সরাইলে তুচ্ছ ঘটনায় দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ৩০ (ভিডিও)
মোহাম্মদ মাসুদ :: সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মার্কেটের ব্যবসায়ি রিফাত মিয়ার (১৭) সাথে নির্মাণ শ্রমিক শফিক মিয়ার (১৮) হাতাহাতির জের ধরে দুই গ্রামের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। শনিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের মাঠে আগের দিনের সংঘর্ষ নিস্পত্তির সালিস সভায় জনৈক যুবকের কটুক্তিকে কেন্দ্র করে সদর ইউনিয়নের কুট্রাপাড়া ও উচালিয়া পাড়া গ্রামের লোকজন মাইকে ঘোষনা দিয়ে প্রথমে সরাইল-নাসিরনগর-আঞ্চলিক মহাসড়কের উপরে ও পরে পাশের খালি মাঠে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আঞ্চলিক এ সড়কে ২ ঘন্টারও অধিক সময় যানচলাচল বন্ধ ছিল। আড়াই ঘন্টা স্থায়ী সংঘর্ষে নারী পুরুষ ও শিশু সহ উভয় গ্রামের অন্তত: ৪০ জন লোক আহত হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় লোকজন জানায়, গত শুক্রবার সকালে বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষ সংলগ্ন স্থানে নতুন মার্কেট নির্মাণের কাজ করছিল শ্রমিকরা। দোকানের সামনে মাটি ফেলাকে কেন্দ্র করে উচালিয়া পাড়ার বাসিন্ধা ব্যবসায়ি রিফাতের সাথে নির্মাণ শ্রমিক মোঘলটুলা গ্রামের সাদত আলীর ছেলে শফিক মিয়ার প্রথমে বাক-বিতন্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় শফিক। এ সময় আরেক যুবক মহিবুল্লাহ (২১) এগিয়ে এলে সর্দার আইয়ুব মিয়া তাকে ধমক দেন। এতে মহিবুল্লাহ কিছুটা উত্তেজিত হলে আইয়ুব মিয়া তাকে থাপ্পর দেন। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন যুবক মহিবুল্লাহকে পিটিয়ে আহত করে। পরিস্থিতি তখন সংঘর্ষের রুপ নেয়। দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন সরাইল থানা পুলিশ।
এ বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য গতকাল বালিকা বিদ্যালয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়ের সভাপতি রফিক উদ্দিন ঠাকুরের সভাপতিত্বে এক সালিস সভা বসে। সভায় সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার সহ অনেক গন্যমান্য লোক উপস্থিত ছিলেন। সভার শেষের দিকে কুট্রাপাড়া গ্রামের জনৈক যুবকের কটুক্তিকে কেন্দ্র করে মূহুর্তের মধ্যে পক্ষদ্বয় ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কয়েক মিনিট পর উভয় গ্রামের দেড়-দুই হাজার লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরাইল-নাসিরনগর- লাখাই আঞ্চলিক সড়কের জিল্লুকদার পাড়া এলাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
উভয় গ্রামের মসজিদের মাইকে নিজ গ্রামের ইজ্জত রক্ষার্থে লাঠি সোটা নিয়ে সংঘর্ষে অংশ গ্রহনের আহবান করা হয়। এক সময় কুট্রাপাড়ার সাথে অন্য গ্রামের কিছু লোক যোগ দেয়। পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রুপধারন করে সড়কের পাশের খালি মাঠে চলে যায়। চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এক সময় বিশাল মাঠ জোরে চলতে থাকে খন্ড যুদ্ধ। সরাইল থানা পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হলে জেলা থেকে দুই প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পুলিশ ১২৭ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ২৫ রাউন্ড টিয়ারসেল ছোঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ততক্ষণে উভয় পক্ষের অন্তত: ৩০ জন লোক আহত হয়েছে।
আহতদের সরাইল হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গুরুতর আহত কুট্রাপাড়া গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে হানিফ মিয়াকে (৩০) প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে ও পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ রুপক কুমার সাহা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে পুলিশ বাদী মামলার প্রস্তুতি চলছে। ।