Main Menu

যেভাবে কেটেছিল দিল্লিতে শেখ হাসিনার নির্বাসিত জীবনের সেই দিনগুলো

+100%-

বিবিসি বাংলা:: ১৫ই অগাস্ট, ১৯৭৫ – শেখ হাসিনা, তাঁর স্বামী ডক্টর ওয়াজেদ মিয়া আর বোন শেখ রেহানা সেদিন ব্রাসেলস-এ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সানাউল হকের কাছে ছিলেন।

ব্রাসেলস থেকে ওঁদের প্যারিস যাওয়ার কথা। কিন্তু আগের দিন গাড়ির দরজায় ডক্টর ওয়াজেদের হাত চিপে গিয়েছিল।

ওঁরা আলোচনা করছিলেন ওই অবস্থায় প্যারিস যাবেন কী-না।

ব্রাসেলসের সময়ে তখন ভোর তখন সাড়ে ছ’টা। সানাউল হকের টেলিফোন বেজে উঠল।

অন্য প্রান্তে ছিলেন জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী।

তিনিই জানালেন বাংলাদেশে সেনা বিদ্রোহ হয়েছে সকালে। প্যারিসে না গিয়ে তক্ষুনি জার্মানি ফেরত যাওয়ার কথা বললেন মি. চৌধুরী।

যে মুহূর্তে মি. হক শুনলেন যে সেনা বিদ্রোহে শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হয়েছেন, তখনই তাঁর দুই কন্যা এবং জামাতাকে কোনও রকম সাহায্য করতে অস্বীকার করলেন। উপরন্তু নিজের ঘর থেকেও তাঁদের চলে যেতে বলেন মি. হক।

গত বছর শেখ মুজিবের প্রয়াণ দিবসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ওই ঘটনার কথা স্মরণ করে বলেছিলেন, “আমরা যেন উনার জন্য বোঝা হয়ে গিয়েছিলাম। অথচ শেখ মুজিবই তাঁকে বেলজিয়ামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত করে পাঠিয়েছিলেন। ওটা একটা রাজনৈতিক নিয়োগ ছিল। ওই খবর পাওয়ার পরে জার্মানি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য একটা গাড়ি দিতেও অস্বীকার করেছিলেন তিনি।”

তবে তাঁরা কোনও মতে জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর কাছে পৌঁছেছিলেন।

তাঁরা সেখানে যাওয়ার আধঘণ্টার মধ্যেই যুগোস্লাভিয়া সফরে আসা বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর কামাল হোসেনও সেখানে পৌঁছান।

সেই বিকেলেই জার্মান সম্প্রচার সংস্থা ডয়েচেভেলে আর অন্য কয়েকজন জার্মান সাংবাদিক রাষ্ট্রদূতের আবাসে গিয়েছিলেন তাঁর মন্তব্য নেওয়ার জন্য।

শেখ হাসিনা আর তাঁর বোন রেহানা মানসিকভাবে এতটাই বিধ্বস্ত ছিলেন, যে তাঁরা কেউই কোনও মন্তব্য করতে চাননি, কারও সঙ্গে কোনও কথাও বলেননি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল হোসেন রাষ্ট্রদূতের আবাসে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কোনও মন্তব্য করেননি সেদিন।

তবে রাষ্ট্রদূত মি. চৌধুরী এটা নিশ্চিত করেছিলেন যে শেখ মুজিবের দুই কন্যা তাঁর কাছেই আছেন।

এরই মধ্যে যুগোস্লাভিয়ার রাষ্ট্রপতি মার্শাল টিটো শেখ মুজিবের দুই কন্যা ও জামাতার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ফোন করেছিলেন। কিন্তু এরপরে তাঁরা কোথায় থাকবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছিল না।

হুমায়ূণ রশিদ চৌধুরীর পুত্র নোমান রশিদ চৌধুরী ২০১৪ সালের ১৫ই অগাস্ট ‘ডেইলি স্টার’ পত্রিকায় ‘বঙ্গবন্ধু’জ ডটার্স’ (বঙ্গবন্ধুর কন্যারা) শিরোনামের একটি লেখায় স্মৃতিচারণ করেছেন এই ভাবে:

