সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা‘: কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ এ প্রবাদ বাক্যটি সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্র কাগুজে থাকলেও বাস্তবে নেই। এতে ইউনিয়নবাসী ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির নানা সেবা থেকে বঞ্চিত। সম্প্রতি দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্র একযুগে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অভিযোগ আছে, সরাইলে কাগুজে-কলমে উপজেলার নয় ইউনিয়ন পরিষদে তথ্যসেবা কেন্দ্রের কার্যক্রম চালু দেখানো হলেও বাস্তবে দু-চার ইউনিয়ন ছাড়া বাকিগুলোতে এ কার্যক্রম চালু নেই। পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার সুবাদে তিনি তথ্যসেবা কেন্দ্র কাগজেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জেনেও রহস্যজনক কারণে নীরব। ইউপি সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, এখানে তথ্যসেবা কেন্দ্র চালু না থাকায় গ্রামের মানুষ ডিজিটাল নানা সেবা থেকে বঞ্চিত। তিনি জানান, বিগত অর্থবছরে এ তথ্যসেবা কেন্দ্রের মালামাল কিনতে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। কাগুজে কলমে মালামাল ক্রয় দেখিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান পুরো বরাদ্দ খেয়ে ফেলেছেন। বিষয়টি লিখিতভাবে এ পরিষদের একাধিক ইউপি সদস্য স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের জানান। এ নিয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতকিছুর পরও এ বিষয়ে কোন সুফল পায়নি তারা। উল্টো তাদেরকে চেয়ারম্যানের রোষানলে পড়তে হয় বলে তিনি জানান। ইউপি সদস্যা নাসরিন বেগম জানান, বিদ্যুৎ বিহীন ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে এখানের তথ্যসেবা কেন্দ্রের জন্য উন্নমানের একটি মূলবান ‘সোলার প্যানেল’ বরাদ্দ পাওয়া যায়। এটি ইউপি চেয়ারম্যান বাজারে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে রেখে দিয়েছেন। তিনি জানান, তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে কোন ধরণের সেবা মানুষকে দেওয়া হয় তা এখানকার অনেক ইউপি সদস্যই জানেন না, জনগণ জানবেন কিভাবে। কারণ এ পরিষদে তথ্যসেবা কেন্দ্রের কোন কার্যক্রম চালু নেই বলে তিনি জানান। ইউপি সচিব অসীম চন্দ্র কর জানান, পরিষদে একটি ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট মোডেম আছে। যা দিয়ে তিনি অফিসের নানাকাজের পাশাপাশি অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া একটি প্রিন্টার রয়েছে যা দীর্ঘদিন ধরে বিকল। তথ্যসেবা কেন্দ্রের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ নুরুল হক জানান, তথ্যসেবা কেন্দ্র চালু আছে। ল্যাপটপ দিয়ে অনলাইলে নিবন্ধনের কাজ চলছে। বেতন ভাতার অভাবে দুইজন উদ্যোক্তা চাকুরি ছেড়ে চলে গেছে। সোলার প্যানেল একজন ইউপি সদস্যের বাড়িতে রাখা হয়েছে। তথ্যসেবা কেন্দ্রের ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান জানান, এই টাকা দিয়ে যেসব মালামাল কেনা হয়েছে তা মাষ্টারোল করা আছে। পরিষদে বাস্তবে তথ্যসেবা কেন্দ্রের কোন মালামাল না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। |