প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে এক হাজার টাকা ঘুষ না দেয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেত্রী রোকেয়া বেগমকে লাঞ্ছিত করলেন ইউএনও’র সি.এ (উচ্চমান সহকারী) রাসেল খন্দকার। গত সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। রোকেয়া বেগম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোকেয়া বেগম সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা ও উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভানেত্রী এবং কালীকচ্ছ ইউপির সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্যা। ঘুষের এক হাজার টাকা না দেয়ায় সিএ রাসেল খন্দকার ওই নেত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দসহ লাঞ্ছিত করেন। এসময় কয়েকজন নারী জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের অনেকে এখানে উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে অবহিত করাসহ দলীয় নেতাদের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন রোকেয়া। তিনি জানান, এবার উপজেলায় ভূমি হস্তান্তর কর ১% এর টাকা ইউনিয়নে বরাদ্দের নামে লুকোচুরি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ বরাদ্দের দুইটি চিঠি ইস্যু করা হয়। বরাদ্দের একটি চিঠি সংশ্লিষ্ট ইউপিতে প্রেরণ করা হলেও অপর চিঠি গোপন রাখা হয়। গত সোমবার দুপুরে রোকেয়া বেগম ওই চিঠির ব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন। এসময় ইউএনও জরুরি কাজে বাইরে থাকায় দফতরের উচ্চমান সহকারী (সিএ) রাসেল খন্দকারের সহযোগিতা চান। রাসেল খন্দকার জানান বরাদ্দের ওই চিঠি দেখতে হলে ইউএনও এবং সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের অনুমতি লাগবে। অন্য উপায়ে দেখার সুবিধা আছে কি না ? রোকেয়া বেগমের এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও’র সিএ জানান এক হাজার টাকা দেন শুধু দেখাবোই না প্রয়োজনে চিঠির ফটোকপি দিয়ে দিব। এ প্রস্তাবে রাজি হলে দফতরের ফাইলচাপা থেকে এ চিঠি বের করেন রাসেল খন্দকার। তিনি চিঠি ফটোকপি করার আগেই ঘুষের এক হাজার টাকা চেয়ে বসেন। চিঠির কপি হাতে না পেয়ে টাকা দিতে নারাজ রোকেয়া বেগম। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ইউএনও’র সিএ গালমন্দসহ তাকে লাঞ্ছিত করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিএ (উচ্চমান সহকারী) মোঃ রাসেল খন্দকার ঘুষ দাবির বিষয়টি মিথ্যা উল্লেখ করে জানান, রোকেয়া বেগম কালীকচ্ছ ইউপির ১% বরাদ্দের একটি চিঠি দেখতে চান। তাকে বলা হয় ইউএনও স্যার ও কালীকচ্ছ ইউপির চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া এ চিঠি দেখানো যাবে না। কালীকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তকদীর হোসেন জানান, জুন ও জুলাই মাসের ১% বরাদ্দের দুইটি চিঠি পেয়েছি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। বরাদ্দের একটি চিঠি নিয়ে দফতরে যা হয়েছে তা পছন্দের নয়। ইউএনও জানান, নারী মেম্বার রোকেয়া বেগম ও স্টাফ রাসেল খন্দকার এ দুজনের ব্যবহারই তার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। ঘুষের বিষয়টি শতভাগ মিথ্যা। এ বিষয়টি কেউ তাকে বলেনি।
|