ভাষা আন্দোলনে সরাইল
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ সরাইলে গত সোমবার বিকেলে ‘ভাষা আন্দোলনে সরাইল’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সরাইল প্রেসক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় সাবেক এমপি, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও সুশিল সমাজের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আইয়ুব খানের সভাপতিত্বে ও সাহিত্য সম্পাদক জহিরূল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কলামিষ্ট অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব শাহজাহান আলম সাজু, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, সরাইল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বদর উদ্দিন, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক শাহ মো. মোতাসিম বিল্লাহ, সরাইল প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা ঠাকুর মেজবাহ উদ্দিন মিজান, ত্রিতাল সঙ্গীত নিকেতনের অধ্যক্ষ সঞ্জীব কুমার দেবনাথ, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির হোসেন, সরাইল প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ কামরূজ্জামান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দেবদাস সিংহ রায়, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সরাইল মহিলা কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মো. মাহফুজ আলী, সরাইল প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ফয়সাল আহমেদ মৃধা ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন মিল্লাদ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন- প্রেসক্লাবের সদ্য নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান। বক্তারা বলেন, ১৯৪৭ সালে তমুদ্দন মজলিস ও মুসলিম ছাত্রলীগের যুক্ত কমিটির আহবানে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে ঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪৭ সালের ২১ ডিসেম্বর তৎকালীন সরাইল থানা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি তাদের এক সভায় বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবী জানিয়ে একটি প্রস্তাব গৃহিত হয়। ১৯৪৮ সালের ৫ জানুয়ারি ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় এ বিষয়ের খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল। এটা সরাইলের জন্য এক গৌরবের বিষয়। সেই হিসেবে সরাইলকে রাষ্ট্রভাষা বাংলা দাবীর সূঁতিকাগার বলা চলে। সরাইল থেকে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবী উত্থাপিত হওয়ার বিষয়টি ৭৩ বছর পরও অনেকেই এখনো জানেন না। গত কয়েক বছর ধরে সরাইল প্রেসক্লাব এ দিবসটি গুরূত্ব সহকারে পালন করে আসছে। প্রত্যেক বছর এমন একটি মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে সরাইল প্রেসক্লাবও আরেকটি ইতিহাসের জন্ম দিচ্ছে। সভায় এ সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ২টি প্রস্তাব করেছেন। প্রথমটি হচ্ছে- উপজেলা সদরে ওই শিক্ষক সমিতির নামে একটি স্মৃতি ফলক নির্মাণ। দ্বিতীয়-বিষয়টি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের ব্যবস্থা করা হউক।