সরাইলে বিপুল পরিমান জাল পর্চা ও বিএস খতিয়ান উদ্ধার
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল থেকে ॥সরাইলে বিপুল পরিমান জাল পর্চা, বিএস খতিয়ান ও প্রিন্ট করা স্বাক্ষর বিহীন কাগজ পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ের কর্মকর্তাদের নামের সীলযুক্ত ভূঁয়া কাগজ ও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ভলিয়াম। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লা আরিফ মোহাম্মদ বিকাল বাজারের রহমানিয়া মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ভূমি সংক্রান্ত এসব জাল ভূঁয়া কাগজ পত্র উদ্ধার করেছেন। এ সময় জাল জালিয়াতির কারিগড় সহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা দ্রুত পালিয়ে যায়। ইউএনও এবং এসি ল্যান্ডের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সকালে ইউএনও এবং এসি ল্যান্ড সরাইল সদরের বিকাল বাজারে রহমানিয়া ক্ষণস্থায়ী মার্কেটে অভিযান চালায়। একাধিক দলিল লেখক ও ষ্ট্যাম্প বিক্রেতার অফিস হিসেবে পরিচিত আবদুল্লাহ আল-মামুনের কম্পিউটারের দোকানে ও পাশের একটি দোকানে তল্লাশি চালায় তারা। এ সময় কাগজ পত্র ভর্তি দুইটি ট্রাঙ্ক উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ট্রাঙ্কে পাওয়া যায় ভূমি অফিসে সংরক্ষিত ভলিয়ামের হুবহু কপি, বিপুল পরিমান জাল পর্চা, বিএস খতিয়ান স্বাক্ষর বিহীন প্রিন্ট করা ভূঁয়া কাগজ। জেলা সদরের এক সময়ের ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম সরাইলের আহাম্মদ আলী মৃধার সীলমোহর যুক্ত প্রস্তাবিত সাদা খতিয়ান ও পর্চা পাওয়া গেছে। নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতি টের পেয়ে জাল পর্চার হোতা সুলতান মিয়া ও দোকান মালিক আগেই সটকে পড়ে। এসব কাগজ তৈরী ও সংরক্ষনে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। বিনিময়ে কামাই করছে মোটা অংকের টাকা। এ কাজের সাথে একাধিক দলিল লেখকের সংশ্লিষ্টতার কথা জানিয়েছেন ভূমি অফিস। এ সব জাল কাগজ দিয়ে এক শ্রেণীর লোক দলিল রেজিষ্ট্রি, ব্যাংক থেকে ঋন উত্তোলন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ ইত্যাদি কাজ করছেন হর হামেশা। সরাইল উপজেলা সাব-রেজিষ্টার (ডেপুটেশন) মাইকেল মহিউদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, আমরা বর্তমান ইউএনও এসি ল্যান্ডের স্বাক্ষর বুঝি ও চিনি। কিন্তু ৫-৭ বছর আগের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করলে ধরব কিভাবে? তবে খারিজ ও খাজনা পরিশোধের রশিদ থাকলে আমরা দলিল রেজিষ্ট্রি করতে বাধ্য। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লা আরিফ মোহাম্মদ বলেন, জালিয়াত চক্রের কারনে একজনের জমি অন্য জনের কাছে চলে যাচ্ছে। এলাকায় জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ বাড়ছেই। ফলে সাধারন নিরীহ লোকজন হয়রানির শিকার হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, এখানে পর্চাসহ বিভিন্ন জাল কাগজ তৈরীর কারিগড় হচ্ছে সুলতান। তার সহযোগী হয়ে কাজ করছে একাধিক লোভী দলিল লেখক। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিব।