জুয়া খেলার টাকা নিয়ে সংঘর্ষ,পুলিশসহ আহত ৩০, বাড়িঘর লুট-আগুন
জুয়াখেলাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলীর নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বিরাসার গ্রামে একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে থেমে থেমে এই সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষ চলাকালে ১০টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং কমপক্ষে ৩০টি বাড়িঘরে লুটপাট করা হয়। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ও পুলিশ লাইনস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বিরাশার পশ্চিমপাড়া এলাকায় জুয়াখেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কাশেম মাস্টার ও বাবুল মিয়ার গোষ্ঠীর সদস্য আল আমিনের সঙ্গে একই এলাকার তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন ও দুলাল আনসারী গোষ্ঠীর সদস্য নুরুল্লা ও সুজনের প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সোমবার সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে দুই পক্ষই দেশি অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি রিভলভার ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত হয় কমপক্ষে ৩০ জন। এ সময় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় অন্তত ১০টি বাড়িঘর। লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয় আরও অন্তত ৩০টি বাড়িঘর। হামলার শিকার পরিবারগুলোর আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সদস্য হোসনা, মর্জিনা ও নাঈমা হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন।
এদিকে, খবর পেয়ে নাটাই উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু সাঈদ এবং নাটাই উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবুল কাশেমসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
এ সময় চেয়ারম্যান মো. আবু সাঈদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুয়াখেলা নিয়ে একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। গতকাল বিষয়টি আমরা স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হই। আজ কয়েকভাকে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা। এতে পুলিশসহ অনেকে আহত হন।’ তিনি ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
এদিকে, আড়াই ঘণ্টার বেশি সংঘর্ষের খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ সময় দাঙ্গাবাজদের হামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) মো. সোহেলসহ চার পুলিশ সদস্য এবং উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. বিল্লাল হোসেন জানান, তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ রাউন্ড গুলি ও একটি বিদেশি পিস্তলসহ দুজনকে আটক করেছে।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছিল। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনও মামলা হয়নি।
অন্যরা এখন যা পড়ছেন
কমিটি নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষ, বেশ কয়েকজন আহত
কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।বিস্তারিত