করোনা ভাইরাস: ভারতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে একদিনে মারা গেলো দুই হাজার
বিবিসি:: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভারতে একদিনে ২ হাজারের বেশি জন মানুষ মারা গেছে। অথচ এর আগে এখন পর্যন্তএকদিনে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজারও ছাড়ায়নি কখনো।
ইউরোপে যখন স্পেন,ইতালি বা ইংল্যান্ডে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ ছিল তখনও এত বড় সংখ্যায় মানুষ কমই মারা গেছে।
যদিও দেশটিতে শনাক্তের মধ্যে চলমান রোগীর তুলনায় সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীর সংখ্যা বেশি।
কিন্তু এর আগে এক হাজার বা এর চেয়ে বেশি লোক মারা যায়নি। এর আগে ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ মারা যান ৩৯৫ জন।
কিন্তু ১৭ই জুন একদিনে মৃতের সংখ্যা পাওয়া গেছে ২ হাজার ৩ জন। ভারতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১১ হাজার ৯ শত ৩ জন। ভারতে এখন পর্যন্ত মোট রোগী পাওয়া গেছে ৩ লাখ ৫৪ হাজার। যার মধ্যে এখন ভাইরাস আক্রান্ত আছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ২২৭ জন। সুস্থ হয়ে গেছেন ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৩৪ জন।
আজও ১০ হাজার ৯৭৪ জন নতুন রোগী পাওয়া গেছে ভারতে।
বিবিসির সৌতিক বিশ্বাস তার এক প্রতিবেদনে লিখেছেন, ভারতের লকডাউন ছিল নিঃসন্দেহে বিশ্বে অন্যতম সবচেয়ে কঠোর লকডাউন। মার্চের শেষ দিকে জারি করা লকডাউন প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকে ভারত শিথিল করতে শুরু করেছে। এবং দেশটিতে কোভিড-১৯এর প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হবার চার মাস পর এখন আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
ভারতে সংক্রমণের সংখ্যা তিন লাখ বিশ হাজারের বেশি। আক্রান্তের বিশ্ব তালিকায় আমেরিকা, ব্রাজিল ও রাশিয়ার পর চতুর্থ স্থানে আছে ভারত।
কিন্তু আমেরিকায় কর্নেল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক কৌশিক বসু বলছেন মাথা পিছু সংক্রমণের হিসাবে ভারতের স্থান তালিকায় অনেক নিচে- ১৪৩ নম্বরে।
বিশ্বে সংক্রমণের সংখ্যার দিক থেকে ভারত এখন চার নম্বরে।
মৃত্যুর দিক থেকে আট নম্বরে।
তবে এশিয়ায় সংখ্যার দিক থেকে ভারতের ধারে কাছেও নেই কোনো দেশ।
১৫ই জুনের রিপোর্ট অনুযায়ী দিল্লিতে বেশ নাজেহাল অবস্থা ছিল।
বিশেষত টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সবার। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে এটা বাস্তবসম্মত নয়। আবার অনেকে টেস্ট করাতে গিয়ে নাজেহাল হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দিল্লিতে টেস্টিংয়ের সংখ্যা যতই বাড়ানো হোক শহরের দু’কোটি বাসিন্দার সবাইকে পরীক্ষার আওতায় আনা কার্যত অসম্ভব – আর সেখানে কয়েকটি বিশেষ শ্রেণীকে অগ্রাধিকার দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
রাজধানী দিল্লিতে যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ খুব উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, ঠিক তখনই দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তারা করোনাভাইরাস টেস্টিং হঠাৎ করেই কমিয়ে দিয়েছে।
সাধারণ মানুষ শহরের নানা প্রান্তে ছুটোছুটি করেও করোনা টেস্ট করাতে পারছেন না – কিংবা কোনও মতে টেস্ট হলেও দিনের পর দিন তার রেজাল্ট মিলছে না – এমন অভিযোগ উঠেছে অনেক।
তবে ভারতে ১৬ই জুন পর্যন্ত ৬০ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি টেস্ট হয়েছে। শুধু ১৬ই জুনে টেস্ট করা হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার।