নবীনগরে নদী ভাঙ্গনে সর্বহারা অনেক পরিবার
অবশেষে মেঘনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের অপরাধে জরিমানা



মিঠু সূত্রধর পলাশ,নবীনগর থেকে: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও নরসিংদীর জেলা এই দুই এলাকার অমিমাংসিত সীমানা চিহ্নিতকরনের পর অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মেঘনা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে গত সোমবার বিকালে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এক ড্রেজারের মালিক কে ১,০০,০০০/- (একলক্ষ টাকা) জরিমানা করা হয়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জেপি দেওয়ান।
জানা যায়,নরসিংদীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে রায়পুরা উপজেলার জৈনক ব্যাক্তি ড্রেজারের মাধ্যমে মির্জাচর মেঘনা নদী থেকে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনের ইজারা নেয়। কিন্তু ওই ড্রেজার মালিক মেঘনা নদীতে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সীমানায় অনেক দিন যাবত অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করতে থাকলে এলাকার কিছু গ্রাম বিলিন হয়ে যায়।
অসহায় এলাকাবাসী বহু দিন যাবত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করলেও উপজেলার সীমানা জটিলতার কারনে এতদিন কিছুই করতে পারেনি। অবশেষে সীমানা চিহ্নিতকরনের পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাসুম ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) জেপি দেওয়ানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ড্রেজার,বোটসহ ৬ জনকে আটক করে। পরে নবীনগর সীমানায় আর বালু উত্তোলন করবেনা মর্মে মুছলেকা দিলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
উল্লেখ্য যে,এতদিনের দুই এলাকার অমিমাংসিত সীমানা ইসু ঘোচালেও, নরসিংদীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে রায়পুরা উপজেলার প্রভাবশালী মহলের ড্রেজারের মাধ্যমে মির্জাচর মেঘনা নদী থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ইজারা অনুমতি দেওয়ার ফলে উপজেলার চরলাপাং মৌজা সহ নদী ্্্এলাকার অনেক গ্রামে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে ।ইদানিং ভাঙ্গনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিপুর্বে চরলাপাং ও নবীপুর গ্রামের একটি বড় অংশনদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ৬টি মৌজা নিয়ে সৃষ্ট এ গ্রামটি তিনটি মৌজা ১,২,৩ সীটটি আগেই বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে চরলাপাং মৌজার ৪, ৫, ৬ নং সীটের মধ্যে কিছু অংশ গত রাতে বিলীন হয়ে গেছে বাকি অর্ধেকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। আরো প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙ্গন কবলের শিকারের মধ্যে আছে। বর্তমানে গ্রামের যে অংশটুকু ভাংগনে আশংকায় আছে সে সকল অংশের মানুষ তাদের বাড়ি ঘর সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এ ভাবে ড্রেজার দিয়ে সিন্ডিকেটে বালু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন করার ফলে মেঘনা নদী ঘেসা অনেক গ্রাম দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এবং সর্বহারা হচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।