Main Menu

মার্কিন গোপন নথিতে বিডিআর বিদ্রোহ

+100%-

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিডিআর বিদ্রোহের শুরু থেকেই মার্কিন দূতাবাসের তীক্ষ দৃষ্টি ছিল সরকার, সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক মহল ও সংবাদমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আচরণ ও গতিবিধির দিকে। সেদিনই রাত ১২টার দিকে রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের সদর দপ্তরে একটি গোপন তারবার্তা পাঠান: ‘বাংলাদেশে সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে বিদ্রোহ, ঢাকায় উত্তেজনা’। সে তারবার্তায় বিদ্রোহ শুরুর বিবরণ রয়েছে; বিকেল চারটা পর্যন্ত যা যা ঘটেছে, তার প্রায় সবই যে রাষ্ট্রদূত জেনেছেন, সেটা বোঝা যায়। তারবার্তায় বিদ্রোহের প্রাথমিক বিবরণের পাশাপাশি মন্তব্য করা হয়, এ ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন সরকারের জন্য একটা সত্যিকারের পরীক্ষা। বার্তার শেষে বলা হয়, ‘আমরা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি; সামরিক বাহিনী, পুলিশ বিভাগ, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ চলছে।’
উইকিলিকস ওয়েবসাইটে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের যে আড়াই লাখ গোপন তারবার্তা প্রকাশিত হয়েছে, তার মধ্যে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো তারবার্তাও রয়েছে। ঢাকায় সে সময় দায়িত্বরত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত অন্তত ৯টি তারবার্তা ওয়াশিংটনে পাঠান।

২৬ ফেব্রুয়ারি পাঠানো তারবার্তাটি থেকে জানা যাচ্ছে, সেদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন। তিনি হাসিনার সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সমর্থন অটুট রয়েছে বলে জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টিকে বলেন, তিনি আশা করছেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংকটের নিরসন হবে। একই দিনে রাষ্ট্রদূতের কথা হয় সে সময়ের বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের সঙ্গে। মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বিডিআরের বিদ্রোহীরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত, তাদের কোনো কেন্দ্রীয় নেতা নেই, সে কারণে সংকট নিরসনে সরকারের অসুবিধা হচ্ছে। এতে রাষ্ট্রদূতের মনে হয়েছে, বিদ্রোহ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। আওয়ামী লীগের কিছু নেতা যেমন বলেছেন, বিদ্রোহটি এক দীর্ঘ পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ, তার পেছনে বিরোধী দলগুলোর প্রচ্ছন্ন সমর্থন আছে—রাষ্ট্রদূতের সে রকম মনে হয়নি। তবে তাঁর মনে হয়েছে, এই সংকটের নিরসন যেভাবেই ঘটুক না কেন, বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার ওপর এর একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে। সামরিক বাহিনীর ওপর বেসামরিক কর্তৃত্ব বজায় থাকবে কি না, এ ঘটনা হবে তারও একটা বড় পরীক্ষা। এই বিদ্রোহের ফলে বিডিআর যে ক্ষতির মুখে পড়বে, তাতে বাংলাদেশের স্থলসীমান্তের সুরক্ষাব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে।

বিদ্রোহ মোকাবিলার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা যতটা সম্ভব রক্তপাত এড়াতে চান বলে রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির মনে হয়েছে। হাসিনার রাজনৈতিক মিত্ররা রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর ভেতরে বিদ্রোহীদের ওপর সহিংস প্রতিশোধ গ্রহণের পক্ষে চাপ রয়েছে। তারবার্তায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র চায়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ পন্থায় সংকটের অবসান ঘটুক; সামরিক বাহিনীর ওপর বেসামরিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকুক। শেখ হাসিনার নতুন সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে মরিয়ার্টি টেলিফোনে শেখ হাসিনাকে জানান। রাষ্ট্রদূত বিরোধী নেতা খালেদা জিয়াকেও টেলিফোন করে বিরোধী দলের দায়িত্বশীল আচরণের জন্য ধন্যবাদ জানান। খালেদা জিয়া রাষ্ট্রদূতকে বলেন, জাতির মঙ্গলের স্বার্থে সংকট উত্তরণে তিনি সরকারকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
২৭ ফেব্রুয়ারির তারবার্তায় বলা হয়, সেদিন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করে মরিয়ার্টির মনে হয়েছে, রাজনৈতিক ও সামরিক নেতারা বিদ্রোহ মোকাবিলায় পরিপক্বতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন, যেমনটি বাংলাদেশে সচরাচর দেখা যায় না। এদিন ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের প্রধান দৃষ্টি ছিল সেনাবাহিনীর দিকে। এর মধ্যে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের আরও লাশ উদ্ধার হচ্ছিল, তাঁদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানকে ঘিরে আবেগ-উত্তেজনা বাড়ছিল। রাষ্ট্রদূতের মনে হয়েছে, সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত যে ধৈর্য, সংযম ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে, সেটা যেন অব্যাহত থাকে; বিদ্রোহীদের ওপর সহিংস প্রতিশোধ যেন না ঘটে; সেটা নিশ্চিত করা সে মুহূর্তের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি তাঁর সদর দপ্তরকে জানাচ্ছেন: ‘সরকারের যেসব উপদেষ্টা সামরিক বিষয়াদি তত্ত্বাবধান করেন এবং সেনাবাহিনীর যেসব জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রক্তক্ষয়ী প্রতিশোধ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন, তাঁদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি।’

