কানাডীয় তামিম চৌধুরী কি আইএস বাংলা প্রধান আবু ইব্রাহিম ?
বিশেষ প্রতিবেদন: ঢাকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পরই www.brahmanbaria24com–এ প্রকাশিত হয় ‘গুলশনে হামলার নেপথ্যে আবু ইব্রাহিম?’ প্রতিবেদনটি৷ বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও ঢাকা মহানগর পুলিশের দেওয়া তথ্যে এবার ইঙ্গিত মিলছে কানাডীয়-বাংলাদেশী নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরী হল আবু ইব্রাহিম৷ তারই পরিকল্পনায় একের পর এক নাশকতা হচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে৷ ঢাকার কল্যাণপুরে ‘জাহাজবাড়ি’ বলে পরিচিত বহুতলে জঙ্গি ঘাঁটিতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তামিম চৌধুরীর৷ জাহাজবাড়িতে ধৃত জঙ্গি রাকিবুল হাসান পুলিশি জেরায় এ কথা জানিয়েছে৷
জঙ্গি ঘাঁটি জাহাজবাড়ি
ঢাকা মহানগর পুলিশের দেওয়া তথ্য,অপারেশন স্টর্ম ২৬ চলাকালীন নিরাপত্তারক্ষী ও জঙ্গিদের মধ্যে গুলির লড়াইয়ে নিহত হয় ৯ জঙ্গি৷ অন্তত ৮ জন পালিয়েছে৷ পুলিশের ধারণা, বেঁচে যাওয়া জঙ্গিদের কোনও ‘সেফ হাউসে’ রেখে দিয়েছে তামিম আহমেদ চৌধুরী৷ তার নির্দেশে পরবর্তী নাশকতার পরিকল্পনা চলছে৷ বাংলাদেশ সন্ত্রাস দমন শাখা (কাউন্টার টেররিজম ইউনিট)-এর প্রধান মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জঙ্গি সংগঠন জেএমবি (জামাত উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-র একাংশ আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের হয়ে নাশকতা চালাচ্ছে৷ এই গ্রুপের শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী৷ বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরী দেশে ফিরেছে৷ আত্মগোপন করে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিচ্ছে সে।
কে এই আবু ইব্রাহিম ওরফে তামিম চৌধুরী ?
ইসলামিক স্টেটের বাংলাদেশ প্রধান শেখ আবু ইব্রাহিমের অপর নাম হানিফ৷ আবার কানাডার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, আবু ইব্রাহিমের আসল নাম তামিম চৌধুরী। সে কানাডাবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক। কানাডার উইন্ডসর শহরে থাকত৷ জানা গিয়েছে,কানাডায় থাকাকালীন পুলিশি হয়রানির অভিযোগ তুলে তামিম বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছিল৷ তারপরেই সরাসরি আইএসের হয়ে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করতে থাকে৷ লেবানন থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্রেও একই দাবি করা হয়েছে৷
সিলেটের বাসিন্দা তামিম চৌধুরী:
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বড়গ্রামের বাসিন্দা তামিম আহমেদ চৌধুরী৷ তবে তামিম কখনো বিয়ানীবাজারের বাড়িতে আসেনি৷ তার জন্ম কানাডায় জন্ম৷ সেখানেই বেড়ে ওঠা। তামিম বিবাহিত৷ তিন সন্তানের বাবা। আত্মীয়দের সাথে তেমন সম্পর্ক নেই।
ইসলামিক স্টেটের দাবি:
তামিম ওরফে আবু ইব্রাহিমের নির্দেশে আইএসের বাংলাদেশ শাখা ভারত ও মায়ানমারে নাশকতা চালাবে৷ আইএস মুখপত্র বলে পরিচিত ‘দাবিক’ ম্যাগাজিনের ১৪ তম সংখ্যায় এমনই দাবি করা হয়েছিল৷ তারপরেই ঢাকার গুলশনে ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় পরপর হামলা হয়৷ পত্রিকায় বলা হয়েছিল বাংলাদেশ সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ, অসম-মেঘালয়ের কিছু অংশ, ত্রিপুরা ও মায়ানমারের কিছু অংশ নিয়ে এক জঙ্গি বাংলা প্রদেশ তৈরি করা হবে৷ কট্টর ইসলামি আদর্শই হবে এই রাষ্ট্রের আদর্শ৷ সেই প্রস্তুতি শুরু করেছে আইএসের বাংলাদেশ শাখার প্রধান আবু ইব্রাহিম ওরফে তামিম চৌধুরী৷
বাংলাদেশ গোয়েন্দা গোয়েন্দা মহলের একাংশের ধারণা, গুলশন ও কিশোরগঞ্জে হামলার পরই সীমান্ত পার করে ভারতের কোনও একটি অঞ্চলে ঘাঁটি গেড়েছিল তামিম ওরফে আবু ইব্রাহিম৷ পরে সে আবার ফিরে এসেছে বাংলাদেশে৷ ঢাকার কল্যাণপুরের জাহাজবাড়িতে তার যাতায়াতের প্রমাণ এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে৷ মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি তামিম চৌধুরীর খোঁজে চলছে বিশেষ অনুসন্ধান৷