শের সব জেলার কওমী মাদরাসাগুলোকে নজরে রাখা দরকার
ডেস্ক ২৪:: চট্টগামে এক কওমী মাদরাসায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও বোমা বানানোর সরঞ্জাম পাওয়ায় দেশের সব জেলার কওমী মাদরাসাগুলোকে নজরে রাখা দরকার বলে সংসদে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এক একটি উপজেলায় ১০-১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় হলেও সেখানে ব্যাঙের ছাতার মত কওমী মাদরাসা গড়ে উঠেছে। সেখানে কি ধরনের লেখাপড়া হচ্ছে, কারা পড়াশুনো করে এসব বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের খোঁজ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার সংসদে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের অনুপস্থিতিতে তার প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড নিয়ে কিছু কিছু কওমী মাদরাসাকে দায়ী করে সংসদে এমপিদের পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কের একথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী।
কামরুল ইসলাম বলেন, কওমী মাদরাসার সবগুলো জঙ্গি তৈরির কারখানা এই কথাটা আমি বলব না। কিন্তু কিছু কিছু কওমী মাদরাসায় এই জঙ্গিদের ট্রেনিং দেয়া হয়। এমনকি যারা জঙ্গি তাদের মধ্যে অনেকে আবার ও-লেভেলে ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্র-শিক্ষকরাও আছেন।
এ সময় এর প্রতিবাদ করেন তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী। তিনি বলেন, শুধু কওমী মাদরাসা নিয়ে কথা উঠছে কেন। যারা অপরাধ করে তারা অপরাধী। তা সে যেই মাদরাসার ছাত্র হোক বা যেকোনো স্কুল কলেজের ছাত্র হোক। সে অপরাধী, তাই অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না। কিন্তু যদি শুধু কওমী মাদরাসা নিয়ে এত কড়াকড়ি করা হয় তা হলে জনগণের মনে এক বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। যা বুমেরাং হয়ে সরকারের দিকে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ প্রশ্ন করতে উঠে বলেন, কার প্রশ্ন কাকে করবো। প্রশ্ন শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আর উত্তর দিচ্ছেন খাদ্যমন্ত্রী। এর কোন মানে হয়? এখানে কেউ নোট নেয় না। তারপরেও ঢালাওভাবে কওমী মাদরাসার উপর দোষ দেয়া ঠিক না। এরপরও মন্ত্রী সংসদে বলেছেন কওমী মাদরাসার বিষয়ে, একমাত্র কওমী মাদরাসায় মাদক সেবন হয় না। অন্যত্রও হয়।
হাজি মো. সেলিম বলেন, কিছু কিছু কওমী-মাদরাসার কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারের বদনাম হতে হয়? কোনো কোনো জায়গায় নতুন কওমী মাদরাসা হয়ে যাচ্ছে। এইটাতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে কি না? যত কওমী মাদ্রাসা আছে সেগুলোকে সরকারের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত করা যায় কি না?
এসময় সংসদ অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য যে প্রশ্নটি করলেন এটি জাতীয় ইস্যু। তিনি একটি বিরাট সেনসেটিভ প্রশ্নের উত্তর দিতে বলেছেন। এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া অত্যন্ত দুরহ। চিন্তা-ভাবনা করে উত্তর দিতে হয়। আসলে সরকার কওমী মাদরাসাগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। কওমী মাদরাসার জন্য একটি বোর্ড বা কমিটিও করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সংসদ সদস্যদের এলাকায় কওমী মাদরাসা কতগুলো বৃদ্ধি পেয়েছে? কিভাবে এগুলোতে লেখাপড়া হচ্ছে? সেখানে যে সমস্ত হুজুররা আছেন বা সেখানে তারা কি পরিবেশে কি করছে না করছে-এ ব্যাপারে তাদের দৃষ্টি রাখা উচিত।
এছাড়াও অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সন্তানরা মাদরাসায় পড়ুক বা ও-লেভেল এবং এ লেভেলে পড়ুক। যেইখানেই পড়ুক অভিভাবক হিসেবে তাদের সন্তানরা কোন পথে যাচ্ছে। সবাই যদি সচেষ্ট হই তাহলে এই ভাবে তারা জঙ্গি হতে পারে না। সরকারও নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। সবার সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে এই সমস্যার সমাধান করতে পারব।