সরাইলে বিক্ষোভ মিছিল ও স্বারকলিপি প্রদান
মোহম্মদ মাসুদ, সরাইল প্রতিনিধি: সরাইল উপজেলা প্রশাসন চত্বরের উপর দিয়ে রাস্তার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তিন গ্রামের বাসিন্দারা। গতকাল রোববার সকাল ১১টার দিকে উপজেলা চত্বরে মিছিল সদর ইউনিয়নের নতুন হাবেলীপাড়া, আরিফাইল ও স্বল্পনোয়াগাঁও গ্রামের লোকজন এ বিক্ষোভ মিছির করে। মিছিল শেষে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে একটি স্বারকলিপিও দিয়েছেন তারা।
উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন বলছে এটা প্রশাসন পাড়া। এখানে কোন রাস্তা নেই। অরক্ষিত থাকায় লোকজন চলাচল করতো। মিছিলের সময় উপজেলা সদরের সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির দায়ে পুলিশ অন্তর (১৮) ও লিটন (১৮) নামের দুই যুবককে আটক করে। দুপুরের পর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন আরিফাই গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বার, একই গ্রামের বাসিন্দা যুবলীগ নেতা মাহফুজ আলী, যুবদল নেতা মশিউর রহমান প্রমুখ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব।
পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসন চত্বরের কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামবাসী উপজেলা চত্বরের ওপর দিয়ে অবাধ চলাফেরা করে আসছিলেন। সম্প্রতি প্রশাসন পাড়ায় চুরি, মাদক সেবন ও বখাটেদের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানকার কর্মকর্তা কর্মচারিদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক উৎকন্ঠা । তাই অবাধ যাতায়ত বন্ধ করতে কিছু ফাঁকা জায়গা বন্ধ করা হচ্ছে। মূল ফটক সকল মানুষের জন্য ২৪ ঘন্টা খোলা আছে। গ্রামবাসীর সুবিধার্থে উপজেলা প্রশাসন চত্বরের প্রতিরক্ষা দেওয়াল ঘেষে অর্ধকোটি টাকা খরচ করে রাস্তা ও ব্রিজ করে দেয়া হয়েছে। গত তিন মাসে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ১৮ টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। বাধ্য হয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রবেশদ্বারটি গত ২৫ নভেম্বর টিনের বেড়া নিয়ে বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এতে ফুঁসে ওঠে দক্ষিণ আরিফাইলসহ আরো ২ গ্রামের বাসিন্দারা।
স্বারকলিপিতে তারা জানায়, অনেক দিন ধরে তারা প্রশাসন পাড়ার ভিতরের সড়কটি ব্যবহার করে আসছে। এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরাইল একাডেমি ও নিজসরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে। মডেল মসজিদে ওই গ্রামের লোকজন নামাজ পড়তে পারবেন না।
সরাইল থানার ওসি এ এস এম নাজমুল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন,‘ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে বহিরাগতদের আনাগুনা থাকে দিনে-রাতে। সন্ধ্যার পর উপজেলা চত্বরে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। গত তিন মাসে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরে কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। তাই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মাকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফারজানা প্রিয়াংকা সাংবাদিকদের বলেন,‘ যেখানে বেড়া দেওয়া হয়েছে তা জনসাধারণের কোনো রাস্তা নয়। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের লোকজন অবাধ চলাফেরা করতো। প্রশাসন চত্বরের নিরাপত্তার জন্য বেড়া দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাদের জন্য অর্ধকোটি টাকা খরচ করে বিকল্প পথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই উপজেলা প্রশাসন চত্বরের মাঝখান দিয়ে গ্রামবাসী অবাধ চলাফেরা করতে পারে না। আইনকে আবেগ দিয়ে দেখার কোন সুযোগ নেই। ওই রাস্তাটির আরো উন্নয়নের জন্য বরাদ্ধ চেয়ে পাঠিয়েছি। আরো কাজ হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, “বলেন এখানে কারো কোনো নিরাপত্তা নেই। গত তিন মাসে উপজেলা প্রশাসনের অধিকাংশ দপ্তরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোর কারা? কোথায় থেকে আসে? সেটা তো কেউ বলতে পারে না। অরক্ষিত জায়গা গুলো দিয়ে চোর ও মাদকসেবীরা প্রবেশ করে। কাজ সেরে আবার ওই সকল ফাঁক দিয়েই আবার বেরিয়ে যায়। তাই উপজেলা পরিষদের আমার আগের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে রাস্তাটি বন্ধ করা হয়েছে। তাদেরকে বিকল্প রাস্তা দিয়েই চলাচল করতে হবে।”