নিহত ৪ লাশের মূল্য ৩১ লাখ টাকা নির্ধারন
সরাইল সংবাদদাতা:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সালিশ সভায় উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষে নিহত ৪ লাশের মূল্য ৩১ লাখ টাকা নির্ধারন করেছেন সালিশকারকরা। শালিস সভার এই রায় ঘোষনা করেন সরাইল উপজেলা পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া। উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদে আলোচিত এই সালিশসভা অনুষ্ঠিত হয়। কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তকদির হোসেন এই সালিশসভার কথা স্বীকার করেছেন। সালিশকারকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল চুরির ঘটনায় গত কয়েক বছরে উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামে গাজীর গোষ্ঠী ও বারীর গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে দফায় দফায় হামলা সংঘর্ষে ১ মহিলা সহ ৪জন নিহত হয়। সংঘর্ষের সময় দুই গোষ্ঠীর কয়েকশ ঘর ভাংচুর ও লুটতরাজ করা হয়। নিহতরা হচ্ছেন বারীর গোষ্ঠীর সখিনা বিবি এবং গাজীর গোষ্ঠীর বোরহান উদ্দিন, নবী হোসেন ও সোয়াজ মিয়া। এসব ঘটনায় উভয়পক্ষে প্রায় অর্ধডজন মামলা দায়ের করা হয়। অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ধামাউড়া গ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্যই উপজেলার নেতারা এ সালিশ সভা করেন। তিনি বলেন, লুটতরাজের অভিযোগে গাজীর গোষ্ঠীর লোকদের ৭৫ লাখ ও সখিনা বিবি মৃত্যুর জন্য ৭ লাখসহ মোট ৮২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া বারীর গোষ্ঠীর ৪০টি বসতঘরসহ মালামাল ফেরত দেওয়ার রায় হয় সালিশে। অপরদিকে বোরহান উদ্দিনের মৃত্যুর জন্য ৫ লাখ টাকা, নবী হোসেনের মৃত্যুর জন্য ৭ লাখ টাকা ও সোয়াজ মিয়ার মৃত্যুর জন্য ১২ লাখ টাকাসহ মোট ২৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় বারীর গোষ্ঠীর লোকদের। সালিশে রায় ঘোষণা করেন সরাইল উপজেলা পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া। ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, গাজীর গোষ্ঠীর লোকজন নগদ ১০ হাজার টাকা ও বারীর গোষ্ঠীর লোকজন নগদ ৫ হাজার টাকা সালিশে জমা দিয়ে রায় মেনে নেয়। আগামী ১ মাসের মধ্যে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন জরিমানার টাকা প্রদান করবেন। এদিকে নিহত নবী হোসেনের পিতা আলী হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তারা টাকা নয়, ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার চান। আলী হোসেন বলেন, ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার চেয়ে তিনি গত ২০১২ সালের ২৬ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বারীর গোষ্ঠীর ৫৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, ধামাউড়া গ্রামের বোরহান উদ্দিন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশীট) আদালতে দাখিল হয়েছে। নবী হোসেন হত্যা মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। সোয়াজ মিয়া ও সখিনা বিবি হত্যা মামলা পুলিশ তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তকদির হোসেন বলেন, গত ২২ জুন অনুষ্ঠিত সালিশ সভায় উপজেলার শীর্ষ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে সালিশে রায় প্রদানকারী ও উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন, ধামাউড়া গ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৬ মাস চেষ্টার পর এই সালিস সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, দু’গোষ্ঠীর লোকদের মতামত নিয়ে এ রায় প্রদান করেছি। নিহত নবী হোসেনের বাবার আপত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, তারা ৭লাখ টাকা পাবেন। তাদের মতামত না নিলেও গোষ্ঠির নেতারা সালিশের রায় মেনে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সালিশ সভার বিষয়টি আমার জানা নেই। |
« আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি কমে গেছে (পূর্বের সংবাদ)
(পরের সংবাদ) আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি কমে গেছে »