প্রথম ট্রানজিট পণ্য গ্রহণ করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব
আখাউড়া দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য গেল ভারতে



প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চট্টগ্রাম নৌ-বন্দর ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রানজিটের পণ্য ভারতে নেয়ার পর সেটি গ্রহণ করেছেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) সকালে ভারতের আগরতলা চেকপোস্ট এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ট্রানজিটের পণ্য গ্রহণ করেন।
পরে সেখানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্য মন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে ত্রিপুরাবাসীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। এসময় তিনি ত্রিপুরা রাজ্যের অতীত ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, এক সময় ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য শুধু একটি মাত্র রাস্তা ছিল। গত ১২ বছর ধরে বর্ষার মৌসুম আসলে প্রায় দুই মাস রাস্তা বন্ধ থাকতো। এতে করে আমাদের এখানে দ্রব্যের দাম আগুন ছোঁয়া হয়ে যেত। গত দুই বছরের ব্যবধানে ত্রিপুরার অনেক পরির্বতন হয়েছে। এখন শুধু একটি রাস্তা নয়, স্থলবন্দর, রাস্তা ও রেল যোগাযোগ দুইটাই সম্পন্ন হয়েছে। মানুষের ভোগান্তি অনেকটা লাঘব হয়েছে।
অন্যদিকে জলপথে তিনটি পথ খুলছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আজকে যে কন্টেইনার এসেছে সেটি হলদিয়া বন্দর থেকে ৪শত কিলোমিটার জলপথ এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২শত কিলোমিটার স্থলপথ হয়ে এসেছে। এতে করে একদিকে খুলে গেছে আগরতলা আইসিপির প্রবেশ দ্বার। অন্যদিকে ডিসেম্বরে যখন ফেনী নদীর ব্রিজের কাজ শেষ হয়ে যাবে তখন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার পথের ব্যবধানে নৌ-পথ খুলে যাবে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, তৃতীয়পথ গৌমতী সোনামুড়াতে আছে এখন জলের উচ্চতার কারণ ছাড়াও বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার কিছু ব্রিজের কারণে ছোট জাহাজ আসতে পারছে না। কিছুদিনের মধ্যে আমরা এদিক দিয়েও কাজ শুরু করে দেব। তাহলে তিন রাস্তা খুলে যাবে জলপথে। আগে জলপথে কল্পনায় করা যেত না আর এখন তিনটি রাস্তা খুলে যাবে সাথে স্থলপথে দুইটি এবং আকাশ পথে একটি। এতে করে ৭টি রাস্তা ত্রিপুরার জন্য খুলে যাবে। এতে আমাদের লাভটা হয়েছে।
আগে হলদিয়া থেকে আমাদের এখানে পণ্য আসতো তখন ১৬শ কিলোমিটার পথ হয়ে। আর এখন জল ও স্থলপথে ৬শ কিলোমিটার পথ হয়ে আসছে। এতে করে প্রতি মেট্রিকটন পণ্য আগে যেখানে ৬ হাজার ৩শ টাকা করে খরচ হতো। এখন তা ৫হাজার ৮শ টাকা করে ত্রিপুরায় পৌঁছে গেছে। এতে করে প্রতি মেট্রিকটনে ৫শ টাকা করে খরচ কমে গেছে। এই যে লাভের মাধ্যমে পুরো ত্রিপুরার আমূল পরিবর্তন আসবে।
দুই দেশের অর্থনীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, আজকের দিনে ত্রিপুরা থেকে এক্সপোর্ট হচ্ছে ৩০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের হয়েছে ৬শ ৪৫ কোটি টাকা। আর আমরা হিসাব করে দেখেছি আগামী একবছরে মধ্যে ত্রিপুরা এক্সপোর্ট করবে ৪শ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ ৬শ৪৫ কোটি টাকা ছিল সেটা আগামী এক বছরে হয়ে যাবে ২ হাজার কোটি টাকা। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশের দাঁড়াবে ৪হাজার ২শ কোটি টাকা আর ত্রিপুরার ১২শ কোটি টাকা। দুই দেশের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।