কসবায় দলিল জালিয়াতির অভিযোগ : সাব-রেজিষ্ট্রারসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ
প্রতিনিধি:: দলিল জালিয়াতির অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা হয়েছে। বিজ্ঞ দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ কাওছার এক আদেশে ন্যূনপক্ষে সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত পূর্বক আগামি ৫ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
নালিশের বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসির মিয়া ও অসীম কুমার বর্ধন জানায়, কসবার সৈয়দাবাদ গ্রামের মৃত আবুল কায়েছ ভূঁইয়ার পুত্র মো. গোলাম সারওয়ার বাদি হয়ে গত ২৭ জানুয়ারি এই মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বিজ্ঞ আদালত গতকাল বুধবার এ আদেশ প্রকাশ করেন।
মামলার বিবাদিরা হলেন- কসবা উপজেলার সাব-রেজিষ্ট্রার সহিবুর রহমান প্রধান, সৈয়দাবাদ গ্রামের মৃত আওয়াল ভূঁইয়ার পুত্র মো. রায়হান ভূঁইয়া (২৬), জাকির হোসেন প্রকাশ সোহেল (৩০), রাকিব ভূঁইয়া (২৪), মো. আমির হোসেন ভূঁইয়া (২০) ও কন্যা মোছা. সামিয়া আক্তার (২০) এবং একই গ্রামের মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর পুত্র সুমন চৌধুরী (২৫), আব্দুল করিম মৃধার পুত্র মোমেন মৃধা (৩০), আড়াইবাড়ি গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র শাহীন (২৮), মজলিশপুর গ্রামের ফিরোজ মিয়ার পুত্র মহসীন (৪০) ও দলিল লেখক মো. নজরুল ইসলাম (৪৫)।
বাদি মো. গোলাম সারওয়ার দাবি করেন, ২০০৫ সালের ২১ আগস্ট আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী হাসেনা মালেক থেকে খরিদ সূত্রে ৫২৬৪ নম্বর সাব-কবলা দলিল মূলে মালিক সত্ববান হয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ভোগ-দখল করে আসছেন। বাদির অভিযোগ, বিবাদি মো. রায়হান ভ’ঁইয়া অপরাপর বিবাদিদের যোগসাজশে নালিশা ভূমি গ্রাসের হীন উদ্দেশ্যে বাদি গোলাম সারওয়ারের বদলে ভূয়া দাতা সাজিয়ে ভূয়া পরিচয়পত্র, ছবি ও খারিজা খতিয়ান জাল করে ভূয়া আমমোক্তার নামা দলিল তৈরি করে। (আম মোক্তারনামা দলিল নম্বর- ৮২৩৮/তারিখ-২২ ডিসেম্বর ২০১৪)
কথিত আমমোক্তার নামা দলিল মূলে বিবাদি রায়হান ভূঁইয়া উল্লিখিত ভূমির মালিক সেজে এর এক সপ্তাহ পরই তার চার ভাই-বোন যথাক্রমে জাকির হোসেন প্রকাশ সোহাগ, মোছা. সামিয়া আক্তার, রাকিব ভূঁইয়া ও আমির হোসেন ভূঁইয়াকে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর তারিখে ৮৫৫৯ নম্বর হেবা দলিল নিবন্ধন করে দেন।
মামলার অভিযোগে বাদি তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ১২১৬৩৩৭৫৪৪৪০২ বলে দাবি করেন। অথচ দলিলে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১২১৬৩৫০৫২৩৭৬৮ ব্যবহার করা হয়। দলিলে প্রকৃত দাতার ছবি না লাগিয়ে অন্য লোকের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এদিকে গত ২৭ জানুয়ারি বাদি ব্রাহ্মণবাড়িয়া দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে নালিশ দায়ের করলে (বিশেষ মামলা নম্বর-৩/২০১৫) বিজ্ঞ আদালত নিযুক্তিয় আইনজীবীদের বক্তব্য, ঘটনা ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে উল্লিখিত আদেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, জেলার কসবা উপজেলাধীন সৈয়দাবাদ মৌজার এসএ খতিয়ান নম্বর ১৫৯১, বিএস খতিয়ান নম্বর-৪৯৪ এর সে.মে. ৭১৭ হালে ১০৯৮ দাগের মোট ৫৭ শতক নাল ভূমি কথিত আমমোক্তার নামা দলিল মূলে পরবর্তীতে হেবা দলিলের মাধ্যমে বিবাদিরা জবর দখলের অপচেষ্টা করছে বলে বাদি অভিযোগ করেন।