নবীনগরের তিতাস ও বুড়ি নদীকে দূষণ মুক্ত করতে কাজ করছেন ইউএনও রাজীব চৌধুরী
মিঠু সূত্রধর পলাশ, নবীনগর প্রতিনি ধি: এক যুগ আগেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নদীপথ। তখন তিতাস ও বুড়ি নদী পানিতে ছিলো টইটম্বুর। বর্ষা মৌসুমে দু’কূল উপচে পানি খালবিল, মাঠঘাট, হাওড় বিলে গিয়ে পড়ত। বারো মাসই এলাকার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ছিল নৌযান। কিন্তু এখন ভরা বর্ষা মৌসুমেও সেই নদীতে পানি থাকে না বললেই চলে। পলি জমে কোথাও কোথাও ভরাট হয়ে গেছে। কোথাও আবার ধান চাষ হচ্ছে। হাট-বাজার ও বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে এক সময়ের প্রমত্তা তিতাস ও বুড়ি নদী এখন মরা খাল আর ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। একসময় দিনরাত তিতাস ও বুড়ি নদীতে উত্তাল ঢেউ আর জাহাজের সাইরেন শোনা গেলেও এখন এর অস্তিত্বই হারিয়ে যেতে বসেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সহ নবীনগর উপজেলায় উন্নয়নের নামে ফসলি জমি ও খাল-বিল দখল করে সড়ক,স্থাপনা, বসতবাড়ি,হোটেল ও ফল ব্যবসায়ীরা বজ্য ফেলার কারনে তিতাস ও বুড়ি নদী এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।
তিতাস ও বুড়ি নদীর এই দুর্দশা থেকে রক্ষা করতে নদী নিরাপত্তা সামাজিক সংগঠন “নোঙর” সহ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিয়েছেন। কাজের কাজ কিছু না হওয়ায় হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন অনেকেই।
তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী নবীনগর উপজেলায় যোগদান করার পর নবীনগর উপজেলা সহ নবীনগর পৌর প্রশাসকের দ্বায়িত্ব নেয়ার পর তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
যোগদানের মাত্র কয়েক মাসেই সামাজিক নানা ইস্যুতে কাজ করছেন তিনি। নবীনগর সদরের তিতাস ও বুড়ি নদীকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে তিনি এলাকার স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে, আবার কখনো একাই তিতাস ও বুড়ি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে যান। নবীনগর সদর বাজারের ঘুরে ঘুরে নদী রক্ষায় জনসচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরন করে বেহাল দশার চিত্র তুলে ধরছেন জাতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
সম্প্রতি ইউএনও রাজীব চৌধুরী কে দেখা যায়, নবীনগর পৌর সভার উদ্যোগে তিতাস ও বুড়ি নদীর পৌর সদরের শহর রক্ষা বাধে ফেলা ময়লা পরিস্কার করছেন। এবং নদীর পাড়ে জনসচেতনতামূলক ব্যনার টানিয়ে পৌর ডাস্টবিনে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার জন্য বিনীতভাবে আহ্বান জানাচ্ছেন।
স্থানীয় সূধি সমাজের নেতৃবৃন্দরা জানান, তিতাস ও বুড়ি নদীর নাব্যতা সংকটে যখন হারিয়ে যেতে বসেছে তখন ইউএনও রাজীব চৌধুরী সদরের শহর রক্ষা বাধের ময়লা আবর্জনা স্তূপ পরিস্কার করে বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রাম্যমান ডাস্টবিন স্থাপন করে সচেতনা মূলক লিফলেট বিতরণ করছেন। তিনি একাই দায়িত্ব নিয়ে নদী রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের উচিত ইউএনও রাজীব চৌধুরীর পাসে দাড়ানো।
এবিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রাজীব চৌধুরী বলেন, ‘নদী বাঁচলে নবীনগর বাঁচবে’ প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে নবীনগর পৌরসভার উদ্যোগে তিতাস নদীকে দূষণমুক্ত করতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তিতাস পাড়ের ময়লা প্রতিদিন পৌরসভার ডাম্পিং স্পটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নদী পাড়ে সরবরাহ করা হয়েছে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন। সচেতনতামূলক কার্যক্রম হিসেবে ব্যবসায়ীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেছি। বিভিন্ন জায়গায় তিতাসকে দূষণমুক্ত রাখতে সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙানো হয়েছে। তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষার কার্যক্রমকে টেকসই করতে নদীর পাড়ে স্থাপন করা হচ্ছে ১৬ টি সিসি ক্যামেরা। তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষায় আমরা নবীনগর উপজেলাসহ পৌরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
« ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে বৈষম্য-জুলুম থাকবে না, সুবিচার প্রতিষ্ঠা পাবে –অধ্যাপক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (পূর্বের সংবাদ)
(পরের সংবাদ) নবীনগরে মাদক সহ গ্রেপ্তার ১ »