জঙ্গি মুসাকে জেরা করতে ঢাকার গোয়েন্দারা শহরে
ডেস্ক ২৪:: বর্ধমান থেকে ধৃত আইএস জঙ্গি মুসার বিরুদ্ধে গুলশানের অর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় জড়িত থাকার নির্দিষ্ট তথ্য হাতে নিয়েই রাজ্যে এল ঢাকা পুলিশ। সোমবার রাতেই তারা শহরে এসে পৌঁছেছে। এই জঙ্গি হামলার পিছনে কারা রয়েছে এবং কোথায় বসে সেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা মুসাকে জেরা করে জানতে চায় তারা। একইসঙ্গে আইএসের বাংলাভাষী ইউনিটের কে কে সিরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, সে বিষয়েও তার থেকে তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তারা। তদন্তকারী দলে রয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সদস্যসহ র্যাব ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধিরা।
আইএস জঙ্গি মুসাকে জেরা করে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) অফিসাররা জানতে পারেন, বাংলাদেশের আইএসের বাংলাভাষী ইউনিটের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আসা টাকাতেই এরাজ্যে সংগঠনকে জোরদার করার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে মুসা। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের গুলশানের হামলায় যারা জড়িত, তাদের সে চিনত। একাধিকবার কথাও হয়েছে। তারা কোথায় কোথায় নাশকতা চালাবে, সে বিষয়ে এনআইএ নির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে।
জানা গিয়েছে, আইএসের বাংলাভাষী ইউনিটের মাথা সুলেমান তার বীরভূমের বাড়িতে এসে থেকে গিয়েছে। তার নির্দেশেই আইএসের ভাবধারায় তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি সংগঠনকে প্রসারিত করার দায়িত্ব পেয়েছিল মুসা। এনআইএ’র তরফে এই তথ্য ঢাকাকে জানানো হয়। তার ভিত্তিতে গুলশান হামলায় ধৃত জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, মুসাকে তারা চিনত। তাদের সঙ্গে একাধিকবার কথাও হয়েছে। গুলশানে জঙ্গি হামলার বিষয় নিয়ে দু’দেশের সীমান্ত এলাকায় আইএসের বাংলাভাষী ইউনিট যে বৈঠক করেছিল, সেখানে হাজির ছিল মুসা। ওই বৈঠকে নেতৃত্ব দেয় সুলেমান। জঙ্গিদের কাছে টাকা, আগ্নেয়াস্ত্রসহ লজিস্টিক সাপোর্টের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার অন্যতম মূল চক্রী সুলেমান এরাজ্যে এসে মুসার বাড়িতে থেকে দুই বাংলার আইএস জঙ্গিদের মধ্যে সম্বন্বয় রাখার দায়িত্ব দিয়ে যায় তাকে। এরপরই বাংলাদেশের তদন্তকারী অফিসাররা এনআইএ’র সঙ্গে কথা বলে ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন। সেইমতো তাঁরা সোমবার শহরে আসেন। মঙ্গলবার তাঁরা এনআইএ’র দপ্তরে হাজির হন।
বর্তমানে মুসা জেল হেপাজতে রয়েছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দারা যাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন, সেজন্য এনআইএ’র তরফে এদিন নগর দায়রা আদালতে মুসার পুলিশি হেপাজত চেয়ে আবেদন জানানো হয়। এনআইএ’র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ বলেন, নির্দিষ্ট নথি ও যোগসূত্র মিলছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেপাজতে চাওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। যদিও মুসার আইনজীবী অমলেন্দু সরকার এর বিরোধিতা করে বলেন, দীর্ঘদিন মুসা পুলিশি হেপাজতে ছিল। আবার তাকে পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ল কেন? এনআইএ’কে তার কারণ জানাতে হবে।
এদিকে, প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে পুলিশ আসার খবর পাওয়ার পরই মুসা এদিন আদালতে প্রশ্ন তোলে, এর মধ্যে আবার বাংলাদেশের পুলিশ কেন? সে আর এনআইএ’র হেপাজতে যেতে চায় না। দরকারে তাকে ফাঁসিতে লটকে দেওয়া হোক। এমনকী আইএস জঙ্গির স্ত্রীও আদালতের কাছে আরজি জানায়, এনআইএ’র হেপাজতে মুসাকে না দেওয়ার জন্য।