পৃথিবী স্থির, সূর্য পৃথিবীর চার দিকে ঘুরছে- সাংবাদিক সম্মেলনে সুশান্ত দেবের দাবী
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:: পৃথিবী স্থির,সূর্য পৃথিবীর চার দিকে ঘুরছে। এমনই দাবি করলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের চুন্টা গ্রামের সুশান্ত দেব (৪০) নামের এক ব্যক্তি। গত শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন। পেশায় একজন টেইলার্স (দর্জি) হলেও বিশ্বের বিজ্ঞানিদের প্রচলিত মতবাদকে চেলেঞ্জ করে নিজের মতবাদের পক্ষে তিনি ছয়টি যুক্তি দাড় করিয়েছেন।
সুশান্ত বলেন, ১৯৯০ সালে চুন্টা এসি একাডেমিতে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করে তিনি চুন্টা বাজারে টেইলারের কাজ করার পাশাপাশি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সৌরজগতের প্রচলিত তথ্য নিয়ে গবেষনা করছেন। তিনি প্রচলিত ধারণাটি ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁর ধারণার পক্ষে তিনি ছয়টি যুক্তি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে সুশান্ত দেব বলেন গবেষনার শুরুতে তিনি প্রথমে একটি ইটের টুকরা ওপরের দিকে ফেলেন। পৃথিবী ঘূর্ণনের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী টুকরাটি তার কাছ থেকে ২.২০কি. মি. দূরে পড়ার হিসাব করলেও টুকরাটি তার কাছেই পড়েছে। সেই থেকে তিনি ধারনা করেন সূর্য নয় পৃথিবী স্থির। সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। সুশান্ত দেবের ছয়টি যুক্তি হলো
১। ঢাকা থেকে ৪২২০ কি. মি. পশ্চিমে অবস্থিত কোনো স্থানে যেতে একটি বিমান যদি ঢাকা থেকে ঘন্টায় ৫০০কি. মি. বেগে যায় আর পৃথিবী যদি ঘন্টায় ১৬১০কি. মি. বেগে পশ্চিম দিক হতে পূর্ব দিকে ঘুরে তাহলে বিমানটি গন্তব্যে পৌঁছতে প্রচলিত ধারনায় সময় লাগবে দুই ঘন্টা। কিন্তু তার ধারনায় পৃথিবী স্থির বলে সময় লাগবে প্রায় ৮ঘন্টা ২৬মিনিট।
২। ঢাকা থেকে ৪২২০ কি. মি. পূর্ব দিকে অবস্থিত কোনো স্থানে যেতে একটি বিমান যদি ঢাকা থেকে ঘন্টায় ৫০০কি. মি. বেগে যায় আর পৃথিবী যদি ঘন্টায় ১৬১০ কি. মি.বেগে পশ্চিম দিক হতে পূর্ব দিকে ঘুরে তাহলে বিমানটি (১৬১০-৫০০) ঘন্টায় ১১১০ কি. মি. পূর্ব দিকে না গিয়ে পশ্চিম দিকে সরে যাবে। কিন্তু বাস্তবে এমনটি না হওয়ায় এতে তিনি ধারনা করেন পৃথিবী স্থির।
৩। প্রচলিত ধারনামতে পৃথিবী যদি ঘন্টায় ১৬১০ কি. মি. বেগে নিরক্ষরেখায় নিজ অক্ষের ওপর ঘুরে তাহলে বিমানের কোনো গতির প্রয়োজন নেই। আকাশে এক জায়গায় বিমান দাড়িঁয়ে থাকলেই গন্তব্যস্থানে পৌঁছে মাটিতে নামতে পারত।
৪। পৃথিবীর যদি গতি থাকে তাহলে যুক্তরাজ্য থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাগামী বিমান ব্রাজিল চলে আসবে। আবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যুক্তরাজ্যগামী বিমান কানাডা চলে যাবে। এরকম হওয়ার কারণ পৃথিবীর আবর্তন গতি। আবর্তন গতি থাকলে বিমান দক্ষিণ হতে উত্তর দিকে বা উত্তর হতে দক্ষিন দিকে কোনো দিনই তার নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছতে পারবে না।
৫। পৃথিবী থেকে মানুষ মঙ্গল গ্রহে বা চাঁেদ যায় রকেটের মাধ্যমে। রকেটের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৯কি. মি.। পৃথিবীর পরিভ্রমন গতি প্রতি সেকেন্ডে ৩০ কি. মি.। পৃথিবী থেকে মহাকাশের পথে যদি কোনো রকেট যাত্রা করে তাহলে প্রতি সেকেন্ডে (৩০+৯) = ৩৯ কি. মি., প্রতি মিনিটে ২৩৪০ কি, মি., আর প্রতি ঘন্টায় ১৪০৪০০ কি. মি. হিসাবে রকেটটি পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাবে। অর্থাৎ পৃথিবীতে রকেটটি ফিরে আসা কোনো দিনই সম্ভব হবে না। কিন্তু বাস্তবে এমনটি হচ্ছে না। তার ধারনায় এটা প্রমান করে পৃথিবী স্থির।
৬। রকেটটি যদি পৃথিবীর পরিভ্রমন গতির সামনের দিক হতে যাত্রা করে তাহলে যাত্রা করার সাথে সাথে পৃথিবীর সাথে রকেটটি ধাক্কা লেগে মাটিতে পরে যাবে কারণ পৃথিবীর পরিভ্রমন গতি প্রতি সেকেন্ডে ৩০কি. মি. এবং রকেটের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৯ কি. মি.।
সুশান্ত দেব সংবাদ সম্মেলনে পৃথিবী ঘূর্ণনের তথ্যে বিজ্ঞানীদের প্রচলিত ধারনায় ভুল রয়েছে চ্যালেঞ্জ করে তা সংশোধনের দাবি করে বলেন পৃথিবী সূর্যের চারদিকে নয় সূর্যই পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে।