কসবায় ইলিয়াসকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ



রুবেল আহমেদ :: কসবা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ ইলিয়াসকে বহিষ্কারের ঘোষনার প্রতিবাদে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন দলীয় নেতা কর্মীরা। শুক্রবার বিকেলে মুশফিকুর রহমানের সমর্থিত দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিলটি বের হয়ে পৌর শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগে উপজেলার দশটি ইউনিয়ন থেকে দলীয় নেতা কর্মীরা সে কার্যালয়ে জড়ো হয়। মিছিলে মোঃ ইলিয়াসকে অবৈধভাবে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানিয়ে বহিস্কারকারীদের বিরুদ্ধে এবং বর্তমান কমিটিকে পুতুল কমিটি ঘোষনা দিয়ে শ্লোগান দেয় মোঃ ইলিয়াসের সমর্থকরা। মিছিল শেষে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান, কসবা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রউফ রতন, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফ আলী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন সহ দলীয় নেতা কর্মীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তরা বলেন, ঈদুল ফিতরের পরের দিন সাবেক সাংসদ মুশফিকুর রহমান সমর্থিত মোঃ ইলিয়াসের সমর্থকরা বায়েক ইউনিয়ন নয়নপুর রাবেয়া মান্নান ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে আলহাজ্ব কবির আহাম্মদ ভুইয়া সমর্থিত বায়েক ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি নাজমুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে বাধা দেয়। বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষই উত্তেজিত হলে নাজমুল হাসান ও মনির হোসেনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে যাওয়া সমর্থকদের উপর হামলা চালায় বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন। এতে মুশফিকুর রহমান সমর্থিত মোঃ ইলিয়াসের সমর্থকদের বেশ কয়েকজন আহত হন। ওই ঘটনার রেস ধরেই বর্তমান বিএনপির পুতুল কমিটি মোঃ ইলিয়াসকে বহিষ্কার করে বহিষ্কার আদেশটি ফেসবুকে ছাড়েন। সেই বহিষ্কারাদেশ অবৈধ এবং বর্তমান কমিটিও অবৈধ অভিযোগ ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন মোঃ ইলিয়াসের সমর্থিত নেতাকর্মীরা। এই বহিষ্কারাদেশকে কেন্দ্র কর কসবা উপজেলা বিএনপি তৃণমূলের রাজনীতিকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করলে তারা কঠিন হস্তে দমন করবেন বলে বিক্ষোভ সমাবেশে ঘোষণা দেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, বহিষ্কারাদেশে যে সমস্ত বিষয় তুলে ধরা হয়েছে তার সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ঈদেরপরের দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করেই উপজেলা বিএনপির পুতুল কমিটি মোঃ ইলিয়াসকে বহিষ্কার করেছে বলে নেতা-কর্মীরা দাবি করেন। নেতাকর্মীরা আরো বলেন, বর্তমান উপজেলার বিএনপির কমিটি অবৈধ এবং পুতুল কমিটি তাদের বহিষ্কারাদেশ মানা না মানার কি আছে। তাদের এই বহিষ্কারাদেশ আমরা মানি না এবং মানবো না।
প্রসঙ্গত, বহিস্কার আদেশে দেখা যায় দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ড,হিন্দু সম্পত্তি দখল বিষয়ে নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সাংঘর্ষিক অপকর্মের হোতা হিসেবে জড়িয়ে থাকার অভিযোগে কসবা-পশ্চিম ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। চলতি মাসের ৩ তারিখ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির দলীয় প্যাডে কসবা উপজেলা বিএনপি সভাপতি এডভোকেট ফখরুদ্দিন আহম্মদ খান ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হক স্বপন স্বাক্ষরিত বহিষ্কার আদেশটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়। এই বহিষ্কার আদেশকে কেন্দ্র আজ শুক্রবার বিকেলে মোঃ ইলিয়াসের সমর্থকরা প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
জানা যায়, কসবা উপজেলার বিএনপি বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। সাবেক সাংসদ মুশফিকুর রহমানের সমর্থকদের একটি অংশ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি সদস্য আলহাজ্ব কবির আহমদ ভূঁইয়ার সমর্থকদের একটি অংশ রয়েছে।