সরাইলে ময়না হত্যা মামলার সন্দেহ ভাজন আসামী ইউপি সদস্য মাহতাব আটক
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃসরাইলে আলোচিত ময়না হত্যা মামলার সন্দেহ ভাজন আসামী মাহতাব মিয়া (৩৫) কে আটক করেছে সিআইডি। মাহতাব চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামের মৃত আমু সরকারের ছেলে ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। গতকাল সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা সিআইডি’র সাব- ইন্সপেক্টর মো. তোফাজ্জল হোসেন অভিযান চালিয়ে তাকে চুন্টা সিএনজি অটোরিক্সা ষ্ট্যান্ড থেকে আটক করেন। পুলিশ, ময়নার পরিবার ও স্থানীয় লোকজন জানায়, নিহত ময়নার বাড়ি পাকশিমুল ইউনিয়নের কালিশিমুল গ্রামের। ময়নার ফুফাত বোনের জামাতা আলফাজ (৪৮)। আলফাজ অনেকটা বেপরোয়া, অর্থলোভী ও লম্পট প্রকৃতির। প্রভাবশালী ইউপি সদস্য মাহতাব মিয়ার আপন চাচাত ভাই আলফাজ। মামাত শালিকা ময়না আলফাজের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিত ভাবে গত ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২০ জানুয়ারী গভীর রাতে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে পাশের ফসলী জমিতে হত্যা করে একটি কবর স্থানের পাশে ময়নার লাশ ফেলে রাখে। ২১ জানুয়ারী সকালে সরাইল থানা পুলিশ ময়নার মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেন। ২৩ জানুয়ারী ময়নার পিতা বাদী হয়ে অজ্ঞাত লোকদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা (নং-৪৪, তাং-২৩.০১.১৪) দায়ের করেন। বাদী ১০ ফেব্র“য়ারী ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামী করার জন্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে আবেদন করেন। ১৭ জুন আলোচিত ও জটিল এ মামলাটি চলে যায় জেলার সিআইডি শাখায়। এর পর থেকেই আলফাজ ও মাহতাব ময়নার বাবা, চাচা ও ভাইকে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য নানা ভাবে চাপ দিচ্ছে। নতুবা গাড়ি চাপা দিয়ে তাদেরকে হত্যা করে লবন দেওয়ার হুমকি অব্যাহত ছিল। এ বিষয়টি ১০ ফেব্র“য়ারী লিখিত ভাবে আদালককে জানিয়েছেন ময়নার বাবা নূরুল ইসলাস। মামলার দশ মাস পর ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর প্রধান আসামী আলফাজকে গ্রেপ্তার করে সরাইল থানা পুলিশ। আলফাজকে গ্রেপ্তারের পর বাদী ও তার স্বজনদের প্রান নাশের হুমকি দিতে থাকে ইউপি সদস্য মাহতাব। কান্না জড়িত কন্ঠে ময়নার বাবা মাটি কাটার শ্রমিক নূর ইসলাম ও চাচা সামছুল আলম জানান, হত্যা কান্ডের আগের দিন আলফাজ ময়নাকে কয়েক টুকরা করে ফেলার ঘোষনা দিয়েছিল। মামলার পর থেকে আমাদের সবাইকে খুন করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তারা পুরুষ হত্যা করেছে কিছুই হয়নি আর একটা মেয়েকে খুন করেছে কি হবে? তারা চরম নিরাপত্তাহীনতার কথাও বলেছেন। মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, মাহতাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।