Main Menu

বিবর্ণ দূর্গন্ধযুক্ত চাল, সরাইল খাদ্য গুদামের ১৪০১ বস্তা জব্দ করেছে ইউএনও

+100%-

 

মো . মাসুদ : ডেঞ্জেরাজ সরাইল খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া। সাহস ও তার অসীম। বুক ফুলিয়ে নিয়মিত অনিয়ম তিনি করেই যাচ্ছেন। মানছেন না কোন বাঁধা। উপজেলা প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে অপকর্ম করে যাচ্ছেন দাপটের সাথে। মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে বিবর্ণ দূর্গন্ধযুক্ত চাউল গ্রহন অব্যাহত রয়েছে তার। কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা নেই। নেই খাদ্য পরিদর্শকের ছাড়পত্র। পরিদর্শকের মুঠোফোন নাম্বার ও নেই গুদাম কর্মকর্তার কাছে। ত্রপরও চাউল ঢুকছে গুদামে। গতকাল বুধবার দুপুরে আকস্বিক ভাবে খাদ্য গুদাম পরিদর্শনে গিয়ে খাবার অনুপযোগী ১৪০১ বস্তা আতপ চাউল (৭০ মেট্রিক টন) জব্দ করেছেন ইউএনও। স্যাম্পল হিসেবে এক বস্তা চাউল নিয়ে গেছেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বছর ধান চাউল সংগ্রহ অভিযানের শুরু থেকেই মিলারদের কাছ থেকে টন প্রতি মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিবর্ণ দূর্গন্ধযুক্ত চাউল গ্রহন করে চলেছেন। তার সাথে যোগসাজস রয়েছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের। কোন ধরনের নিয়ম নীতি মানছেন না গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সম্প্রতি তার অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের বিষয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। নির্বাহী কর্মকর্তা মান সম্মত চাউল গ্রহনের জন্য নিয়মিত একজন লোককে পাহাড়াদার হিসেবে রেখেছেন গুদামে। তার সাথেও করছেন নানান চল চাতুরি গুদাম কর্মকর্তা। গত মঙ্গলবার সন্ধায় ভাই ভাই অটো রাইস মিলের ৮‘শ বস্তা আতপ চাউল নিয়ে গুদামে প্রবেশ করে দুটি ট্রাক। নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফাঁকি দিয়ে খাদ্য পরিদর্শকের ছাড়পত্র ছাড়াই রাত আটটায় গোপনে দূর্গন্ধযুক্ত ৪‘শ বস্তা চাউল গুদামে ঢুকিয়ে ফেলেন আসাদুজ্জামান। বিষয়টি জেনে ফেলেন ইউএনও। গতকাল বুধবার সকালে একই মিলের অপর ট্রাকের ( ঢাকা মেট্রো-ট, ১১-০০২২) ৪‘শ বস্তা চাউল গুদামে ঢুকাতে থাকেন নির্বাহী কর্মকর্তার লোককে না জানিয়ে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে চাউল গ্রহনে বাঁধা দেন ইউএও,র কার্যালয়ের নাজির ইকবাল মিয়া। ততক্ষনে গুদাম কর্মকর্তা ২‘ ৪৭ বস্তা চাউল নামিয়ে ফেলেছেন। দুপুর ১২টায় আকস্বিক ভাবে গুদাম পরিদর্শনে যান নির্বাহী কর্মকর্তা। গুদামে সংরক্ষিত ১৪০১ বস্তার মধ্যে ৩০-৩৫ বস্তার চাউলের নমুনা তিনি নিজ হাতে পরীক্ষা করেন। প্রত্যকটি বস্তায় বিবর্ণ ও দূর্গন্ধযুক্ত চাউল পেয়ে তিনি প্রচন্ড রেগে যান। এই চাউল কে খাবে ? ইউএনও’র এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্য নিয়ন্ত্রক শফিকুল ইসলাম বলেন, এখানকার লোকজন এই চাউল খাবে না। তবে চাউল গুলি চলে যাবে হিলটেক্স। চিন্তার কোন কারন নেই। পরে নির্বাহী কর্মকর্তা ওই ১৪০১ বস্তা চাউল জব্দ করে ফেলেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এখান থেকে একটি চাউল ও বের হবে না। খাদ্য পরিদর্শকের ছাড়পত্র নেই, মিলের মালিক নেই। তারপরও চাউল গ্রহন করেন কিসের ভিত্তিতে ? এমন প্রশ্নের জবাবে গুটিয়ে যান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, খাদ্য কর্মকর্তা সরাইলে আসে না। এ বছরের সকল চাউলই খাদ্য পরিদর্শকের ছাড়পত্র বিহীন। উপজেলা খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খাদ্য গুদামের অনিয়মের কথা শুনে আসছি। গতকাল সরজমিনে গিয়ে হাতে নাতে অনিয়ম পেয়ে ১৪০১ বস্তা আতপ চাউল জব্দ করেছি। এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। প্রসঙ্গতঃ ২ মে থেকে সরাইলে শুরু হয়েছে ধান চাউল সংগ্রহ অভিযান। সিদ্ধ চাউলের লক্ষমাত্রা ৪ হাজার ৭৩ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ১৮শ ৬৩ মেট্রিক টন গ্রহন করা হয়েছে। আতপ চাউলের লক্ষমাত্রা ২‘শ ৯৬ মেট্রিক টন। গ্রহন করা হয়েছে ২’শ ৫৮ মেট্রিক টন। ধানের লক্ষমাত্রা ৪‘শ ৬৩ মেট্রিক টন। অর্জন শুন্য। জেলা খাদ্য পরিদর্শক মোঃ সামিউল আলিমের মুঠোফোনে (০১৭৫১৯-২৯৯৭৯৫) একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।






Shares