ভারতেও বাংলাদেশের নেটওয়ার্ট!



বর্ধমান বিস্ফোরণের পর হিলি সীমান্তের নিরাপত্তার ব্যাপারে একটি বিষয় বিএসএফ ও গোয়েন্দাদের সমস্যায় ফেলে দিয়েছে তা হলো ভারতেও বাংলাদেশি মোবাইল নেটওয়ার্কের অবাধ বিস্তার। খবর কলকাতায় ২৪ এর।
বাংলাদেশের গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকসহ বিভিন্ন মোবাইলের টাওয়ার ভারতের হিলির বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে প্রসারিত রয়েছে। ফলে অনুপ্রবেশকারী ও চোরাকারবারীরাসহ অনেকেই ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে অবাধে বাংলাদেশি মোবাইল ও সিমকার্ড তথা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে। ওপারে বাংলাদেশের মোবাইলের নেটওয়ার্ক সহজে পাওয়া যাওয়ায় ওপারে দাঁড়িয়েই এপারের লোকেদের সাথে কথা বলছে তারা। মূলত বাংলাদেশি এই মোবাইল নেটওয়ার্কের সুবিধা নিচ্ছে চোরাকারবারী ও অনুপ্রবেশকারীরা। অথচ হিলি শহরে আসা মাত্রই ভারতের বিএসএনএল নেটওয়ার্ক উধাও হয়ে যায়। বিএসএনএল নেটওয়ার্ক না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন ভারতের বিএসএফ ও গোয়েন্দারাও। যার ফলে বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তা ও কড়া নজরদারি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের সীমান্ত শহর হিলি। এই শহরের পুরোটাই বাংলাদেশ সীমান্তের একেবারে জিরো পয়েন্টে অবস্থিত। এখানেই রয়েছে বৈধ পাসপোর্ট-এর মাধ্যমে লোক ও বাংলাদেশে রপ্তানি বাণিজ্যের পণ্য পারাপারের আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট। জিরো পয়েন্টের লাগোয়া হওয়ায় হিলি সীমান্তে এখনো কাটাতারের বেড়া দেওয়া যায় নি। ফলে অনুপ্রবেশ এখানকার নিত্য দিনের ঘটনা। এই হিলি শহরের প্রায় আশি শতাংশ এলাকায় অবশ্য এদেশের বিএসএনএল মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করেনা। হিলিতে আসা মাত্রই বিএসএনএল এর আর দেখা পাওয়া যায় না। সমস্যার সামনা করতে হচ্ছে বিএসএফ-কেই। কারণ বিএসএফ কর্মকর্তাদের সরকারি সব নম্বর ও সিমকার্ডই বিএসএনএল-এর। অথচ বাংলাদেশের বিভিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক পুরোদমে এখানে কাজ করে। শুধু হিলি শহরেই নয় বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ গঙ্গারামপুর ও তপনের অনেক এলাকাতেই বিস্তৃত রয়েছে।
শুধু নেটওয়ার্কই পাওয়া যায় তা নয় ভারতের এইসব শহরে বসেই হাতে পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশের সিম কার্ড। যা মোবাইল সেটে ভরে নিয়ে চোরাকারবারী থেকে শুরু করে অনুপ্রবেশকারীরা সকলেই ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়েই বাংলাদেশের লোকেদের সাথে সহজে যোগাযোগ ও তথ্য আদান প্রদান করতে পারছেন। জঙ্গি সংগঠনের সাথে যুক্ত লোকেরাও যে বাংলাদেশি মোবাইল নেটওয়ার্ক ভারতে চালু থাকার এই সুবিধাকে কাজে লাগাচ্ছে সেই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিতে পারছেনা গোয়েন্দারা।
বিএসএফ এর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে দিল্লির সংশ্লিস্ট বিভাগে জানানো হলেও বাংলাদেশি মোবাইল নেটওয়ার্ক ভারতে বন্ধ করতে কোনো জ্যামার বসানো বা অন্য কোনো পদ্ধতি চালু করার কোনো উদ্যোগই নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।