শিক্ষক বটে ! দিনে পিটিয়ে রাতে ক্ষমা
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) হুমায়ুন কবীর রবিন মিয়া নামের (১২) সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বেধরক পিটিয়েছেন। এ ঘটনায় চরম ক্ষিপ্ত হয়েছেন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা। পরে দিনে পিটেয়ে রাতেই শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ওই শিক্ষক। গত মঙ্গলবার রাতে সদর ইউনিয়নের উত্তর কুট্রাপাড়া গ্রামে শিক্ষার্থীর বাড়িতে ক্ষমা চাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা, গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণি কক্ষে শিক্ষাার্থীদের মাঝে নতুন বই বিতরণ করছিলেন শিক্ষকগন। বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষাার্থীদের মাঝে বই বিতরণকালে হুমায়ুন কবীর সরকার রবিনের নাম ডাকেন। রবিন শিক্ষকের কাছে পৌঁছাতে সামান্য বিলম্ব হয়। এতে ওই শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে রবিনের এক গালে খামছি দিয়ে ধরে অপর গালে ও মাথায় এলোপাতাড়ি থাপ্পর মারতে থাকেন। এ সময় রবিনের ভগ্নিপতি রোমান মিয়া (৩০) এগিয়ে এসে ওই শিক্ষকের কবল হইতে রবিনকে উদ্ধার করেন। এর জের ধরে বিদ্যালয়ে উপস্থিত বেশ কয়েকজন অভিভাবক প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে প্রধান শিক্ষক এম এ হাসান পরিস্থিতি শান্ত করেন। হুমায়ুন কবীর শিক্ষার্থীর সাথে এমন আচরণ করা ভুল হয়েছে বলে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করেন। প্রধান শিক্ষক এম এ হাসান বলেন, প্রাথমিক ভাবে তাকে ক্ষমা চাওয়ানো হয়েছে। পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে ওইদিন গভীর রাতে লোক চক্ষুর অন্তরালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ হাসান অভিযুক্ত শিক্ষক হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে যান রবিনদের বাড়িতে। হুমায়ুন কবীর তখন তার কৃত কর্মের দোষ স্বীকার করে রবিনের অভিভাবকদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক প্রধান শিক্ষককে নিয়ে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি নিস্পত্তি করেছেন। প্রসঙ্গত: ২০০৭ সালে কসবা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রীকে পেটানোর দায়ে শিক্ষক হুমায়ুন কবীরকে চাঁদপুরের হাইমচর উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছিল। সেখান থেকে ২০০৮ সালের জুন মাসে তিনি আবার বদলি হয়ে আসেন কসবা বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে। তার অভ্যাস পরিবর্তন হয়নি। ২০১৩ সালে আবার একাধিক শিক্ষার্থীকে পেটানোর দায়ে কর্তৃপক্ষের এক দিনের নোটিশে তাঁকে বদলি করা হয় সরাইল অন্নদা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে তিনি আবার শিক্ষার্থী পেটানোর গেড়াকলে পড়ে গেছেন।