আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন
ডেস্ক ২৪:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়েও এলাকায় প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মোঃ মনির হোসেন। একই মামলায় তার পরিবারের ৫ জন সহ ৯জনের বিরুদ্ধে আদালত ২ বছরের সাজা প্রদান করেন। কিন্তু উপজেলা যুবলীগের আহবায়কসহ ৭জনই এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছেন। সাজাপ্রাপ্ত অপর দু’জন বর্তমানে প্রবাসে রয়েছে। গত সপ্তাহে আদালত থেকে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থানায় এসে পৌঁছলেও পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করছেনা। জানা গেছে, ২০০৩ সালের ৮ জুন উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের এক সালিস সভায় হামলা চালায় সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন। সালিশে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা চেয়ারম্যান কার্যালয়ে হামলা চালায় ও লোকজনকে মারধোর করে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নান্নু মিয়া বাদী হয়ে আখাউড়া থানায় দ্রুত বিচার আইনে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মোঃ মনির হোসেনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এদিকে ২০০৩ সালের ১ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দ্রুত বিচার আদালত যুবলীগের আহবায়ক মোঃ মনির হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুই বছরের করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। সাজাপ্রাপ্ত অন্যন্যরা হলেন, মনির হোসেনের পিতা মোঃ আব্দুস ছামাদ, চাচা আব্দুল ওহাব, ছোট ভাই বিপ্লব, সোহেল এবং উপজেলার গঙ্গাসাগরের সুমন মিয়া, ছোটন মিয়া, আলমগীর, শাহ আলম ছগির। মামলার বিচার কাজ চলতে থাকা অবস্থায় মনির হোসেনের এক ভাই রাসেল মৃত্যুবরণ করায় আদালত তাকে দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন। বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামী সুমন মিয়া শাহআলম ছগির প্রবাসে আছেন। দ্রুত বিচার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আসামীপক্ষ আদালতে আপিল করেন। সর্বশেষ ২০১১ সালের ১৯ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত দায়রা জজের দ্বিতীয় আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে দেওয়া দ্রুত বিচার আদালতের সাজা বহাল রাখেন। চলতি বছরের ২৪ মার্চ আদালত সাজাপ্রাপ্ত ৯ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। মামলার বাদি ও এলাকাবাসী জানান, গ্রেপ্তারী পরোয়ানা নিয়েও যুবলীগ নেতা মনির হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ রহস্যজনক কারনে গ্রেপ্তার করছেনা। মামলার বাদি ও আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নান্নু মিয়া বলেন, আসামী প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছেনা। তিনি বলেন, গত ২৪ মার্চ আদালত ৯ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মফিজ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। যুবলীগের আহবায়ক মোঃ মনির হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনেক মামলাই আছে। এগুলো রাজনৈতিক মামলা হিসেবে আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি পেয়েছি। তবে ২০০৩ সালে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছি।