নাসিরনগরে দুই গোষ্ঠির তিন ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষ :: মহিলা সহ আহত প্রায় শতাধিক
নাসিরনগর প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটি এম মনিরুজ্জামান সরকার ও আইয়ূব আলী সরদারের গোষ্ঠির মাঝে প্রায় তিন ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে মহিলা সহ প্রায় শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতা ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বেলা দুই ঘটিকা হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকা বাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে চিকন দিঘীর পাড়ের নূরধন মিয়া ছেলে খোকন মিয়া (২০) উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় চেয়ারম্যান এটি এম মনিরুজ্জামান সরকারের চাচাত ভাই দুধমিয়ার ছেলে তার সঙ্গীয় লোক জন নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে খোকন কে মারপিট করে। মার খেয়ে খোকন মনিরুজ্জামানের ছোট ভাই বুড়িশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান এটি এম মোজাম্মেল হক মুকুলের কাছে বিচার প্রার্থী হয়। মুকুল তখন উত্তেজিত হয়ে খোকনকে জীবনে মেরে ফেলার জন্য তার চাচাত ভাইকে হুকুম দেয় এবং অশ্লীল ভাষায় খোকনকে গালাগালি করে। খোকনের এই ঘটনা জানতে পেরে খোকনের লোকজন চেয়ারম্যানের বাড়্রী দিকে এগিয়ে আসলে চেয়ারম্যান মুকুলের নির্দেশে তার লোকজন খোকনের লোকজনের উপর দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। এতে দুই গোষ্ঠির লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বেলা দুইটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত একটানা তিন ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে নারী পুরুষ সহ প্রায় শতাধিক লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এলাকা বাসী অনেকেই এ প্রতিবেদক কে জানান মুকুল চেয়ারম্যান প্রায় দুই মাস পূর্বে অন্য এক নারীর নারীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে তাকে শ্বশুড়কে বাড়ীতে এনে ঘরের দরজা আটকিয়ে মারপিট করে, খালি ষ্টাম্পে স্বাক্ষর রেখে তিন সন্তানের জননী স্ত্রী সেলিনা বেগমকে তালাক দিয়ে শ্বশুড়রের সাথে পাটিয়ে দেয়। প্রায় সপ্তাহ খানেন পরে তাদের পীর সাহেব সেলিনাকে এনে মুকুল চেয়ারম্যানকে তওবা পড়িয়ে সংশোধন করে দেয়। মুকুল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মদ, গাঁজা সেবন বিভিন্ন ফকিরী অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন, মহিলা শিল্পীদের দিয়ে নৃত্য পরিবেশন এবং অনুষ্ঠানে মেয়ে শিল্পীদের হাতে বকসিস তোলে দেওয়ার মত অনেক অভিযোগ রয়েছে। অষ্টগ্রাম, খান্দুরা, নাসিরনগর মহসিন ফকিরের বাড়ী, নাসিরপুর ফজলুল করিমের বাড়ীর অনেক ফকিরীর স্থির ও ভিডিও চিত্রের কপি এ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। কিন্তু দুই ভাই চেয়ারম্যান বলে ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলতে নারাজ। সংঘর্ষে আহতদের মাঝে মুমূর্ষ অবস্থায় মোঃ স্বপন মিয়া(২৫), সোহেল মিয়া(২০)ও দানা মিয়া(৩৮) কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর দিকে মোঃ আইয়ূব আলী (৬০) মোঃ গিয়াস উদ্দিন(৩৫), হান্নান মিয়া(২৬), গোলাপ মিয়া(২৫), কাঞ্চন মিয়া(৫০), পারুল বেগম(৩০), জালাল মিয়া(৩৫), আঞ্জু মিয়া(৬০), মারুফা বেগম(২৫), নাসির মিয়া(৫০), আজিজুল হক (২৫ কে নাসিরনগর সদর হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। লোকজন জানায় সংঘর্ষ চলাকালে আইয়ুব আলী সরদারের লোকজন প্রায় এক ঘন্টা উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ী ঘেরাও করে রাখে। ওই সময় উপজেলা চেয়ারম্যান বাড়ী থেকে পালিয়ে নাসিরনগর সদরে তার ভগ্নীপতির বাড়ীতে এসে প্রাণ রক্ষা করে। খবর পেয়ে নাসিরনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোঃ ফজলুল হক জানান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ১১রাউন্ড রাবার বুলেট ব্যবহার করে সন্ধায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হন। তিনি আরো জানান বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত। তবে যে কোন সময় উত্তেজনা বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি।