নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট স্থগিত : পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু
মেঘনা নদীতে লাইটার জাহাজের সাতজনকে খুনের ঘটনার বিচার ও নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে চলা নৌযান শ্রমিক ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে। কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণার পরপরই চট্টগ্রাম নগরের মাঝির ঘাট, বাংলাবাজার ও সদরঘাট এলাকায় ১৬টি বেসরকারি ঘাটে লাইটার জাহাজ শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়া শুরু করেন। এতে বন্দরের বহির্নোঙর থেকে সব ধরনের পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা নবী আলম জানান, শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে সরকারের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আবারও আলোচনায় বসবেন উভয় পক্ষ। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এক ঘণ্টা আগে কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে।
জানা যায়, কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা হওয়ায় স্বস্তি নেমে এসেছে ব্যবসায়ী, শিল্পপতিসহ জাহাজ মালিকদের মাঝে। এই ঘোষণার ফলে কুতুবদিয়াসহ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানকারী বিদেশি অন্তত ৩০টি মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাস এবং দেশব্যাপী পরিবহন গত রাত থেকে শুরু হয়েছে। এসব জাহাজে অন্তত ৬ লাখ টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য রয়েছে। বহির্নোঙরের পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ অভ্যন্তরীণ নৌরুটে বন্ধ থাকা পণ্য পরিবহন শনিবার রাত থেকে পুরোদমে শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫৭টি ঘাটে ৭৩৮টি লাইটারেজ জাহাজে আমদানিকৃত ১০ লাখ ১১ হাজার ২৩৫ টন বোঝাই থাকা পণ্য খালাস শুরু হয়েছে। এতে করে হুমকির মুখে পড়া ভোগ্যপণ্যের সাপ্লাই চেইন ঠিকভাবে চালু থাকবে। দ্রব্যমূল্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল সরকারি উদ্যোগের ফলে তারও অবসান হয়েছে।
বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেল (বিডব্লিউটিসিসি) সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫৭টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজ ১০ লাখ ১১ হাজার ২৩৫ টন আমদানি পণ্য বোঝাই করে বসে ছিল কর্মবিরতির কারণে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন অ্যাংকরেজে ২০টি মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজে) খালাসের অপেক্ষায় ছিল ৪ লাখ ৪৪ হাজার ২০০ টন। ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর বিডব্লিউটিসিসি থেকে সিরিয়াল নেওয়া ৬২টি জাহাজ খালি অবস্থায় বসে ছিল, কর্মবিরতি প্রত্যাহার হলে তারা মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য লোড করে গন্তব্যে যাবে। আরও ৩৫টি জাহাজ ১ লাখ ২৫ হাজার ১৫০ টন পণ্য বোঝাই করে গন্তব্যে যেতে পারছিল না।
ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন অব চিটাগাং–আইভোয়াকের সহসভাপতি ও মুখপাত্র পারভেজ আহমেদ বলেন, সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগের ফলে সংকটের সুরাহা হলো। শ্রমিক নেতাদের সাথে আলোচনা শুরু করতে বিলম্ব হলে দেশ আরো ক্ষতির মুখে পড়ত।