প্রতিনিধি ॥ সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা ফরহাদ আব্বাস এর কাছ থেকে ঘুষের এক লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত পেতে গত চার দিন ধরে ঘুরছেন প্রবাসী মাজু মিয়া হত্যা মামলার বাদী শিউলী বেগম ও তার স্বজনরা। শনিবার এ টাকা ফেরত পেতে শিউলী বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। শিউলী বেগম জানান, তার প্রবাস ফেরত স্বামী মাজু মিয়াকে গত ১ জুলাই উপজেলা সদরের প্রাতঃবাজার এলাকার বাড়িতে প্রথম স্ত্রী ও তার তিন সন্তানসহ অন্যরা নৃশংসভাবে খুন করে। এ ঘটনায় তিনি মামলা করলে পুলিশ মাজু মিয়ার প্রথম স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ও ছেলে আকবর মিয়াকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে ৭ জুলাই এ খুনের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাল্টা মামলা করে মাজু মিয়ার বড় মেয়ে শিল্পী আক্তার। এতে শিউলী বেগম ও তার স্বজনদের আসামি করা হয়। আদালত দু’টি মামলা একত্রে তদন্তের নির্দেশ দেন। শিউলী বেগম আরও জানান, পাল্টা মামলায় পুলিশ হয়রানি করবেন না। মামলাটিকে মিথ্যা হিসেবে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিবেন। এ দুই শর্তে তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরহাদ আব্বাস দুই লাখ টাকা দাবি করেন। হয়রানি থেকে বাঁচতে আমরা দেড় লাখ টাকা দিতে রাজি হই। অনুমান ১০ দিন আগে ধারদেনা করে পুলিশের সোর্স রফিক মিয়ার মাধ্যমে আমরা এ টাকা প্রদান করি। কয়েকদিন আগে জানতে পারি মামলা দু’টির তদন্তভার ডিবিপুলিশকে দেওয়া হয়েছে। আমরা দেড় লাখ টাকা ফেরত চাই। প্রথমে টাকা ফেরত দিতে রাজি হলেও এখন গড়িমসি করছেন পুলিশের ওই দারোগা। অসহায় শিউলি এখন তার অবুঝ শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। শিউলীর বাবা সদর ইউপির বাঘাসূতা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আলীম বলেন, দারোগা ফরহাদ আব্বাসের সাথে রফাদফা করে তিন দফায় দেড় লাখ টাকা প্রদান করেছি রফিকের মাধ্যমে। গত তিন দিন আগে রফিক বাড়িতে (বাঘাসূতা) এসে বলে দারোগা মাত্র ৬০ হাজার টাকা ফেরত দিতে রাজি হয়েছে। আমরা বলেছি দেড় লাখ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা রেখে বাকিটা ফেরত দিয়ে দিতে। এখন টাকা ফেরত দিতে চাচ্ছে না দারোগা। পুলিশের সোর্স মো. রফিক মিয়া বলেন, শিউলীর পরিবার আমাদের আত্মীয়। দেড় লাখ টাকা তারা খুব কষ্ট করে দিয়েছে। এই টাকা ফিরিয়ে দিতে আমি স্যারের (দারোগা) পেছনে লেগে আছি। তাদেরকে বলেছিলাম বিষয়টি কাউকে না জানাতে। জানাজানি হয়ে গেলে বিশাল অঙ্কের এই টাকা ফেরত আনা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক ফরহাদ আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, এসব ফালতু কথা। কারও কথা শুনে আপনারা এভাবে বলবেন না। এ ব্যাপারে ফোনে কিছু বলব না। সাক্ষাতে আসেন কথা বলব। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি আমি অন্য একটি সোর্স থেকে জেনেছি। তবে বাদী শিউলী বা তার পরিবারের কেউ এ বিষয়ে আমাকে কিছুই জানায়নি।
|