“পশ্চিম জার্মানিতে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত ওয়াই কে পুরীর সঙ্গে আমার বাবার দেখা হয়েছিল একটা কূটনৈতিক অনুষ্ঠানে। তিনি মি. পুরীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে ভারত কি শেখ হাসিনা আর তাঁর পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে পারবে? তিনি খোঁজ নিয়ে জানাবেন বলেছিলেন। পরের দিন মি. পুরী আমার বাবার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর দপ্তরেই চলে আসেন।

“তিনি জানিয়েছিলেন যে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়াটা অনেক সময় নেয়। তিনিই পরামর্শ দিয়েছিলেন যে দিল্লিতে তো বাবার নিজেরই অনেক চেনাশোনা, কারণ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে সেখানে মিশন প্রধান ছিলেন তিনি। ইন্দিরা গান্ধী আর তাঁর দুই পরামর্শদাতা ডি পি ধর এবং পি এন হাক্সর তো বেশ পছন্দ করেন। তাঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন মি. পুরী।”

তাঁর সামনেই মি. চৌধুরী ডি পি ধর এবং পি এস হাক্সরকে ফোন করেন। কিন্তু দুজনেই সেইসময়ে ভারতের বাইরে।

সরাসরি ইন্দিরা গান্ধীকে ফোন করতে মি. চৌধুরী একটু ইতস্তত করছিলেন। মিসেস গান্ধী একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী আর মি. চৌধুরী একজন সাধারণ রাষ্ট্রদূত।

মিসেস গান্ধীর সঙ্গে তাঁর কয়েকবার সাক্ষাত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বছর তিনেক তাদের মধ্যে কোনও যোগাযোগ ছিলনা।

রাজনীতিতে তিন বছর অনেকটা লম্বা সময়। আর তারও পরে তখন ভারতে জরুরী অবস্থা চলছে। মিসেস গান্ধী নিজেই ব্যতিব্যস্ত।

নোমান রশিদ চৌধুরী লিখেছেন, “যখন কোনও দিক থেকেই কিছু হচ্ছিল না, তখন একরকম শেষ চেষ্টা করে দেখার জন্য বাবা মিসেস গান্ধীর দপ্তরে একদিন ফোন করেই ফেললেন। ওই নম্বরটা বাবাকে ভারতের রাষ্ট্রদূত মি. পুরী দিয়েছিলেন।”

“বাবা আশা করেননি যে ফোনটা টেলিফোন অপারেটরের পরে অন্য কারও কাছে যাবে! কিন্তু ঘটনাচক্রে সেই ফোনটা ইন্দিরা গান্ধী নিজেই তুলে ছিলেন। বাবা মিসেস গান্ধীকে গোটা বিষয়টা খুলে বললেন। তক্ষুনি বঙ্গবন্ধুর কন্যাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে রাজী হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।”

জার্মানিতে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত মি. পুরী ১৯শে অগাস্ট হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীকে জানিয়েছিলেন যে দিল্লি থেকে নির্দেশ এসেছে শেখ মুজিবের দুই কন্যা এবং তাঁদের পরিবারকে সেখানে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি।

২৪শে অগাস্ট এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে শেখ হাসিনা তাঁর পরিবারের বাকিরা দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে নেমেছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদের একজন যুগ্ম সচিব তাঁদের স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন। প্রথমে ৫৬ নম্বর রিং রোডের একটি ‘সেফ হাউস’-এ তাঁদের রাখা হয়েছিল। পরে ডিফেন্স কলোনির একটি বাড়িতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের।

দশ দিন পরে, ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বা ‘র’-এর একজন কর্মকর্তা তাঁদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আবাস ১ নম্বর সফদরজং রোডে পৌঁছান।

দেখা হওয়ার পরে ইন্দিরা গান্ধীকে শেখ হাসিনা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “১৫ই অগাস্ট ঠিক কী হয়েছিল?”

সেখানে উপস্থিত একজন অফিসার শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, তাঁর পরিবারের আর কেউ জীবিত নেই।

এটা শুনেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনার জীবনীকার সিরাজউদ্দিন আহমেদ লিখেছেন, “ইন্দিরা গান্ধী হাসিনাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তোমার যা ক্ষতি হয়েছে, তা তো পূরণ করা যাবে না। তোমার তো এক ছেলে, এক মেয়ে আছে। আজ থেকে ছেলেকে নিজের বাবা আর মেয়েকে নিজের মা বলে মনে কোরো।”

সিরাজউদ্দিন আহমেদের তথ্য অনুযায়ী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানকালে ওই একবারই ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল।

তবে ‘র’-এর গোয়েন্দা অফিসারদের কথা অনুযায়ী শেখ হাসিনা আর ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে আরও কয়েকবার দেখা হয়েছিল।

প্রথম সাক্ষাতের দিন দশেক পরে শেখ হাসিনাকে ইন্ডিয়া গেটের কাছে পান্ডারা পার্কের ‘সি’ ব্লকে একটি ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছিল। ওই ফ্ল্যাটে তিনটে শোওয়ার ঘর আর কিছু আসবাবপত্রও ছিল। পরে তিনি নিজেই কিছু কিছু আসবাব কিনেছিলেন।

আরও পড়ুন: যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিলো শেখ মুজিবকে

তাঁর ওপর কড়া নির্দেশ ছিল যে তিনি যেন ঘরের বাইরে না যান, অথবা কারও সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ না করেন। তাঁর মনোরঞ্জনের জন্য একটা টেলিভিশন সেটও দেওয়া হয়েছিল।

সেই সময়ে ভারতের টেলিভিশনে শুধুমাত্র দু’ঘণ্টার জন্য দূরদর্শনের অনুষ্ঠান প্রচারিত হত।

‘র’-এর একজন প্রাক্তন অফিসার নাম না প্রকাশের শর্তে বলছিলেন, “শেখ হাসিনার নিরাপত্তার জন্য দু’জনকে রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সত্য ঘোষ নামের এক ইন্সপেক্টর। পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল।

অন্যজন ছিলেন ১৯৫০ সালের ব্যাচের ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস অফিসার পি কে সেন।

ঘটনাচক্রে ইন্সপেক্টর সেনকে ‘কর্নেল’ হিসাবে, আর পদাধিকার বলে তাঁর থেকে অনেক উঁচুতে, আইজি র‍্যাঙ্কের অফিসার পি কে সেনকে ‘ইন্সপেক্টর’ হিসাবে শেখ হাসিনার নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয়েছিল।

এই দু’জন অফিসারই ছায়ার মতো শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকতেন।

শেখ হাসিনার স্বামী ডক্টর ওয়াজেদ মিয়াকে ১৯৭৫ সালের ১লা অক্টোবর পরমাণু শক্তি বিভাগে ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছিল।

‘র’-এর ওই প্রাক্তন কর্মকর্তা বলছিলেন, “শেখ হাসিনার সব খরচ ভারত সরকারই দিত। যদিও সেটা খুব সামান্যই ছিল। টাকাটা কলকাতায় তাঁর এক পরিচিত চিত্তরঞ্জন সুতারের মাধ্যমে দেওয়া হত।”

চেষ্টা করা হয়েছিল শেখ হাসিনা যে দিল্লিতে আছেন, সেই খবরটা যাতে কেউ না জানতে পারে। তবে বাংলাদেশের সরকার তাঁর অবস্থান জেনে গিয়েছিল।

১৯৭৬ সালের মে মাসের গোড়ার দিকে বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রদূত শামসুর রহমান আর তাঁর স্ত্রী দেখা করতে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানার সঙ্গে।

দুই বোন তাঁদের জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করেছিলেন।

শেখ রেহানার সে বছরই দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বাংলাদেশের ঘটনাবলীর জন্য তাঁর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে শান্তিনিকেতনে তাঁর ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে নিরাপত্তা-জনিত কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছিল।

২৪শে জুলাই, ১৯৭৬ – শেখ রেহানার বিয়ে হয় লন্ডন-প্রবাসী শফিক সিদ্দিকের সঙ্গে। কিন্তু শেখ হাসিনা এবং তাঁর স্বামী ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।

ওই পর্যায়ে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের মন্ত্রী প্রণব মুখার্জী এবং তাঁর পরিবার শেখ হাসিনার পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত সম্পর্ক রাখতেন। শেখ হাসিনার সন্তানদের মাঝে মাঝেই মি. মুখার্জীর সরকারী বাসভবনে খেলতে দেখা যেত।

নিজের বই ‘ড্রামাটিক ডিকেড’-এ মি. মুখার্জী স্মৃতিচারণ করেছেন যে দুটি পরিবারের মধ্যে মাঝে মাঝে শুধু দেখাই হত না, দিল্লির বাইরে পিকনিকেও যাওয়া হত।

এরই মধ্যে ১৯৭৭ সালে ইন্দিরা গান্ধী নির্বাচনে হেরে গেলেন।

নতুন প্রধানমন্ত্রী মোরারজী দেশাই ‘র’-এর কাজকর্মে খুব একটা আগ্রহ দেখাতেন না।

এম এ ওয়াজেদ মিয়া তাঁর বই ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’-এ লিখেছেন, “রেহানাকে দিল্লিতে নিয়ে আসার ব্যাপারে কথা বলার জন্য শেখ হাসিনা আর ডক্টর ওয়াজেদ ১৯৭৭ সালে মোরারজী দেশাইয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। শেখ রেহানাকে দিল্লি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন মি. দেশাই। তিনি ১৯৭৭ সালের ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিল্লি এসেছিলেন। পান্ডারা পার্কের ফ্ল্যাটে শেখ হাসিনার সঙ্গেই ছিলেন তিনি।”

তবে ধীরে ধীরে শেখ হাসিনার নিরাপত্তার ব্যবস্থা থেকে হাত গোটাতে শুরু করেছিলেন মোরারজী দেশাই।

সিরাজউদ্দিন আহমেদ লিখছেন, “ধীরে ধীরে ডক্টর ওয়াজেদ আর হাসিনার ওপরে এরকম চাপ তৈরি করা হচ্ছিল, যাতে তাঁরা নিজেরাই ভারত ছেড়ে চলে যান। প্রথমে তো তাঁর ফ্ল্যাটের বিদ্যুতের যে বিল দিয়ে দেওয়া হত, সেটা বন্ধ হল। তারপর গাড়ির ব্যবস্থাও তুলে নেওয়া হল।

“ডক্টর ওয়াজেদ নিজের ফেলোশিপটা এক বছর বাড়ানোর আবেদন করেছিলেন। প্রায় তিন মাস তার কোনও জবাব আসেনি। সেকারণে তাঁকে বেশ আর্থিক সমস্যায়ও পড়তে হয়েছিল। শেষমেশ মোরারজী দেশাই অবশ্য ঠিক এক বছরের জন্য তার ফেলোশিপ বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছিলেন।”

তবে ১৯৮০-র জানুয়ারিতেই ইন্দিরা গান্ধী আবারও ক্ষমতায় ফিরে এসেছিলেন।

সেই সাথে শেষ হয়েছিল শেখ হাসিনার সব দুশ্চিন্তা।

সে বছরই ৪ঠা এপ্রিল শেখ হাসিনা নিজের সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে যান রেহানার সঙ্গে দেখা করতে।

১৯৮০তেই আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে দিল্লিতে এসেছিলেন, অনুরোধ করেছিলেন তাকে ঢাকায় ফিরে যাওয়ার জন্য।

ডক্টর ওয়াজেদ অবশ্য চাইছিলেন না যে শেখ হাসিনা ঢাকা ফিরে যান। তিনি মনে করতেন শেখ হাসিনার সরাসরি রাজনীতিতে আসা উচিত নয়।

তবে শেষমেশ ১৯৮১ সালের ১৭ই মে শেখ হাসিনা মেয়েকে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ আর কোরবান আলীর সঙ্গে ঢাকা রওয়ানা হন।

ঢাকা বিমানবন্দরে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ তাঁকে স্বাগত জানাতে সেদিন হাজির হয়েছিলেন।

পরের বছর, ১৯৮২’র ফেব্রুয়ারিতে ডক্টর ওয়াজেদ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের যোগ দেওয়ার আবেদন জানান। মহাখালীতে দুই কামরার একটা ফ্ল্যাট বরাদ্দ করেছিল পরমাণু শক্তি কমিশন।

শেখ হাসিনা সেই ফ্ল্যাটেই স্বামীর সঙ্গে থেকেছেন।