নবীনগর পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এলজিডি সচিবের নিকট স্হানীয় সাংসদের সুপারিশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসভার মেয়র মাঈন উদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছেন স্থানীয় সাংসদ।
এই বিষয়ে গত ২৫ মে ফয়েজুর রহমান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আধা সরকারিপত্র (ডিও) চিঠি পাঠান।
স্থানীয় সাংসদের স্বাক্ষতির ওই চিঠি সূত্রে জানা গেছে, নবীনগর পৌরসভার মেয়রের পৌরসভার প্রায় ১৩ কোটি টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে পৌরসভার ১০ জন কাউন্সিলর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ পান সাংসদ। এ বিষয়ে ১৭ মে নবীনগর পৌরসভার কার্যালয়ে মেয়র, অভিযোগকারী ১০ জন কাউন্সিলর ও পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আলোচনা করেন সাংসদ। এ সময় হওয়া আলোচনায় পৌরসভার কাজে অনেক অনিয়ম হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
এর আগে, মেয়রের বিরুদ্ধে গত ১১ মে জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিলকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, পৌর কাউন্সিলদের মতামত, পরামর্শ ও পৌরসভার সকল নিয়মকানুন উপেক্ষা করে বেআইনীভাবে সেচ্ছাচারীতার মাধ্যাম স্বীয় ক্ষমতা অপব্যবহার করেছেন মেয়র। পৌর সভার ৫নং ওয়ার্ডে ইদন মিয়ার বাড়ি হতে আলীয়াবাদ পশ্চিম পাড়া পর্যন্ত রাস্তা নির্মান কাজ যাহা স্থানীয় এমপি ফয়জুর বাদল তার নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেন। মেয়র সু-কৌশলে কাউন্সিলদের অজ্ঞাতসারে গতবছরের ৩০শে মে পত্রিকার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যামে কিছু কাজের দরপত্র আহবান করেন। এমপি মহোদয়ের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরী উক্ত প্রকল্পের প্রাক্কলিক ৩০ লাখ ৯৫ হাজার সাতশত ঊনষাট টাকা দেখিয়ে সিডিউলে ঢুকিয়ে দেন। এবং এমপির দোহাই দিয়ে ওই প্রকল্পের সিডিউল বিক্রি না করে তার আজ্ঞাবাহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে টেন্ডারপ্রাপ্তি দেখিয়ে উক্ত টাকা আত্মসাৎ করেন। পৌরসভার নিজস্ব দুটি রোলার মেশিন রয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোলারের ভাড়া পে-অর্ডারের মাধ্যমে অগ্রিম জমা করে তবেই রোলার ব্যবহার করবেন। কিন্তু মেয়র নগদ অর্থ নিয়ে তা ভাড়া দিচ্ছেন। প্রতিদিনের দুইটি রোলারের ৪ হাজার টাকা ভাড়া হিসাবে মেয়াদকালীন সময়ে ছয়ত্রিশ লাখ টাকা পৌর তহবিলে জমা না করে তা আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগকারীরা হলেন প্যানেল মেয়র কবির হোসেন, কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন, রমজান আলী, দ্বীন ইসলাম, যদুনাথ ঋষি, জাহাঙ্গীর আলম, রশিদা বেগম, আবু ছায়েদ, রেহেনা খাতুন ও আবু হানিফ।
এ ব্যাপারে মেয়র মাঈনদ উদ্দিন মাঈনু তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা,কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করতে কোন কু-চক্রীমহল যড়যন্ত্র করছে। পৌরসভায় এ পর্যন্ত যা কিছু কাজ হয়েছে পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিয়ম নীতির মধ্য দিয়ে হয়েছে। কেন তারা এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ আনলেন অবগত নই,যদি আমি অন্যায় করে থাকি তাহলে তদন্ত হউক।
জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মেয়রের বিরুদ্ধে কাউন্সিলররা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে এককভাবে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। খুব দ্রুতই তদন্তের কাজ শুরু হবে। অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।