নাসিরনগরে ঝড়ে উড়লো স্কুল ঘর, স্বপ্নরা ও উড়লো সাথে



এম.ডি.মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর হতে:: উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের একটি গ্রাম আন্দ্রাবহ আদর্শ গুচ্ছ গ্রাম। এ গ্রামের শিক্ষার একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যাপীঠ আন্দ্রাবহ আদর্শ গুচ্ছ গ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২৩১ জন শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়ে। শিক্ষক আছেন ৪ জন।
২১ এপ্রিল শনিবার অন্যান্য দিনের মতোই পাঠ নিতে এসেছিল কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে দুঃশ্চিন্তাও বেড়ে চলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে। কাল বৈশাখীর হিংস্র থাবায় টিনের চালা উড়িয়ে নেয় স্কুল ঘরের, অবশ্য তার আগেই তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশের বাড়িতে নিয়ে যায় দায়িত্বরত শিক্ষকবৃন্দ। ফলে সমূহ বিপদ থেকে রক্ষা পায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।
খবর পেয়ে ঢাকা থেকে খোজঁ নেন স্থানীয় সংসদ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ নাসিরনগর আসনের এমপি বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ,স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি।
পরদিন ২২ এপ্রিল রোববার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩ বান্ডিল টিন(২৪)টি। নগদ ৯ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বিদ্যালয়টি পুন:রায় সচল করতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। যার অধিকাংশ ব্যয় হবে কাঠ,টিন,লোহা,বাশঁ,বিদ্যুতের পুনঃ ওয়ারিং,বেঞ্চ মেরামত,ব্ল্যকবোর্ড স্থাপন,নির্মাণ সামগ্রীর যাতায়তের ভাড়া, শ্রমিকের মজুরি সংক্রান্ত খাতে।
প্রাপ্ত টিন ও ৯ হাজার টাকার অনুদান কি কাজে আসবে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য তপন কুমার দাশ জানান, “এ টাকায় পানি পড়া ও হবে না”।
প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী বেগম বলেন, হিসেব করে দেখলাম প্রায় ২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন বিদ্যালয়টি মেরামত করতে। এখন স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারের একটি কক্ষে পরীক্ষা নিচ্ছি। পরীক্ষা শেষ হলে শ্রেণি কার্যক্রম চলানোর বিষয়ে কোন সমাধান দেখছিনা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম বলেন, দ্রুতই এ বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন হবে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়টি মেরামতের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন নাই। তবে মেরামত বাবদ খরচের ভাউচার পেলে আমরা পরিশোধ করব।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইকবাল মিয়া বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের মাধ্যমে ইউএনও ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর এবং অন্য একটি আবেদন ডিজি মহোদয় বরাবর পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি প্রাধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পরিদর্শনে আসেন উপ-সচিব মহোদয়। তারঁ কাছে যে কয়টি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের তালিকা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে আন্দ্রবহ আদর্শ গুচ্ছ গ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামও আছে। আমরা আশা করছি শীঘ্রই উক্ত বিদ্যালয় একটি ভবন পাবে।
প্রসঙ্গত,২১ এপ্রিল শনিবার সকালে কালবৈশাখী ঝড়ে উড়ে যায় বিদ্যালয়ের টিনের চালা। এসময় কাল বৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় স্কুলটি। আন্দ্রবহ আদর্শ গুচ্ছ গ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারী খাস ৩০ শতক জমিতে ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠত হয়। ২০১০ সালে প্রয়াত মন্ত্রী এড. ছায়েদুল হক স্কুলের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সরকারী ও স্থানীয় ভাবে অর্থের জোগান দিয়ে মূলত এ স্কুলের কাজ শুরু হয়।