বিজয়নগরে লকডাউন অমান্য করে এনজিও গুলি কিস্তি আদায় করছে
মো,জিয়াদুল হক বাবুঃ লকডাউনে সরকারের বিধিনিষেধকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে কিস্তি আদায় করছেন বিভিন্ন বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান । উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেসরকারী এনজিও ব্রাক ও বিজ এই কিস্তি আদায় করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই হরষপুর ব্র্যাক অফিস ও মাধবপুর বিজ অফিস ইসলামপুর এলাকায় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে সদস্যেদের নিকট থেকে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিস্তাররোধ কল্পে গত ১ জুলাই থেকে মন্ত্রীপরিষদ থেকে ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ (লকডাউন) সকল সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ব্র্যাক অফিস ও মাধবপুর বিজ অফিস বুধন্তি এলাকায় চলছে আগের নিয়মেই। বর্তমানে ঋণ বিতরণ না করলেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন করে ঋণ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে কিস্তি আদায় করছেন নিয়মিত। লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই ব্র্যাক ও বিজ এর মাঠ কর্মীরা কিস্তি আদায়ে সদস্যেদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে কর্মীদের চাপে পড়ে কিস্তি দিতে বাধ্য সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্র্যাকের একাধিক ঋণগ্রহিতা জানান, বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে কিস্তি নিচ্ছেন স্যাররা( ব্র্যাক কর্মীরা)। আমরা নাম পত্রিকায় লিখলে স্যাররা( ব্র্যাক কর্মীরা) পরে আমাদেরকে আবার ঋণ দিবেন না। হরষপুর ঋষিপাড়া ব্র্যাকের একাধিক সদস্যরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। এরই মধ্যে একজন নারী বলেন, আমার স্বামী চট্টগ্রাম থাকতেন। তাই এখন করোনার কারণে বাড়িতে চলে আইছে। রোজি রোজগার একদমই নাই। তবু ব্র্যাকের স্যাররা কিস্তির জন্য এসে বাড়িতে বসে থাকেন। কিস্তি না দেয়া পর্যন্ত তারা যায় না। হরষপুর গ্রামের বাসিন্দা ঢাকা মুচির কাজ করেন এমন একজন সদস্য জানান, কঠোর লকডাউনের কারণে বাড়িতে চলে আসছি। কোনো কার্জ কর্ম নাই । তিন সন্তান নিয়ে খুবই অভাব অনটনে দিন কাটছে। তারপরও ব্র্যাকের কিস্তির চাপে আছি। কিস্তি না দিলে পরে নাকি আর লোন দিবেন না এবং তারা ঘরে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকে। তাই পাশের বাড়ি থেকে হাওলাত করে ব্র্যাকের কিস্তি দিয়েছি এবং ইসলামপুর গ্রামের বিজ এর ঋণ গ্রহিতা বলেন কস্ট করে কিস্তি দিচ্ছি ঈদের আগে আমাকে আবার ঋণ দিবে।
এব্যাপারে বিজ অফিসের নাম্বারে ( ০১৭৩২৩৯১৫৪২) ফোন দিলে কেউ ফোন ধরেনি। এ ব্যাপারে ব্র্যাকের এরিয়া ম্যানেজার মো. খলিলুর রহমান বলেন,কর্মিরা এলাকার লোকজনের খোঁজখবর নিতে পারে তবে কিস্তি আদায় টোটালি বন্ধ আছে । যদি কেউ অতিউৎসাহী হয়ে নিয়ে থাকে এইটার দায়িত্ব কোম্পানি নিবেনা। ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক বিভাস কিশোর এর নিকট কিস্তি আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্র্যাক অনেক বড় প্রতিষ্ঠান। সরকারি প্রজ্ঞাপনকে শতভাগ ফলো করা হয় এবং আমাদের সকল অফিস বন্ধ রয়েছে। কিস্তি ও লেনদেন টোটালি বন্ধ। দাাবি ও প্রগতির লোকজন মাঠে কাজ করবে না। তবে ব্র্যাকের স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন স্বাস্থ্য বিষয়ে মাঠে কাজ করছেন। যদি কেউ কিস্তি আদায় করে থাকেন তাহলে অফিসিয়ালি ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।