মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেওয়ায় সরাইল থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেওয়ায় পত্রিকার এক হকার তার বৃদ্ধ পিতা ও দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলায় ওই হকার তার বৃদ্ধ পিতা ও দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা ও সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্র জানায়,সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুট্টাপাড়া গ্রামের শামিম মিয়ার বাড়িতে তিন মাস ধরে নয়ন তারা (৩৫) নামের এক নারী ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ তিনি সরাইল বিশ্বরোড মোড়ের আশপাশে কয়েক বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। তিনি একজন মাদক ব্যবসায়ী। এ জন্য তিনি ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে থাকেন। গত ১২ ফেব্র“য়ারি শামিম মিয়ার প্রতিবেশী ইমান আলীর (৫৫) ছেলে আমীর আলীসহ (১৮) কয়েকজন কিশোর-যুবক নয়নতারাকে ওই এলাকায় থেকে মাদক ব্যবসা করতে বারণ করেন। তারা নয়নতারার মাদক ব্যবসা নিয়ে নানা কটুক্তিও করেন। এ ঘটনার পরদিন ইমান আলী, তার তিন ছেলে মারুফ মিয়া (৩৫),আরব আলী (৩০) ও আমীর আলীর বিরুদ্ধে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সরাইল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা না পেয়ে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর পর ১৬ মার্চ নয়নতারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দয়েরের আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে ২১ মার্চ সরাইল থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলায় ওই চার জনকেই আসামি করা হয়। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ইমান আলী তাঁর ছেলে আমীর আলীর জন্য নয়নতারার এক কিশোরী (১৪) কন্যার বিয়ের প্রস্তাব দেন। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আমীর আলী ওই কিশোরীকে বেশ কয়েক দিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ১৪ মার্চ রাত নয়টার দিকে আমীর আলী ওই কিশোরীকে ধর্ষনের চেষ্টা করে। এ সময় আমীর আলী ওই কিশোরীকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। মামলায় ইমান আলী ও তাঁর অপর দুই ছেলেকে আমীর আলীর সহায়তাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইমান আলী বলেন,‘আমরা নিরিহ মানুষ, আমার ছেলেরা দিন রাত কাম-কাইজ নিয়া ব্যস্থ তাহে। অহন সবাই সারা দিন দৌড়ের মধ্যে আছি, ছেলেরা কোনো কাজ করতে ফারে না।’ শামীম মিয়া বলেন,‘ওই মহিলা অসহায় সেজে মিথ্যা কথা বলে বাড়ি ভাড়া নিছে। অহন ভাড়া দেই না উঠাতেও পারি না। বাড়ি ছাড়ার কথা বল্লেই নানা হুমকি ধমকি দেয়।’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মো.শহিদুল ইসলাম বলেন,নয়নতারা কয়েক মাস আগে জেলখানা থেকে ছাড়া পেয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে সদর থানায় মামলা রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে ইমান আলী ও তাঁর ছেলেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি উদ্দেশ্যমূলক।, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আলী আরশাদ বলেন,‘ মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’