একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাই বদলে দিয়েছে একটি উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার মান
মিঠু সূত্রধর পলাশ,নবীনগর প্রতিনিধি:: প্রায় সারে পাঁচ লাখ জনসাধারনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির বেহাল দশার চিত্রটি একজন স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা যোগদানের মাত্র সারে আট মাসেই বদলে দিয়েছেন। তিনি হলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা.মো. সায়েমুল হুদা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকতে গিয়েই সুন্দর একটি ফুলের বাগান চোখে পরে। পাসেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুন্দর একটি দিঘি,যার চর্তুপাসেই পাকা ঘাটলা নির্মান,পুকুরের পাড় বালু ভরাট করে পুকুরের পারের দেওয়াল গুলিতে রং করে পরিপাটি করে রাখা হয়েছে। তার পাসেই আছে হাসপাতলের একটি মসজিদ, যার ভেতরে নতুন কার্পেট ও এসি স্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালটির ভিতরের পরিবেশ অনেক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। ভিতর ও বাহির সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রিত। আগের মতো হাসপাতালটির বাহির ও ভেতরে দালালদের আনাগোনা চোখে পরেনা। যেখানে আগে রোগিরা দালালদের যন্ত্রনায় অতিষ্ট ছিল। এখন একজন দালালকেও হাসপাতাল সিমানায় খোঁজে পাওয়া যায়না। বছরের পর বছর অবহেলায় পরে থাকা এমম্বুলেন্সটিও সচল করা হয়েছে। সাথে আরো একটি নতুন এম্বুলেন্স যোগ হয়েছে, যার প্রতি কিলোমিটার ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে ৩৩ টাকা।
সারা দেশের নেয় এখানে চিকিৎসক কম থাকা সত্ত্বেও দিন রাত নিরলস ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে এখানে কর্মরত ডাক্তার গণ। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎকদের সৃষ্টপদের সংখ্যা ১৮ জন। যেখানে বর্তমানে কর্মরত আছে মাত্র ৭জন। বাকি এগারো জন চিকিৎসকের পদই শূণ্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই কম সংখ্যক চিকিৎসক নিয়েও প্রতি মাসে বহিঃ বিভাগে প্রায় ৬হাজারের বেশি রোগী। অন্তঃ বিভাগে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সারে ছয়’শ এবং জরুরী বিভাগে ১২শ’র বেশি রোগী সেবা পাচ্ছেন এই কম সংখ্যক চিকিৎসক থাকা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
আরো জানা যায়, এখানে প্রতি মাসে নরমাল ডেলিবাড়ি হয় প্রায় ৩০-৪০ জন গর্ভবতী মায়ের। এছাড়াও প্রতি মাসে ৫ বছরের শিশুর প্রাপ্ত টিকার সংখ্যা ১২৬৯ জন। গর্ভবতী ও ২৫-৪৯ বছরের মহিলাদের মাসে টি,টি, টিকা প্রাপ্তির সংখ্যা ৪১১৬ জন।
এই হাসপাতালটির অধিনে ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে ৮টি। সেখানে মাসে চিকিৎসা প্রাপ্তীর রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪৯৮৯ জন। রয়েছে ৫৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক যেখানে মাসে ৩৬২৮৯ জন রোগী সেবা পাচ্ছেন।
যার ফলশ্রতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যে সেরা ও দেশের ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে সঠিক স্বাস্থ্য সেবা কাজের উন্নতিতে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১৫৬ নাম্বারে অবস্থান করছে।
এখানে সেবা নিতে আসা এলাকার জনপ্রতিনিধি মাউলানা মেহেদি হাসান জনান, ডা.সায়েমুল হুদা সাহেব যোগদানের পর থেকে এই হাসপাতালে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহ চিকিৎসার মান ভালো হয়েছ। সেবার মান বাড়াতে আরো চিকিৎসক দরকার। উপজেলার শাহপুর গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধা আমেনা বেগম জানান, এখানের বড় স্যার(ডা.মো সায়েমুল হুদা) অনেক ভালো মানুষ। আমারে অনেক যতœ কইরা দেহে(চিকিৎসা করে)আল্লা তারে বালা করুক।
আলোচিত উপজেলার স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা.মো সায়েমুল হুদা জানান, মাননীয় সাংসদ মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল মহোদয়ের আন্তরিক সহযোগীতায় আমি চেষ্টা করছি স্বাস্থ্য সেবায় পিছিয়ে পরা অবহেলিত এই জনপদের মানুষের জন্য কিছু করতে। চিকিৎসক সংকটের মধ্যেও কতটুকু সেবা দিতে পেরেছি সেটা সেবা গ্রহির্তাাই বিচার করবেন। জনগন কে আরো ভালো মানের সেবা দিতে সকলের সহযোগীতা চাই।