সৌদি আরবে প্রবাসীদের জন্য স্থায়ী আবাস
বিল্লাল হোসেন, সৌদিআরব:: সৌদি আরব তার দেশের প্রবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য একটি “স্থায়ী আবাস” পদ্ধতি বিবেচনা করছে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানী তেলের অস্বাভাবিক দর পতনের কারণে তেল নির্ভরতা কমাতেই এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
“আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে, আগামীতে তেলের মুল্য ৭০ ডলার হলেও এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। (প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান ২৫/০৪/২০১৬ তারিখে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে একথা বলেন)”
দেশের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমেরিকার আদলে একটি গ্রিন কার্ড পদ্ধতি প্রবর্তনের চিন্তা করা হয়েছে। অন্য দিকে কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আয় বৃদ্ধিকল্পে বিভিন্ন এনার্জি ও কোমল পানীয়ের উপর মুল্য সংযোজন কর ও বিভিন্ন বিলাসী পণ্যের উপর কর আরোপের চিন্তা করছে। প্রবাসীদের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। এই প্রকল্প কার্যকর হলে প্রবাসী কর্মীদের দুঃসহ কফিল জীবনের অবসান হবে বলে মনে করেন তাদের কেউ কেউ। এতে করে সকল বৈধ অবৈধ শ্রমিককে কফিলের অনৈতিক মুনাফালোভি মানসিকতা থেকে রক্ষা করবে। সৌদি আরবের একটি স্থানীয় পত্রিকার বরাতে বলা হয় দেশের শ্রম বিষয়ক বিশেষ কমিটির প্রধান ‘নিদাল রিদওয়ান’ একটি স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ গঠন করে এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের আশা প্রকাশ করেন। এই পদ্ধতি সৌদি স্বরাষ্ট্র (জাওয়াযাত) ও শ্রম মন্ত্রনালয় এর সাথে সমন্বয় থাকবে। বর্তমানে একজন বিদেশী নাগরিক কেবলমাত্র সৌদি কফিল পদ্ধতি বা হজ্বের জন্য এই দেশে আসতে পারেন। নতুন এই পদ্ধতিতে দক্ষ কর্মীরা তাদের নিজের জিম্মাদারিতেই এখানে আসতে পারবে। এর দ্বারা বর্তমানের কাফালা পদ্ধতির অবসান ঘটবে বলে মনে করেন অনেকে।
সৌদি আরবে কর্মরত কিছু অভিবাসী বিশেষজ্ঞের মতে নতুন এই কার্ড পদ্ধতিতে প্রবাসীরা নিম্নের সুযোগ সুবিধা গুলো পেতে পারেন।
১. কাফালা পদ্ধতির বিলুপ্তি ঘটবে এবং কর্মী নিজেই তার স্পন্সর হবেন।
২. কর্মী এই দেশে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পাবেন, তাকে ইকামা মেয়াদ শেষ হওয়া বা মালিক কর্তৃক পলাতক বলে অভিযোগ করা থেকে মুক্তি পাবেন। স্থানীয় বা সৌদি নাগরিক ছাড়াই প্রবাসীরা এখানে সকল ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
৩. সরকারী হাসপাতাল সমূহে সৌদি নাগরিকদের মতো বিনামুল্যের চিকিৎসা সেবা পাবেন।
৪. প্রবাসীরা তাদের নির্ধারিত GOSI (সামাজিক নিরাপত্তা বীমার) প্রিমিয়াম দিলে অবসর কালীন ভাতা পাবেন।
৫. সৌদিদের মতো প্রবাসীরাও দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন যা আগে শুধুমাত্র সৌদি নাগরিকের জন্য নির্দিষ্ট ছিল।
৬. প্রবাসীরাও এখানে স্থাবর সম্পদের মালিক হতে পারবেন।
অনেক সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও নতুন পদ্ধতির গ্রিন কার্ড ধারীরা কিছু সুযোগ পাবেন না। তা হচ্ছে-
১. প্রবাসীরা এদেশে ভোটাধিকার পাবেন না।
২. তারা এদেশের রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক বা অংশের মালিক হতে পারবেন না।
৩. তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য দেশের বাহিরে অবস্থান করতে পারবেন না।
৪. তারা রাষ্ট্রের সামরিক বাহিনির সাথে সম্পর্কিত হতে পারবেন না।
তথ্য সূত্রঃ সৌদি গেজেট