নবীনগরে সমবায় সুপার মার্কেটের সামনে দোকান নির্মাণকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা
মিঠু সূত্রধর পলাশ,নবীনগর প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা সদরে অবস্থিত সমবায় সুপার মার্কেটের সামনের খালি জায়গায় দোকান নির্মাণকে কেন্দ্র করে দু’ পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দোকান নির্মাণের বিরোধীতা করে জায়গাটি উন্মুক্ত রাখার দাবিতে একটি পক্ষ সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে ‘মানববন্ধন’ করার ঘোষণা দিয়। আজ বুধবার স্থানয়ি নবীনগর জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে সিমানা নির্ধারণের মাপযোগের জন্য মার্কেটের ম্যাপ নিয়ে বিষয়টির সুরাহা করতে কয়েকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে মার্কেট নির্মানের পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম,উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামন মনির, পৌর মেয়র এড. শিব শংকর দাস,জেলা পরিষদ সদস্য বোরখান উদ্দিন,জেলা পরিষদ সদস্য অধ্যাপক নুরুনাহার বেগম,আওয়ামীলীগ নেতা নাছির উদ্দিন,খাইরুল আমিন, সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম সরকার,ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মাউলানা মেহেদি হাসান সহ আরো অনেকেই।
পরে সীমানা পিলার স্থাপনের কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি অমিমাংসিত রেখেই মার্কেট নির্মানের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে পরার্মশ দেন তারা।
জানা গেছে, সমবায় মার্কেটের সামনের ওই মূল্যবান খালি জায়গায় গত কয়েক মাস আগে দোকান নির্মাণের উদ্যোগ নেন মার্কেটটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্থানীয় বহুমুখী সমবায় সমিতি। কিন্তু জায়গাটি খালি রাখার দাবিতে ‘সর্বস্তরের জনসাধারণ’ এর ব্যানারে একটি পক্ষ এতে বাঁধা সৃষ্টি করেন। ফলে গত প্রায় ছয় মাস ধরে মার্কেটের সামনে দোকান নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে রয়েছে।
এ অবস্থায় সম্প্রতি স্থানীয় সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুল বিষয়টির সুরাহা করতে কয়েকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে নির্দেশ দেন। পরে সাংসদের নির্দেশে আওয়ামী লীগ নেতারা বসে সংখ্যাগরিষ্ঠতার মতামতের ভিত্তিতে মার্কেট কর্তৃপক্ষকে সম্প্রতি দোকান নির্মাণের সিদ্ধান্ত দিয়ে দেন।
এ অবস্থায় সমবায় মার্কেট কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি পুনরায় ওই খালি জায়গায় দোকান নির্মাণ করতে গেলে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পরিষদের অন্যতম সদস্য, স্থানীয় সলিমগঞ্জ কলেজের সহকারী অধ্যাপক নুরুন্নাহার বেগম জায়গাটি জেলা পরিষদের দাবি করে সেখানে দোকান নির্মাণ বন্ধ রাখার দাবিতে জেলা পরিষদে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন।
এ অবস্থায় জেলা পরিষদ থেকে গত ১৮ নভেম্বর এক চিঠিতে আগামী ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে মার্কেট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে মার্কেট কর্তৃপক্ষ দোকান নির্মাণের কাজ অব্যাহত রাখলে, গত ২০ নভেম্বর ইউএনও একরামুল ছিদ্দিকের নির্দেশে সেখানে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কাজ আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই মোবাইল কোর্টের পরও পুনরায় দোকান নির্মাণের কাজ অব্যাহত রাখা হলে প্রতিপক্ষ আজ ২২ নভেম্বর জায়গাটি উন্মুক্ত রাখার দাবিতে মার্কেটের সামনের কলেজ গেটে মানববন্ধনের ডাক দেন।
এ বিষয়ে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোক্তা সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘এখানে মার্কেট আগেই ছিল, যা সকলেই জানেন। আমরা শুধু দোকানদারদের অনুরোধে মার্কেটের সামনের অংশটি ভেঙে নতুন করে ওই জায়গায় আধুনিক মার্কেট নির্মাণ করব। এতে কেন আমাদেরকে বাধা দেওয়া হচ্ছে? আমরা জানি না।
জেলা পরিষদের সদস্য নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ‘এটি জেলা পরিষদের জায়গা। তাই আমরা জায়গাটি উন্মক্ত রেখে সেখানে ‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’ তৈরি করার দাবি জানিয়েছি। জেলা পরিষদের জায়গায় জীবন গেলেও, মার্কেট করতে দেব না। এর প্রতিবাদে আমরা সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে মানববন্ধন করব
এ বিষয়ে নবীনগর থানার ওসি আমিনুর রশীদ বলেন, ‘সব বন্ধ করে দিয়েছি। বিষয়টির মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত কানো পক্ষকেই মার্কেট নির্মাণ কিংবা মানববন্ধন করতে দেওয়া হবে না। এরপরও কেউ আইন ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।