ভাষা আন্দোলন মানুষের মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করেছে–ত্রিপুরার ডেপুটি স্পীকার পবিত্র কর
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের প্রয়াত তথ্য-সংস্কৃতি-উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী ও বিশিষ্ট কবি অনিল সরকারের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষনার অনেক আগ থেকেই মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আগরতলা সহ বিভিন্ন স্থানে মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।ইউনেস্কো কর্তৃক একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভষা দিবস হিসাবে ঘোষনার পর ত্রিপুরা রাজ্যের সর্বত্র ভাষা আন্দোলনকে স্মরণে রেখে একুশে উদযাপিত হয়ে আসছে ব্যাপকভাবে।আগরতলা পুর নিগমের আওতাধীন খয়েরপুর চানপুর একতা সংস্থার আয়োজনে এ দিবসটি বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হয়ে আসছে গত কয়েক বছর ধরে।এ বছরও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ৫ কিলোমিটার হেঁটে প্রভাত ফেরী সহ দিনব্যাপী কর্মসূচী পালন করে সংগঠনের কর্মীরা।গত রোববার সকাল ৭ টায় খয়েরপুর নতুন বাজার এলাকায় একতা সংস্থার সভাপতি আশিষ দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক অরুনাভ ঘোষের সমন্বয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পরিচালক মো.মনির হোসেন এর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রভাত ফেরী।এসময় কয়েকশত স্কুল শিক্ষার্থী,নানা বয়সী নারী-পুরুষ প্রভাত ফেরীতে অংশ নেয়।শিক্ষার্থীরা নানা রকম সাজ-সজ্জায় নেচে-গেয়ে মাতিয়ে রাখেন।প্রভাত ফেরীটি আগরতলা-আসাম মাহসড়ক দিয়ে যাবার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে শতশত মানুষ তাদের অভিনন্দন জানায়।পথে পথে বিজয় সংঘ,অরবিন্দ সংঘ,ফরওয়ার্ড,রেশম বাগান এ্যাথলেটিক ক্লাবের কর্মীরা প্রভাত ফেরীতে অংশ নেয়া সকলকে বিস্কিট,চকোলেট,জল দিয়ে আপ্যায়িত করেন।প্রভাত ফেরী চলাকালে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর গীতা দেব লোধ,আবৃত্তিশিল্পি মো.মনির হোসেন,বাছির দুলাল,কবি পার্থ ঘোষ,ছাত্র নেতা রাজিব ঘোষ,রাকেশ ঘোষ আবৃত্তি,আলোচনায় একুশের মাহাত্ম,ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেন।দুপুরে ক্লাব প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় বসে আঁকো প্রতিযোগীতা।বিকালে এলাকার বিশিষ্ট কৃষক নেতা সুনিল সূত্রধরের সভাপতিত্বে ও রাকেশ ঘোষের পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন ত্রিপুরা বিধান সভার ডেপুটি স্পীকার পবিত্র কর।বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর কাউন্সিলর গীতা দেব লোধ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিতাস আবৃত্তি সংগঠন পরিচালক মো.মনির হোসেন,তিতাস সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ উপদেষ্টা দীপক চৌধুরী বাপ্পী,সম্পাদক বাছির দুলাল।মঞ্চে সংগঠনের পক্ষ থেকে অতিথিদের ফুলের তোড়া ও উত্তরীয় পরিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।এসময় পবিত্র কর বলেন,বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন পৃথিবীর সকল ভাষার মানুষকে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।ভাষা আন্দোলন বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী চেতনাকে প্রতিষ্ঠিত ও শক্তিশালী করেছে।এ ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাংলা ভাষা ভিত্তিক এক জাতি রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে।আজ বিশ্বব্যাপী মহান একুশেকে নিয়েই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে যা বাঙ্গালী হিসাবে আমাদের গর্বের।পরে মঞ্চে নৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।