Main Menu

আসামীরা জামিনে থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় বাদী

কসবায় জালিয়াতির মাধ্যেমে সরকারি কর্মচারীর ভূমি দখলের চেষ্টা, ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

+100%-


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীর ভূমি দখল করতে গিয়ে মামলার প্রধান আসামী ও কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রায়হান ভূইয়া কারাগারে রয়েছেন। কসবা থানা পুলিশ গত ৫ মার্চ তাকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতের আদেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে মামলায় ওয়ান্টেড হওয়ার প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সব আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আসামীরা জামিনে থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বাদী।

জানা গেছে, মামলার অন্যতম আসামী বর্তমান চট্রগ্রামের লোহাগরার সাব রেজিস্টার সহিবুর রহমান প্রধান আদালত থেকে আরেক আবার জামিন পেয়েছেন। মামলার অপর ৬ জন আসামী জামিনে রয়েছেন। আগামী ৩০ মার্চ এ মামলার তারিখের দিন ধার্য্য রয়েছে।

টিএন্ডটির সিনিয়র টেলিফোন অপারেটর গোলাম সারোয়ার তার অর্ধকোটি টাকা মূল্যের ৫৭ শতক জায়গা ভূমি দখলকারী চক্রের সদস্যরা জাল কাগজপত্র বানিয়ে জাল দলিল করে নেয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর কসবার সৈয়দাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুল আওয়াল ভূইয়ার ছেলে রায়হান ভুইয়া কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দ্বায়িত্বে থাকার সময়ে একটি ভূয়া আমমোক্তার নামা প্রস্তুত করে।

৭ দিন পর ৩০ ডিসেম্বর সে তার ৩ ভাই ও এক বোনকে হেবা দলিল করে দেয়। এ সময় ন্যাশনাল আইডি কার্ড, খারিজা খতিয়ান, খাজনা, রশীদ, জমির মালিকানা দলিল জাল করে হেবা দলিল করা হয়।

গোপীনাথ পুর গ্রামের জনৈক সোলেমান পিতা মৃত দৌলত মিয়াকে গোলাম সারোয়ার সাজিয়ে আম মোক্তার নামা তৈরী করে। পাওয়ার থেকে হেবা করার কোন সুযোগ না থাকলেও মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে হেবা করা হয়েছে।

ঘটনা জানাজানির পর গোলাম সারোয়ার প্রথমে দলিল লিখকের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে জেলার রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করে।

পরে ২০১৫ সালের ২৭ জানুয়ারি দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। বিজ্ঞ আদালত সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে মামলাটি তদন্ত করার আদেশ দেন।

সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা নবীনগর সার্কেল শাহরিয়ার আল মামুন ২০১৫ সালের ১৫ই এপ্রিল আদালতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আম মোক্তার নামা, ভূয়া দলিলের মাধ্যমে মালিক হওয়া, মিথ্যা ও ভূয়া আমমুক্তারনামা দলিল সৃজন করার ঘটনায় রায়হান ভূইয়া ও কসবার সাবেক সাব রেজিস্ট্রার (বর্তমান রোহাগরার) শহিবুর রহমান প্রধানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য আরজিতে উল্লেখ করেন।

পরবর্তীতে আইনগত কারণে সিজিএম কোর্টে মামলাটি স্থানান্তর হয়। আদালত পুণরায় ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়। এরপর (পিবিআই) পুলিশ ইনভেস্টিকেশন ব্যুারো ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে আদালত ২টি প্রতিবেদন সমন্বয় করে রায়হান ভুইয়া, সাবেক সাবরেজিষ্টার শহিবুর রহমান প্রধানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা আমলে নেয়। সাবরেজিষ্টার শহিবুর রহমান প্রধান প্রথম ধার্য দিবসে ২৯ /১/২০১৭ আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন লাভ করে। অন্য আসামীদের নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়। এ পর্যন্ত ৬ জন আসামী আদালত থেকে জামিন পেয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত রয়েছে ৩০ মার্চ।

এদিকে, মামলার আসামীরা জামিনে ও পলাতক থেকে বাদী গোলাম সারোয়ার ও স্বাক্ষীদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গোলাম সারোয়ারের কর্মস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জসহ তার বাড়িতে গিয়ে মামলা আপোষের জন্য হুমকি দিচ্ছে আসামীরা। সবশেষ ১১ মার্চ শনিবার হুমকির বিষয়ে এই ভূমির দেওয়ানী মোকাদ্দমার (৭৮/২০১৫) স্বাক্ষী আব্দুল মালেক কসবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছন।

উল্লেখ্য, ভূমির দলিলপত্র জালিয়াতির বিষয়ে দেওয়ানী মামলাটি ইতিমধ্যে রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই ভূমিতে সৃষ্ট জাল দলিলগুলো বাতিল ঘোষণা করে।






Shares