ভেসনা ভুলোভিচ-তেত্রিশ হাজার ফুট উঁচু থেকে পড়ে বেঁচে যাওয়া মহিলা মারা গেলেন



বিবিসি বাংলা::তেত্রিশ হাজার ফুট উঁচুতে বিস্ফোরিত এক বিমান থেকে মাটিতে পড়ার পরও অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছিলেন যে এয়ার স্টুয়ার্ডেস, গতকাল ৬৬ বছর বয়সে তিনি মারা গেছেন।
সার্বিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, গতকাল ভেসনা ভুলোভিচকে বেলগ্রেডে তাঁর ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
১৯৭২ সালে তৎকালীন যুগোশ্লাভ এয়ারলাইন্সে এয়ার হোস্টেস হিসেবে কাজ করতেন ভেসনা ভুলোভিচ। সে বছরের ২৬শে জানুয়ারী তাদের বিমানটি চেকোশ্লাভাকিয়ার এক পার্বত্য অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়। ডগলাস ডিসি-নাইন বিমানটি বোমা বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হয় বলে সন্দেহ করা হয়।
এসময় এটি প্রায় ৩৩ হাজার ফুট ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। বিমানের ২৭ জন যাত্রী এবং অন্যান্য ক্রুরা সবাই মারা যান।
কিন্তু কেবল বেঁচে গিয়েছিলেন ভেসনা ভুলোভিচ।তিনি ছিলেন বিমানের লেজের দিকে এবং একটি খাবারের ট্রলির কারণে সেখানে আটকে পড়েছিলেন।
এরপর অত উঁচু থেকে বিমানের লেজটি খসে পড়ে একটি পাহাড় চুড়ায়, যেটি তখন ঘন তুষারে ঢাকা। সেখানে তখন তাপমাত্রা হিমাংকের নীচে।
ঘন তুষারের আস্তরণের কারণেই অত উঁচু থেকে পড়ার পরও তিনি বেঁচে যান বলে মনে করা হয়।অন্ধকারে তাঁর চিৎকার শুনে পাহাড়ের জঙ্গল থেকে তাকে উদ্ধার করেন এক বনকর্মী ব্রুনো হংকে।হাসপাতালে নেয়ার পরও সেখানে দশদিন কোমার মধ্যে ছিলেন ভেসনা ভুলোভিচ।
তাঁর মাথার খুলি, মেরুদন্ড এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত লাগে।তবে এরপরও তিনি সেরে উঠেন এই আঘাত থেকে।তবে এত উঁচু থেকে কোন মানুষ মাটিতে পড়ার পরও যে বেঁচে যেতে পারে, সেটি ছিল এক বিস্ময়কর ঘটনা। এজন্যে গিনেজ বুক অব রেকর্ডসে তার নাম উঠেছিল।
সুস্থ হওয়ার পর ভেসনা ভুলোভিচ আবার তার কাজে ফিরে যান। তবে ঐ দুর্ঘটনা এবং পরে তাঁকে যে উদ্ধার করা হয়েছিল সেটির স্মৃতি তিনি ভুলে গিয়েছিলেন।সার্বিয়ায় ভেসনা ভুলোভিচ ছিলেন রীতিমত সেলিব্রেটি। তিনি সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের পেছনে তার সমর্থন যুগিয়ে গেছেন।
সার্বিয়া উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থানের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। প্রেসিডেন্ট স্লোবোডান মিলোসোভিচের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় তিনি তার চাকুরিও হারিয়েছিলেন।