অটোরিকশা চালক হত্যা: রবিউল-মৃধা-শিউলী-নজিবুলসহ আসামি ৬৭



সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, নজিবুল নসর মাইজভান্ডারি, সাবেক সাংসদ জিয়াউল হক মৃধা, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সাংসদ উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমসহ ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল থানায় অটোরিকশা চালক লিটন মিয়া হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আরও ২০০/৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সরাইল থানায় মাওলানা মো. সুলতান উদ্দিন বাদী হয়ে এই হত্যা মামলাটি দায়ের করেছেন। তার বাড়ি সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে। অটোরিকশা চালক লিটন মিয়ার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার মামলা চালানোর জন্য মাওলানা মো. সুলতান উদ্দিনকে ক্ষমতা প্রদান করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হল, অ্যাড নাজমুল হোসেন (৬০), সাইফুল ইসলাম ঠাকুর রাব্বী (৩০), শরীফ উদ্দিন (২৬), বাপ্পী (২৮), রোকেয়া বেগম (৬০), সমর ভৌমিক (৪৩), অ্যাড মোখলেছুর রহমান (৪৮), মো. নাজিম উদ্দিন ভাষানী (৩৫), শাহ আলম (৩৫), শেখ হেলাল মিয়া (৩৫), আইবুর রহমান (৫০), শেখ হাবিবুর রহমান (৬০), মো. হোসেন মিয়া (৪০), গিয়াস উদ্দিন (৪০), রহিম উদ্দিন (৩৫), শেখ রাজিব (৩৫), বকুল মিঞা (৪৫), মো. সাইফুল ইসলাম (৪৫), আব্দুল আহাদ (৩৫), আবু তালেব (৬০), এডভোকেট শফিক (৪৮), গাজী বোরহান (৪২), মিজান মিয়া (৫৫), ডাক্তার ফাইজুল ইসলাম (৪৫), আফজাল হোসেন (২৫), মাসুদ মেম্বার (৪০), আব্দুল্লাহ (৪৫), গাজী কাপ্তান মিয়া (৪২), আমজাদ হোসেন (৫৫), কামরুল বক্স (৫৫), কায়কোবাদ (৫৫), বিল্লাল হোসেন (৫০), মজিবুর রহমান (৬০), সোহেল মিয়া (৪৫), সিরাজুল ইসলাম (৪০), পায়েল মৃধা (৪২) শফিক মুন্সি (৪৫), হামিদুল হক (৫৫), ইসমাইল খান (৬০), আবু শাহাদাত মৃধা রাসেল (৪৮), মো. আলী মিয়া (৫৫), আবু শামীম মো. সানা (৪৫), মো. সুমন মিয়া (৪২), খাইরুল হুদা চৌধুরী বাদল (৬০), ল্যাব এইড বাবুল (৫০), নুরুল ইসলাম কালন (৫৫), শাহ আলম লস্কর (৩৭), লুৎফুর রহমান (৪৮), সাইফুল্লাহ ঠাকুর (৬০), এস এম আনোয়ার (৪০), সাব্বির মোল্লা (৫৫), ফরহাদ মিয়া (৫০) মিস্টার মিয়া (৫৫), লাল মিয়া (৪৫), মাহফুজ মিয়া (৩৫), আরমান মিয়া (৫০), মোহাম্মদ জহিরুল হক (৫০), শাওন মিয়া (৩০), চয়ন ঠাকুর (৪০), সোহাগ মৈশান (৩৬)। এছাড়া আরও ২০০/৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে মামলায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষ্যে হেফাজত ইসলামের বিরোধিতা করে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ আলেম সমাজ তৌহিদী জনতা মিছিল করতে থাকে। সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধূরীর নির্দেশে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য বৈঠক করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ২৮ মার্চ দুপুরে এজাহার নামীয় আসামিসহ অজ্ঞাত আসামিরা বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় এবং উপর্যুপরি ককটেল বিস্ফোরণ করে। এসময় আসামিদের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে অটোরিকশা চালক লিটন মিয়া সমস্ত শরীর ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।
এজাহারে আরও বলেন, লিটন মিয়ার খুনের ঘটনায় তৎসময়ে সরাইল থানায় মামলা দিতে গেলে সরােইল থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। পাশাপাশি এজাহারনামীয় আসামিদের হুমকির কারণে আদালতে মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি বলেও উল্লেখ করা হয়।
সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রফিকুল হাসান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মামলাটি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী আত্মগোপনে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে গত একমাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪টি হত্যা ও একটি গুমসহ মোট ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।