হিন্দু পরিবারের জমি-জায়গার আম-মোক্তার নামা দলিল বাতিল ; গ্রহিতাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী,কসবা প্রতিনিধি :: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বাদল কর্মকার নামে এক হিন্দু পরিবারের জায়গা দখলের বিষয়কে কেন্দ্র করে মামলা হামলা,বাড়িঘর ভাংচুর, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, রক্তাক্ত জখমসহ সংবাদ সম্মেলনও করা হয়েছিল। আর এই জায়গা দখলের অভিযোগ একই এলাকার পৌর মেয়রের ভাগ্নেদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের সহ একাধিক মামলা পর্যায়ক্রমে আদালতে বিচার চলমান রয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা যায়। অভিযোগকারীরা হলেন হিন্দু পরিবারের ছেলে কার্তিক চন্দ্র কর্মকার, গৌরাঙ্গ রায় কর্মকার ও নিতাই চন্দ্র কর্মকার এই তিন ভাই । এই হিন্দু পরিবারের জায়গা রক্ষাবেক্ষণসহ ভালমন্দ সুবিধা অসুবিধা সহ যাবতীয় পরিচালনার জন্য ব্যাপক ক্ষমতা সম্পন্ন আম-মোক্তার নামা দলিল মূলে গ্রহিতা হিসেবে (সম্পওির মালিক) যত্নবান হন মোঃ গেদু মিয়া,পিতা-মোঃআব্দুর রহিম (মানিক মিয়া), সাং-খারপাড়া, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
এদিকে, উক্ত সম্পদের আম-মোক্তার নামা দলিল মূলে গ্রহিতা মোঃ গেদু মিয়া ও কার্তিক চন্দ্র কর্মকারসহ মূল বিবাদী দুই জন ও সাব-রেজিস্টার কসবাকে মোকাবেলা বিবাদী করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ইং মোকাম কসবা সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে দেওয়ানী মোকাদ্দমা নং-১৩/২০১৫ দায়ের করেছে ঐ আম-মোক্তা দলিল প্রদানকারী তিন অংশীদারীদের মধ্যে দুইজন তথা গৌরাঙ্গ রায় কর্মকার ও তাঁর ভাই নিতাই চন্দ্র কর্মকার।
আদেশনামায় উল্লেখ্য আছে, কোন মূল বিবাদীগণের প্রতি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আদেশ প্রদান করা হবে না । তাহা অত্র নোটিশ প্রাপ্তির ১৫(পনের) দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদানসহ ১-২নং (গেদু মিয়া ও কার্তিক চন্দ্র কর্মকারকে) মূল বিবাদীগনকে আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত নালিশা ১ম তপছিলোক্ত ভূমিতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন আদালত। এই নিয়ে সারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত পাড়াসহ জেলা ও কসবায় ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে বলে জানা যায়। আদালতের মামলা ও সাব-রেজিস্টার এর কাছে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১০৬/১৪.১৫ মোকাদ্দমা মূলে কসবা মৌজা ১৬৩১/১৬৩২/১৩৩৩ দাগে ৩৮ শতাংশ এবং ১০৫/১৪.১৫ মোকাদ্দমা মূলে কালিকাপুর মৌজা ১/.২০০ দাগে ৬২ শতাংশ জায়গা নাম জারী খারিজী মোকদ্দমা মূলে মালিক হয়ে ভোগ দখলে আছেন গৌরাঙ্গ রায় কর্মকার গং-রা। সম্পওি রক্ষারবক্ষণ করার জন্য গত ১/০১/২০১৫ইং রেজিষ্ট্রিকৃত ১৫৬ নং আম মোক্তার নামা দলিল মূলে গৌরাঙ্গ রায় কর্মকার গংদের পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করিবে মোঃ গেদু মিযা। কিন্ত এই দিকে ব্যাপক ক্ষমতা সম্পন্ন আম-মোক্তার নামা দলিল মূলে মালিক যত্নবান মোঃ গেদু মিয়া ও কার্তিক চন্দ্র কর্মকারকে সাথে নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ইং তারিখে কসবা মৌজা মোঃ ২৫শতক নাল ও মৌজা কালিকাপুরস্থিত মোঃ ৫ শতক বাড়ি ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ৩৯ লাখ টাকা নিয়ে রেজিষ্ট্রিকৃত বায়না পত্র দলিল নং ৭৬৯/১৫ইং প্রদান করে। গৌরাঙ্গ রায় কর্মকার গংদের টাকা ,সম্পিওির সম্পূর্ণ আত্বসাৎ করার প্রচেষ্টা সহ আম-মোক্তার নামা ও বায়না পত্র দলিল বাতিল করতে এবং দায়েরকৃত দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-১৩/২০১৫ইং দাখিলকৃত এজাহারের বর্ণিত বিষয়াদি ন্যায় বিচার পেতে আদালতের কাছে সুবিচার প্রার্থনা করেন মামলার বাদী গৌরাঙ্গ রায় কর্মকার গং-রা।
এ ব্যাপারে সম্পওির রক্ষণাবেক্ষণকারী ও বর্তমানে ব্যাপক ক্ষমতা সম্পন্ন আম-মোক্তার নামা দলিল গ্রহিতা মোঃ গেদু মিয়া জানান, আমি আইনগত ক্ষমতা যত্নবান হয়েই তাদের একমতের ভিওিতে জমি ও বাড়ির অংশ বিক্রি ও বিক্রির বায়না পত্র দলিল প্রদান করেছি এবং বিক্রিত ৩৯ লাখ টাকা কার্তিক,গৌরাঙ্গ ও নিতাই উপস্থিত হয়ে টাকা পাপ্য হিসেব বুঝিয়া নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কসবা সাব-রেজিস্ট্রার মোঃসহিবুর রহমান প্রধান জানান, এই জায়গাটির বিষয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ইং গৌরাঙ্গ রায় কর্মকার আমার নিকট একটি আবেদন করেন এবং আদালতে দেওয়ানী মোকাদ্দমা নং-১৩/২০১৫ আদেশ কপি পেয়েছেন। তিনি আরো জানান, আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে বা মন্তব্য করতে পারি না কারন এটি বিজ্ঞ আদালতের ব্যাপার। এক কথা আদালতের ফায়সালা ছাড়া কিছুই করা সভম্ব হবে না বলে তিনি জানান।
অপরদিকে জেলা আদালতের একজন সিনিয়র আইজীবি বলেন, ব্যাপক ক্ষমতা সম্পন্ন আম-মোক্তার নামা রেজিস্টার দলিল মূলে মালিক হয়ে উক্ত সম্পদ বিক্রিয় মূলে বায়না পত্র দলিল করার ক্ষমতাবান হওয়ার যোগ্যতা রাখে। তবে বর্তমানে আদালত ছাড়া আম-মোক্তার নামা দলিলের ক্ষমতা বিনষ্ট করার কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্টানের অধিকার খর্ব করতে পারে না বলে সিনিয়র উকিল নাম প্রকাশ না করার সত্বে আমাদের জানান।
-সঞ্জয়