শৈত্য কিছুটা কাটল সাহারার সফরে
ইন্দিরা গাঁধীর ব্যবহৃত সামগ্রী, আসবাব, লেখার টেবিল, মন্ত্রীদের সঙ্গে আপৎকালীন বৈঠক করার ছোট্ট ঘর। সামনে দাঁড়িয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতে ডুব দিলেন তিনি। ভাঙা হাঁটুর জন্য ওয়াকার নিয়ে চলাফেরা। তবুও ভারত ছাড়ার আগে দু’দিনের কূটনৈতিক ব্যস্ততা সেরে ‘ইন্দিরা মেমোরিয়াল’ তন্ন তন্ন করে ঘুরলেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন।
“মুক্তিযুদ্ধের কথা এলে ইন্দিরা গাঁধীর কথা স্মরণে না এসে পারে না”, বলেন খাতুন। তিস্তা চুক্তি থেকে সীমান্তে শান্তি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে আজ ঢাকা ফেরার আগে তিনি দৃশ্যতই খুশি এবং কিছুটা স্মৃতিমেদুর। বলছেন, “ছোটবেলা থেকেই ইন্দিরা গাঁধীর প্রতি শ্রদ্ধা ছিল। আজ তাঁর বাড়ি গিয়ে, তাঁর জীবনযাত্রার আঁচ পেয়ে যেন সেই শ্রদ্ধা যেন আরও বেড়ে গেল। ইন্দিরা গাঁধী তথা ভারত সরকার যদি আশ্রয়, প্রশিক্ষণ এবং সাহায্য না দিতেন, তা হলে আমরা মাত্র ক’মাসের মধ্যে দেশকে স্বাধীন করতে পারতাম না। এই কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।”
ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কূটনৈতিক তাস কি তা হলে এখনও সেই ইন্দিরা-মুজিব সখ্য আর মুক্তিযুদ্ধের সৌভ্রাতৃত্বের স্মৃতি? না-হলে কেনই বা খাতুন বলবেন, “আমি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিটি অনুমোদন করুন।“আমি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা উনি জানিয়েছেন, আসন্ন সংসদীয় অধিবেশনেই এই বিষয়ে বিল আনা হবে।”
ইন্দিরা গাঁধীর হত্যাস্থলে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়েছে তাঁর। বলেছেন, “মনটা খুবই খারাপ লাগল ওই জায়গাটি দেখে। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকেও এ ভাবেই হত্যা করা হয়েছিল। দেশটাকে গড়ে যাওয়ার সময় পেলেন না উনি।”
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ইতিহাসকে কাজে লাগাতেই হচ্ছে। কেন না যে সময়টিতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরে এলেন, তা সে দেশের ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণ। তিন বছর ক্ষমতায় থাকার পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার শিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক ভাবে এবং গোপনে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে চলছে প্রবল বিরোধিতা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনে নেমেছেন বিএনপি-র নেতারা। পাশাপাশি হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সক্রিয় কট্টর ইসলামিরাও। হাসিনা ভারতের ‘দালালি’ করছেন, কিন্তু বিনিময়ে নয়াদিল্লি আদৌ বাংলাদেশের স্বার্থের কথা ভাবছে নাএমন প্রচারই দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আগামী নির্বাচনের আগে তাই ভারতের সঙ্গে বকেয়া চুক্তিগুলি মিটিয়ে ঘরোয়া রাজনীতিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে আওয়ামি লিগ।
বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি এখনও বাস্তবায়ন করা যায়নি। ছিটমহল হস্তান্তরের চুক্তির জন্য ভারতীয় সংসদে একটি সংবিধান সংশোধনী বিল আনা প্রয়োজন, সে ব্যাপারেও এখনও পদক্ষেপ করতে পারেনি নয়াদিল্লি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের আপত্তিতে তিস্তা চুক্তি আটকে রয়েছে। পাশাপাশি, সীমান্তে অশান্তির জন্য অভিযোগের তর্জনী বিএসএফ-এর দিকেও। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের কাছে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিককে বিবস্ত্র করে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে যথেষ্ট বড় চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক।
খাতুনের সাম্প্রতিক সফরে যে এই সব জটিলতার সমাধান হয়ে গিয়েছে এমনটা নয়। তবে শেখ হাসিনার দূত হিসাবে খাতুন কূটনৈতিক দৌত্য করে গিয়েছেন প্রত্যেকটি বিষয় নিয়েই। বিনিময়ে বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তি থেকে অনুপ চেটিয়ার হস্তান্তর সব ব্যাপারেই নয়াদিল্লিকে ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছেন খাতুন। আগামী মাসের ১৪ তারিখ বিএসএফ এবং বিডিআর-এর ডিজির মধ্যে নয়াদিল্লিতে বৈঠক হবে। সীমান্তে সমন্বয় মজুবত করার বিষয়ে কথা হবে ওই বৈঠকে। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, “অনেকটাই ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।” খাতুন নিজেও খুশি। জানাচ্ছেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে জানিয়েছি, তিস্তা চুক্তি করা যেমন দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজন, তেমনই আমাদের (সরকারের) জন্যও খুবই জরুরি। তিনি কথা দিয়েছেন, চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করবেন।”
