ভারতীয় চাল নিয়ে ১টি জাহাজ আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরে পৌছেছে ॥ চাল আজ যাবে ত্রিপুরায়
শামীম উন বাছির::ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার মাসুলবিহীন ২৫ হাজার মেট্রিকটন খাদ্যপণের প্রথম চালান নিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে প্রায় ১ হাজার মেট্রিকটনের একটি জাহাজ আশুগঞ্জ বন্দরে নোঙ্গর করেছে। আজ রবিবার সকাল থেকে আশুগঞ্জ বন্দরে জাহাজ থেকে পন্য খালাশ করে সড়ক পথে ট্রাকে করে এ পন্য পরিবহন শুরু হবে। ভারতের কলকাতার বজবজ জেটি থেকে এসব চাল ত্রিপুরা রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের ৩৫০ কিলোমিটার নৌ-পথ ও ৪৫ কিলোমিটার স্থলপথ ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধুমাত্র আশুগঞ্জ বন্দরের জাহাজের পাকিং চার্জ প্রতি মেট্রিক টনে ৩০ টাকা ছাড়া এসব পন্য থেকে আর কোন প্রকার মাসুল পাচ্ছে না বাংলাদেশ সরকার।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালের নৌ-প্রটোকল চুক্তির আওতায় বিশেষ মানবিক কারণে মাসুলবিহীন এবার ২৫ হাজার মেট্রিকটন খাদ্যপন্য যাচ্ছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। গত ১৬ মার্চ অক্টোবর কলকাতার বজবজ জেটি থেকে আশুগঞ্জ নৌবন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে এসে প্রথম দফায় শনিবার বিকেলে নৌ-পথে বাংলাদেশী জাহাজ ৯শ ৩৭.০৫ মেট্রিক টন চাল নিয়ে এমভি নিউটেক-৬ আশুগঞ্জ আন্তজার্তিক নৌ-বন্দরে এসে পৌছেছে। কলকাতার বজবজ জেটি থেকে এবার চাল সরবারহ কাজ পেয়েছে বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আন বিজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের জাহাজ। আশুগঞ্জ বন্দর পরিদর্শক মোঃ শাহ আলম জানান, শুধু মাত্র বন্দরের ল্যান্ডিং চার্জ ব্যতিত এসব পন্য থেকে কোন মাসুল নেয়া হচ্ছে না। আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রার্প্ত কর্মকর্তা আবু জাফর জানান, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া চেকপোস্ট পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়কে ভারতীয় চাল পরিবহনকারী কাভার্ড ভ্যানগুলোর প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার মোঃ আহসান উল্লাহ জানিয়েছেন, ভারতের সাথে ট্রান্সসিপমেন্ট চুক্তির আওতায় ২৫ হাজার মেট্রিক টনের প্রথম চালান আশুগঞ্জ বন্দরে এসে পৌছেছে। তবে এস মালামাল থেকে কোন প্রকার মাসুল নেয়া হচ্ছে না। কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এসব চাল আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ত্রিপুরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে আখাউড়ার গৌহাটি ও মেঘালয়ের শিলং হয়ে ত্রিপুরায় যেতে ১৫ শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। তাই ভারতের অনুরোধে মানবিক কারণে কোন শুল্ক ছাড়াই ২৫ হাজার টন চাল বাংলাদেশের উপর দিয়ে ত্রিপুরায় নেয়ার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গত বছরে আগস্ট মাসে একই ভাবে মানবিক কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে দুই দফায় ১০ হাজার টন চাল আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে সড়ক পথে কাভার্ড ব্যানে করে আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে ভারতের আগরতলায় নিয়েছে।
মানবিক বিবেচনায় ভারতকে বিনা মাশুলে পণ্য পরিবহন বা ট্রান্সশিপমেন্ট দেয়ার ঘটনা এটি প্রথম নয়। এর আগে বাংলাদেশের নদীপথ ব্যবহার করে ২০১২ সালে ত্রিপুরায় পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভারত যাবতীয় ভারী বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছিল এই আশুগঞ্জ দিয়ে। এ জন্য গত বছরের আগষ্টে মাসে দু-দফায় ১০হাজার মেট্রিক টন খাদ্য পন্য আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে সড়ক পথে কাভার্ড ভ্যানে করে আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়ে ছিল।