খোশ আমদেদ মাহে রমজান
ডেস্ক ২৪:: শুরু হলো মহিমান্বিত মাস রমজান। খোশ আমদেদ মাহে রমজান। বিশ্ব মুসলিমের কাছে সবচেয়ে মর্যদাপূর্ণ মাস এটি । এ মাসেই মহান আল্লাহ তায়ালা বিশ্ব মানবতার মুক্তি পথনির্দেশক হিসেবে নাযিল করেছেন আল কুরআন। কুরআন হলো মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো সর্বশেষ হেদায়াতের গ্রন্থ। কিয়ামত পর্যন্ত মানুষের জন্য আর কোনো আসমানী কিতাব আসবে না। আর তাই কিয়ামত পর্যন্ত মানুষকে সুন্দরভাবে তার জীবন চালাবার জন্য যা দরকার তার সবই আল্লাহ কুরআনে বলে দিয়েছেন। কুরআন নাযিলের কারণে এ মাসের এতো মর্যাদা।
রমজান মাস সিয়াম সাধনার মাস। রমজানকে ধৈর্য ও সংযম সাধনার মাস বলা হয়। কারণ এ মাসে সকল পাপ কার্য থেকে মুক্ত থাকার জন্য ধৈর্য, সংযম ও সহিষ্ণুতার কঠোর প্রশিÿণ নিতে হয়। রমজানের এই এক মাসের সিয়াম সাধনা অর্থাৎ অন্যায় অপকর্ম তথা সব ধরণের গোনাহর কাজ থেকে বিরত থাকার কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জিত প্রশিক্ষণ বছরের বাকী ১১ মাস সঠিক পথে চলতে সবাইকে অনুপ্রাণিত করে থাকে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যা¯Í পর্যন্ত খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ এবং ইন্দ্রিয়জ সুখ আস্বাদন থেকে বিরত থাকাই হচ্ছে সিয়াম বা রোজার প্রধান বৈশিষ্ট্য। শুধু মহানবী (সাঃ) এর মাধ্যমে প্রেরিত ইসলাম ধর্মেই যে সিয়াম সাধনা রয়েছে তা নয়, মহান আল্লাহ পাক অতীতে অন্যান্য নবী রসুলদের মাধ্যমে প্রেরিত ধর্মেও রোজার বিধান ছিলো।
আল্লাহ তায়ালা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মানুষকে মুত্তাকী হওয়ার কথা বলেছেন। মুত্তাকী হওয়ার মানে তাকওয়া বা খোদাভীরুতা অর্জন। কারণ একজন খোদাভীরু মানুষ অন্যায় বা গোনাহর কাজ থেকে বিরত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এভাবে মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৎকর্মশীল পূণ্যবান মানুষ হিসেবে নিজেকে গঠনের হাতিয়ার হিসেবে সিয়াম অর্থাৎ রোজা অনুশীলনের বিধান বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। এ অবস্থায় আমাদের উচিত, যথাযথভাবে এই ঐশী বিধান পালন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, এই পবিত্র মাসেও একশ্রেণীর মানুষকে দেশ ও জাতির তথা মানুষের জন্য ক্ষতিকর কর্ম থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতে দেখা যায় না। বরং অনেককে এই পবিত্র মাসকে পুঁজি করে অধিক মুনাফা অর্জনের লোভ লালসায় জড়িত হতে দেখা যায়। অসৎ আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও মজুতদারদের বিভিন্ন নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও মূল্যবৃদ্ধি করে সাধারণ ও সীমিত আয়ের মানুষকে সীমাহীন আর্থিক কষ্টে ফেলতে দেখা যায়।
মজান মাস রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস। রমজান পেয়েও যে ব্যক্তি এই রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মহা সুযোগকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়, তাকে দুর্ভাগা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহর দরবারে অতীতের গোনাহ মাফ করিয়ে নেওয়া এবং অসীম পূণ্যলাভের সুযোগ এনে দেয় এই পবিত্র মাস। এই মাসে মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজেল হয়। শবে ক্বদরের রাতে অবতীর্ণ হয় এই ঐশীগ্রন্থ, মহান দিক নির্দেশক ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। আল্লাহ পাক শবে ক্বদরের রাতকে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম বলে উলেøখ করেছেন। এই মহান রাতকে ধারণ করে আছে রমজান মাস। সিয়াম সাধনার পাশাপাশি এই মহান রাতে ইবাদত বন্দেগীর সুযোগকে কাজে লাগানো সকল বিশ্বাসী মুসলমানের একান্ত কর্তব্য।
মানব জাতির ইতিহাসকে বদলে দিয়ে সঠিক ও সভ্যতার সঠিক পথে পরিচালনাকারী ঐশীগ্রন্থ আল কোরআনের মাস রমজান যেনো আমরা সত্য ও সঠিক পথে নিজেদের চালিত করার ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারি মহান আল্লাহর দরবারে রমজানের শুরুতে এই প্রার্থনা ।