শিক্ষার দায়িত্ব কার? পরিবার, সামাজ নাকি রাষ্ট্রের?
মুন্না সন্দ্বীপী:: নেপোলিয়ান বলেছিল”তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটা শিক্ষিত জাতি উপহার দেব।
আর আমি বলিব তোমরা আমাকে একটা আদর্শ সরকার দাও আমি একটা সন্ত্রাস ও দূর্নীতি মুক্ত দেশ দিব।
একটা শিশু যখন জম্মগ্রহণ করে তখন থেকে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ক্রমে ক্রমে তা বাড়তে থাকে ।কিন্তু তার প্রাথমিক শিক্ষায় পারিবারিক তেমন কোন আর্থিক খরচ হয়না । কিন্তু যখন সে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য প্রস্তুত হয় তখন তার আর্থিক ভাবে অর্থ খরচ করতে হয়। এমন কি তা ক্রমে ক্রমে বেড়ে যায়। কিন্তু আমাদের দেশের ধনী পরিবারগুলোর কাছে তা তেমন একটা অনুভব হয়না। কিন্তু গরীব বা মধ্যবৃত্ত পরিবারে জন্য তা কাল হয়ে দাড়ায়, কবি বলেছিলেন সাত কোটি বাঙ্গালির মুগ্ধ জননী,রেখেছ বাঙ্গালি করে মানুষ করনি।’’ কবির কথাতো সত্যই প্রমানিত হচ্ছে। আমাদের কে সেই মানুষ বানানোর প্রধান দায়িত্ব কার? বলবেন পরিবার তাইনা? না তা কিন্তু না। একটা দারিদ্র পরিবার কখনো একটা ব্যক্তি কে মানুষ বানাতে পারবেনা। একটি দেশে সরকারই বা কেন? সরকারে প্রধান মুল দায়িত্ব হল জনগণের মৌলিক অধিকার করা,খাদ্য,বস্ত্র,বাসস্থান,শিক্ষা বাস্তবায়ন করা। খাদ্য বস্ত্র ও বাসস্থান এ তিনটি না হয় কোন রকম কর্ম করে যোগাড় করা যায় । কিন্তু শিক্ষা ? উচ্চ শিক্ষার জন্য/আদর্শ শিক্ষার জন্য তা কিন্তু সরকার কে-ই বহন করতে হবে। কেন একটি শিক্ষার্থী অর্থের অভাবে তার মৌলিক অধিকার শিক্ষা বন্ধ করে দিবে? কেনইবা ক্লাশ না করে দু’বেলা খাবারের জন্য টাকার পিছনে দৌড়াতে হবে? কেনইবা সে তার পরিবারকে অর্থ যোগান দিতে হবে? আর কেনইবা ব্যচলর ম্যাচ বাড়ার টাকার জন্য চাকুরির সন্ধান / মানুষের কাছে ভিক্ষার হাত বাড়াতে হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর কে দিবে??? হ্যাঁ সরকারকেই দিতে হবে । না হয় প্রতিটা মেধাবী ছাত্ররাই জঙ্গী,সন্ত্রাস,মাদক ব্যবসাই জড়িত হলে তার দাই সরকারের। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার শুরু থেকে চাকুরি পর্যান্ত পূর্ণ দায়িত্ব সরকারের। যদি সরকার শিক্ষার দায়িত্ব না নেয় তা হলে শাসনের করার কোন ক্ষমতার এখতিয়ার থাকবেনা। কেননা যিনি দিতে পারবেনা তিনি নিতেও পারবেনা। আজ আমরা উন্নত দেশের দিকে দেখি তাদের জন্ম থেকে শুরু করে শিক্ষার শেষ পর্যান্ত পূর্ণ দায়িত্ব সরকারই নেয় যার কারনে তারা আজ উন্নাত ।
আপনি ও বলতে পারেন বাংলাদেশ সরকারও প্রথম থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যান্ত বৃত্তি দেয়।
হ্যাঁ দেয় ,তবে একটু চিন্তা করুন বৃত্তি হিসাবে যে টাকা দেয় তাতে কি কাগজ কলম ক্রয় করার টাকা হয়?
আর কতজন কেই বা বৃত্তি দেয়, নামে মাত্র কয়েকজন কে।
যখনি একটা শিক্ষার্থী মাধ্যমিক শেষ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য মনস্থ হয় তখনি দারুন ভাবে প্রকাশিত হয় তার অভাব অনটন। চিন্তুা করুন না একটা শিক্ষাথী অনার্সে ভর্তি হতে ইচ্ছুক। তাও গুটি কয়েকটা কলেজ/বিশ্ববিদ্যালেয় সিমাবদ্ধ!! একটা শিক্ষার্থী কি ভাবে গ্রাম থেকে শহরে গিয়ে বাসা বাড়া নিয়ে পড়া-লিখা করবে? যার কিনা ভর্তির টাকাটাও বন্ধুর থেকে ধার করা। সে কি করে বাসা বাড়া ,খাওয়ার অর্থ জোগাড় করবে? তার দু’টা উপায় আছে প্রথমত সে কুলি বা ভিক্ষাবৃত্তি করতে হবে কিন্তু তা করলে তার আর ক্লাশ করা হবেনা ।না হয়,দ্বিতীয়ত সে অপরাধে জড়িয়ে যাবে। বাহ! বেশ! একটা দেশের সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থা!!
হায়দার হুসাইন গেয়ে গেছেন—
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।
কিন্তু এই ধিক্কার টা আমি কাকে দিব? স্বাধীনতা নাকি সরকারকে?
যখনি আমার বন্ধু টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারেনি তখনি স্বাধীনতা কে ধিক্কার দিয়েছি। কেন ত্রিশ লক্ষ শহীদ,সহস্র মা বোনের ইজ্জত এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে শিক্ষার অধিকার টাও পাচ্ছিনা । সত্যি কি স্বাধীনতা কে ধিক্কার দেওয়া উচিত ছিল? যদিও স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। তবে সেই ধিক্কার টা সরকারের প্রাপ্য। তবে একটাই দাবি জানায় ____
অশ্রু হয়তো বের হবেনা , কিন্তু রক্তটুকু ঢেলে দিয়ে রাজপথে বলে যাব শিক্ষা আমার অধিকার, আমাকে দাও একটু শিখতে ,আরেকটু শিখতে,আরেকটু শিখতে………………………………………