“মুক্তিযুদ্ধের কথা এলে ইন্দিরা গাঁধীর কথা স্মরণে না এসে পারে না”, বলেন খাতুন। তিস্তা চুক্তি থেকে সীমান্তে শান্তি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে আজ ঢাকা ফেরার আগে তিনি দৃশ্যতই খুশি এবং কিছুটা স্মৃতিমেদুর। বলছেন, “ছোটবেলা থেকেই ইন্দিরা গাঁধীর প্রতি শ্রদ্ধা ছিল। আজ তাঁর বাড়ি গিয়ে, তাঁর জীবনযাত্রার আঁচ পেয়ে যেন সেই শ্রদ্ধা যেন আরও বেড়ে গেল। ইন্দিরা গাঁধী তথা ভারত সরকার যদি আশ্রয়, প্রশিক্ষণ এবং সাহায্য না দিতেন, তা হলে আমরা মাত্র ক’মাসের মধ্যে দেশকে স্বাধীন করতে পারতাম না। এই কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।”
ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কূটনৈতিক তাস কি তা হলে এখনও সেই ইন্দিরা-মুজিব সখ্য আর মুক্তিযুদ্ধের সৌভ্রাতৃত্বের স্মৃতি? না-হলে কেনই বা খাতুন বলবেন, “আমি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিটি অনুমোদন করুন।“আমি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা উনি জানিয়েছেন, আসন্ন সংসদীয় অধিবেশনেই এই বিষয়ে বিল আনা হবে।”
ইন্দিরা গাঁধীর হত্যাস্থলে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়েছে তাঁর। বলেছেন, “মনটা খুবই খারাপ লাগল ওই জায়গাটি দেখে। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকেও এ ভাবেই হত্যা করা হয়েছিল। দেশটাকে গড়ে যাওয়ার সময় পেলেন না উনি।”
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ইতিহাসকে কাজে লাগাতেই হচ্ছে। কেন না যে সময়টিতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরে এলেন, তা সে দেশের ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণ। তিন বছর ক্ষমতায় থাকার পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার শিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক ভাবে এবং গোপনে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে চলছে প্রবল বিরোধিতা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনে নেমেছেন বিএনপি-র নেতারা। পাশাপাশি হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সক্রিয় কট্টর ইসলামিরাও। হাসিনা ভারতের ‘দালালি’ করছেন, কিন্তু বিনিময়ে নয়াদিল্লি আদৌ বাংলাদেশের স্বার্থের কথা ভাবছে নাএমন প্রচারই দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আগামী নির্বাচনের আগে তাই ভারতের সঙ্গে বকেয়া চুক্তিগুলি মিটিয়ে ঘরোয়া রাজনীতিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে আওয়ামি লিগ।
বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি এখনও বাস্তবায়ন করা যায়নি। ছিটমহল হস্তান্তরের চুক্তির জন্য ভারতীয় সংসদে একটি সংবিধান সংশোধনী বিল আনা প্রয়োজন, সে ব্যাপারেও এখনও পদক্ষেপ করতে পারেনি নয়াদিল্লি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের আপত্তিতে তিস্তা চুক্তি আটকে রয়েছে। পাশাপাশি, সীমান্তে অশান্তির জন্য অভিযোগের তর্জনী বিএসএফ-এর দিকেও। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের কাছে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিককে বিবস্ত্র করে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে যথেষ্ট বড় চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক।
খাতুনের সাম্প্রতিক সফরে যে এই সব জটিলতার সমাধান হয়ে গিয়েছে এমনটা নয়। তবে শেখ হাসিনার দূত হিসাবে খাতুন কূটনৈতিক দৌত্য করে গিয়েছেন প্রত্যেকটি বিষয় নিয়েই। বিনিময়ে বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তি থেকে অনুপ চেটিয়ার হস্তান্তর সব ব্যাপারেই নয়াদিল্লিকে ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছেন খাতুন। আগামী মাসের ১৪ তারিখ বিএসএফ এবং বিডিআর-এর ডিজির মধ্যে নয়াদিল্লিতে বৈঠক হবে। সীমান্তে সমন্বয় মজুবত করার বিষয়ে কথা হবে ওই বৈঠকে। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, “অনেকটাই ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।” খাতুন নিজেও খুশি। জানাচ্ছেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে জানিয়েছি, তিস্তা চুক্তি করা যেমন দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজন, তেমনই আমাদের (সরকারের) জন্যও খুবই জরুরি। তিনি কথা দিয়েছেন, চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করবেন।”
« মার্কিন গোপন নথিতে বিডিআর বিদ্রোহ (পূর্বের সংবাদ)