল শুক্রবার বেসরকারি একটি ক্লিনিক ভাঙচুর করা হয়েছে। দুপুর আড়াইটার দিকে পৌরশহরের কুমারশীল মোড়স্থ ‘গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামে এই ক্লিনিকে ভাঙচুর চালান রোগীর স্বজনরা। মৃত মতিউর রহমান বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত রেহানউদ্দিনের ছেলে। তিনি সৌদি আরব প্রবাসী। দুই মাস আগে ছুটিতে দেশে আসেন তিনি।
স্ত্রী রাবেয়া খাতুন জানান, শুক্রবার সকালে গলায় টনসিলজনিত ব্যথা নিয়ে গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে যান মতিউর। পরে সেখানে ঢাকার মহাখালীর সাইফ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসলাম হাজারীকে দেখানো হলে তিনি মতিউরের টনসিল জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের (অপারেশন) জন্য বলেন। এরপর দুই ঘণ্টা ধরে মতিউরের টনসিল অস্ত্রোপচার করে তার অবস্থার অবনতির কথা জানিয়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হলে মতিউরের মৃত্যু হয়। নিহতের ভাই প্রবাসী লোকমান জানান, গত কয়েক দিন ধরে ডা. আসলাম হাজারীর কাছে ভাইয়ের টনসিলের চিকিৎসা হচ্ছিল। গতকাল সকালে দেখানোর পর জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে এবং ১৪ হাজার টাকা দাবি করেন ওই চিকিৎসক। বিকাশের মাধ্যমে টাকা এনে ৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকি টাকা পরে দেওয়ার কথা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার (অপারেশন) কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় মতিউরকে। দুপুর প্রায় ২টার দিকে জানানো হয়, রোগীর প্রেসার ফল্ট করেছে। তাকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় নিতে হবে।
লোকমান অভিযোগ করেন, চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, মতিউরের অপারেশন করতে ১০ মিনিট সময় লাগবে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানো হলে তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখা যায়। এতে বোঝা যায়, মতিউর আগেই মারা গেছে। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি তার ভাই হত্যার বিচার চান। এদিকে ক্ষুব্ধ হয়ে রোগীর স্বজনরা ক্লিনিকে ভাঙচুর চালান। এতে ডা. আসলাম হাজারী এবং ক্লিনিক মালিকসহ সব স্টাফ পালিয়ে যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযুক্ত ডা. আসলাম হাজারীর বক্তব্যের জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নবীর হোসেন জানান, ভুল চিবিৎসায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনার পর পরই অভিযুক্ত চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গা-ঢাকা দিয়েছে।
« ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু (পূর্বের সংবাদ)
(পরের সংবাদ) কসবায় বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী নিহত »