২৮ ফেব্রুয়ারি পাঠানো তারবার্তায় জানানো হয়, আগের রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদের মধ্যে বৈঠক হয়, সেনা কর্মকর্তাদের তীব্র ক্ষোভ কীভাবে প্রশমন করা যায়, বৈঠকের মূল আলোচ্য ছিল সেটাই। রুদ্ধদ্বার সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, এমন গোপন সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে তারবার্তায় বলা হচ্ছে, সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদের সব প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ছিল হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের জন্য বিশেষ টাইব্যুনাল গঠন করা এবং বিডিআরের পুনর্গঠন। ২৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলাম রাষ্ট্রদূতকে জানান, তিনি সেনা কর্মকর্তাদের এক জমায়েতে বলেছেন, হত্যাকারী বিদ্রোহীদের দ্রুত বিচার করা হবে। একই দিন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বিডিআর সদর দপ্তরে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাযজ্ঞে যাঁরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করার কাজে আরও অগ্রগতি ঘটেছে।

বিদ্রোহের তিন দিন পর, যখন বিদ্রোহীরা অস্ত্র সমর্পণ করেছেন এবং দৃশ্যত বড় বিপদ আর নেই, তখন, ১ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাঠানো তারবার্তায় রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির উদ্বেগ টের পাওয়া যায়। কারণ, সরকারের পক্ষ থেকে অনেক পদক্ষেপ নেওয়ার পরও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের একটা বড় অংশের মধ্যে তীব্র আবেগ ক্রিয়াশীল; তখনো তাঁরা মনে করছিলেন, বিদ্রোহ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল সামরিক আক্রমণ চালিয়ে বিদ্রোহ দমনের নির্দেশ দেওয়া। বিশেষত, মধ্যম ও জুনিয়র স্তরের সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্রিয়াশীল ছিল প্রতিশোধস্পৃহা (থার্স্ট ফর রিভেঞ্জ)। তা ছাড়া, বাংলাদেশের রাজনীতির চিরাচরিত স্বভাব এরই মধ্যে ফিরে এসেছে, এ ঘটনাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার মতলব হয়ে উঠেছে দৃশ্যমান। বিএনপির পক্ষ থেকে একটা বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, যা তার আগের অবস্থানের বিপরীত। বিএনপির অভিযোগ: সেনা কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের প্রাণ রক্ষা করতে সরকার সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্রদূতের ভাষায়: সংকটের প্রথম দিকে জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বান ধ্বনিত হয়েছিল, মনে হচ্ছে তা মার খেয়ে গেছে দলীয় রাজনীতি ও সেনাবাহিনীর প্রতিশোধস্পৃহার কাছে (পার্টিজান পলিটিকস অ্যান্ড আর্মিজ থার্স্ট ফর রিভেঞ্জ)। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বিডিআর বিদ্রোহের পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল অনিশ্চিত।

সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকী ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে সেনানিবাসে গিয়েছিলেন ৫০০ সেনা কর্মকর্তার মুখোমুখি হতে, তাঁদের কথা শুনতে, তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানাতে। মন্ত্রিসভার সব সদস্যের নিষেধ অগ্রাহ্য করে শেখ হাসিনা সেদিন প্রচণ্ড সংক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন, এ কথা রাষ্ট্রদূত তাঁর ১ মার্চের তারবার্তায় উল্লেখ করেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সেনা কর্মকর্তাদের ‘রিপিটেড ভারবাল অ্যাবিউজ’-এর শিকার হয়েছেন। ৫ মার্চ পাঠানো তারবার্তায় মরিয়ার্টি মন্তব্য করেন, বিক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হয়ে শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন এবং এতে কিছুটা কাজ হয়েছে।

১ মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতি অনিশ্চিত ছিল, সে সময় মরিয়ার্টির মনে হয়েছে, বিদ্রোহ তদন্তের কাজে সততা ও অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিস্থিতি শান্ত করার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সেদিন, অর্থাৎ ১ মার্চ সকালে দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড বাউচার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন। শেখ হাসিনা তখন ইঙ্গিত দেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কারিগরি সহযোগিতা চাওয়া হবে। পরদিন ২ মার্চ তদন্তকাজে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কারিগরি সহযোগিতা চেয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ও তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির হাতে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি দেন। ২ মার্চের তারবার্তায় রাষ্ট্রদূত লেখেন, বিডিআর বিদ্রোহ কেন, কাদের দ্বারা হয়েছে, কারা এর পেছনে ছিল, এসব নিয়ে জল্পনাকল্পনায় ভরে উঠেছে বাংলাদেশ। সব পক্ষেরই একটা করে ষড়যন্ত্র-তত্ত্ব আছে এবং সেগুলো ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহ ছিল ‘সম্পূর্ণভাবে পূর্বপরিকল্পিত’ (কমপ্লিটলি প্রি-প্ল্যানড)। কিন্তু কারা কী উদ্দেশ্যে এটা ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্যপ্রমাণ কোনো পক্ষই হাজির করেনি। ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের প্রচার চলছে, সবাই এক ‘অদৃশ্য হাতে’র কথা বলছে। এই পরিবেশে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য লেখেন, তদন্ত কমিটিগুলোর কাজ প্রভাবিত হবে। এ ছাড়া তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়, তেমন কোনো অদৃশ্য হাত ছিল না, তাহলে জনগণের মনে হবে তদন্ত সৎভাবে করা হয়নি, সত্য ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে সরকারি ও বিরোধী সব পক্ষের তথ্য-প্রমাণহীন কথাবার্তাগুলোয় মরিয়ার্টি বিস্মিত হননি; কিন্তু তাঁর অস্বস্তি চাপা থাকেনি।

একাধিক তারবার্তায় রাষ্ট্রদূত লিখেছেন, তাঁরা কোনো বহিঃশক্তির হাতের প্রমাণ পাননি। বিডিআর বিদ্রোহের প্রধান কারণ বিডিআর জওয়ানদের বেতন-ভাতা, চাকরির সুযোগ-সুবিধাসংক্রান্ত বঞ্চনাবোধ এবং তা থেকে জমে ওঠা ক্ষোভ—এটা মরিয়ার্টি লিখেছেন, ‘জানামতে’ (রিপোর্টেডলি) শব্দবন্ধটি ব্যবহার করে। অর্থাৎ এটা নিশ্চিত নয়। সেই মর্মান্তিক জাতীয় ট্র্যাজেডির তিন বছর পার হলো, কিন্তু আজও তা রহস্যই রয়ে গেল। মার্কিনরা এ রহস্য ভেদ করেনি, সেটা তাদের কাজও নয়। কিন্তু অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা জাগে, সেগুলোর উত্তর জরুরি। বিডিআরের নাম, পোশাক সব বদলানো হয়েছে, কিন্তু খোঁজ নেওয়া হয়েছে কি, ওই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে এখনো কোনো বঞ্চনা-বৈষম্যবোধ রয়ে গেছে কি না? সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিডিআর বিদ্রোহের বিচারে সন্তুষ্ট হয়েছেন তো? আমরা কি নিশ্চিত কোথাও কোনো বাষ্প জমে নেই?

একক পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নজরদারি করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্বশীলতা লক্ষ করার মতো। তারা বিদ্রোহের পুরোটা সময় ধরে বলে এসেছে, যা কিছু করার করতে হবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই। বারবার জোর দিয়ে বলেছে, সামরিক বাহিনীর ওপর বেসামরিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হবে। ৫ মার্চ পাঠানো তারবার্তায় রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি লিখছেন: ‘বাংলাদেশের বেসামরিক সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচিত সম্ভাব্য সবকিছু করা।’ এসবের তুলনায় আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণ ও কথাবার্তা কতটা দায়িত্বশীল ছিল?






Shares