নাসিরনগরে কৃষকের মৃত্যুর জের: ভাংচুর, লুটপাট -গ্রেপ্তার আতংকে গ্রামবাসী।
এম.ডি.মুরাদ মৃধা,নাসিরনগর প্রতিনিধি: রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মুবিনা আক্তার। সে ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। মুবিনা এ প্রতিনিধিকে বলেন, গত ৭ দিন যাবৎ স্কুলে যেতে পারছিনা। আমাদের গ্রামের শাহেদ মিয়ার ছেলে তারেক মিয়া(৩০) আমি স্কুলে যেতে চাইলে আমায় মারধর করে। গত বৃহস্পতিবার আমি স্কুলে যেতে রাস্তায় বের হই। তখন সে আমায় টিজিং সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে সকলের সামনেই সে আমার কান থেকে স্বর্নের জিনিস খুলে নেয়। পথচারীরা বাধাঁ দিতে চাইলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তার পর আমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে চলে আসি। মুবিনা আক্ষেপের সুরে বলেন, নির্বিগ্নে স্কুলে যাতায়াতের দাবী জানাচ্ছি স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মাসুক মিয়া ও ফেরদৌস মিয়ার লোকজন মধ্যে দীর্ঘ দিন যাবৎ পূর্বশত্রুতা চলছিল। পূর্বশত্রুতা জের ধরে দু‘পক্ষেরই একাধিক মামলা রয়েছে। এনিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। ঘটনার দিন সকালে চিনু মিয়া প্রতিপক্ষের বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন ফলা দিয়ে তার ঘাড়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত চিনু মিয়াকে এদিনই ঢাকার একটি বেসবরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বুধবার রাত ৩ টার দিকে আহত চিনু মিয়া মারা যায়। তিনি রসুলপুর গ্রামের মৃত ফুল মিয়ার ছেলে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কৃষক চিনু মিয়ার মৃত্যুর পর এলাকায় ব্যাপক ভাবে লুটতরাজ,ভাংচুর,নারী চিলতাহানীর ঘটনা সহ গবাদী পশু লুটের ঘটনা ঘটে। আব্দুল গফুরের স্তরী হালিমা বলেন, আমার ঘর থেকে ৬ টি গরু,একটি টিউবওয়েল, ২০ টি রাজহাঁস লুট করে নিয়ে যায়। ছালেহা নামে এক বৃদ্ধা নারী বলেন, রাত দুটার সময় আমার দোকানের প্রায় ৫০ হাজার টাকার পন্য লুট করে নিয়ে যায়।
বৃদ্ধা জাহেরা(৬০) কাঁদতে কাঁদতে বলেন, বিয়ের উপযুক্ত আমার চার নাতনীকে তারা মারধর সহ শাররীক ভাবে নির্যাতন করে। আমার এক নাতীনকে বিয়ের যৌতুক বাবদ একটি মোটর সাইকেল কিনেছিলাম ১.৫০০০০/ টাকা দিয়ে কিন্তু তারা এটাও নিয়ে যায়। আমি এখন ভয়ে নাতনীদের তাদের মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দিছি।
তাহেরা নামের এক নারী বলেন, বাড়িতে ভাংচুর আর লুটপাট হচ্ছে দেখে দৌড়ে বাড়ি এসে ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ি। এ সময় প্রায় ১০ জন এসে টিনের চালে উঠে টিন কেটে ভেতরে ঢোকে। ডাকাতের মতো হৈ চৈ করতে করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ভাংচুর করে।
ঘটনা স্থলে গিয়ে কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইনের এ এসআই মো: আবু বক্করের সাথে। তিনি বলেন, চিনু মিয়ার মৃত্যুর পর এলাকায় লুটপাট হয় তবে এখন উপরিস্থ শান্ত। আমরা ১০ জন এখানে পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত এখানে শান্তি বজায় রাখতে অবস্থান করব।
পূর্বের সংবাদ
« কাতারে শহিদুল হক মামার প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত (পূর্বের সংবাদ)
(পরের সংবাদ) সীমান্তকে শতভাগ সুরক্ষা এবং আলোকিত সীমান্ত গড়াই বিজিবির প্রধান লক্ষ্য: মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন »