সরাইলে ইউপি সদস্যের হাতে লাঞ্ছিত প্রধান শিক্ষক
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল :: কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজের অনিয়ম দূর্নীতির কথা বলায় সরাইলে সৈয়দ আলী নামের ইউপি সদস্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সকালে উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের দুবাজাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। লাঞ্ছিত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগপত্র ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কর্মসৃজন প্রকল্পের ৩৩ জন শ্রমিক ওই বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি কাটার কথা। কিন্তু ২৫ দিন ১১/৯ জন শ্রমিক মাটি কাটলেও গত ১০-১৫ দিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন ব্যক্তিরা জানতে চাইলে এমন তথ্য দেন প্রধান শিক্ষক। এতে ক্ষিপ্ত হন ইউপি সদস্য সৈয়দ আলী। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি নির্বাচন ও গ্রামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে সৈয়দ আলীর বিরোধ দীর্ঘদিনের। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টা। প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম অফিস কক্ষে বসে আছেন। এ সময় সৈয়দ আলী, এনামুল হক ও মন্তু মিয়ার নেতৃত্বে কিছু লোক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে তাদের সামনে প্রধান শিক্ষককে কিল ঘুষি ও চড় থাপ্পর মারতে থাকে। কিছুক্ষণ পর তারা বীরদর্পে চলে যায়। বিষয়টি তড়িৎ মুঠোফোনে ইউএনও এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ সেলিম মিয়া ও শাহিনুর বেগম জানায়, মেম্বার সৈয়দ আলী সহ কয়েক জন বিদ্যালয়ে গিয়ে সকল শিক্ষার্থীদের ছবি উঠানোর কথা বলে ডেকে জড়ো করেন। পরে তারা হেড স্যারকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। স্যারের চশমাটা ভেঙ্গে গেছে। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সহ-সভাপতি মোঃ সামছু মিয়া বলেন, অনেক কষ্টে বালু ভর্তি মাঠে চিকনা মাটি ফেলতে ৪০ দিনের কাজ এনেছি। শুরু থেকে ২০-২৫ দিন মাত্র ৮/৯ জন শ্রমিক কাজ করেছে। গত ১০-১২ দিন ধরে বন্ধ। এ বিষয়ে ২ শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের কাছে সৈয়দ আলী মেম্বারের বিরোদ্ধে আমি লিখিত অভিযোগ করার কথা স্পষ্ট ভাবে বলেছি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কিছুই জানেন না। মেম্বার তাকে (প্রধান শিক্ষক) কেন কিল ঘুষি ও জুতাপেটা করল বুঝলাম না। সরকারি একটা লোককে এ ভাবে স্কুলে প্রবেশ করে লাঞ্ছিত করতে পারে না। সারা দেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে আমি তাদের এমন বিচার চাই। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল খায়ের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আরো খোঁজ খবর নিয়ে এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রতিবেদন পাঠাব। অভিযুক্ত ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ সৈয়দ আলীর মুঠোফোনে (০১৭৫৩-০৮৬৭৩৪) একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।